রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


প্রেইরি ডু-চিয়েন।

প্রেইরি ডু-চিয়েন। মিসিসিপি নদীর উপত্যকা অঞ্চলে সমতল তৃণভূমিকে বলা হয় ‘প্রেইরি’। আর ‘চিয়েন’ নামটি এসেছে এখানকার প্রাচীন ফক্স-ইন্ডিয়ান উপজাতীয় রাজার নাম থেকে। এই অঞ্চলটি আমেরিকার মুক্তিযুদ্ধ এবং আমেরিকা এবং ব্রিটেন তথা ইউরোপের বিবিধ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বহু ইতিহাসের সাক্ষী। ভৌগোলিক বিচারে এই সমতলটি ত্রিকোণ বা ত্রিভুজ আকৃতির। এর একদিকে মিসিসিপি নদী, একদিকে উইসকনসিন নদী, আর অন্যদিকে মাঝারি মাপের সারিবদ্ধ পাহাড়। আর এই নদী ও পাহাড় একসঙ্গে থাকার সূত্রে ছোট ছোট পাহাড়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট জলাভূমি এক অনবদ্য নজির সৃষ্টি করে ফল কালারের সময়। পাহাড়ের ওপরে ধাপে ধাপে উঠে যায় ফল কালার আর জলাশয়ে সেই পুরো পাহাড়ের প্রতিফলন। দুইয়ে মাইল এক অসাধারণ দৃশ্যপট তৈরি করে।
আমার বাড়ি থেকে প্রেইরি ডু-চিয়েন গাড়িতে প্রায় ৪৫ মিনিটের পথ। পুরো রাস্তার অনেকখানি অংশ ফল কালারের চাঁদোয়ায় ঢাকা। অর্থাৎ রাস্তার দু’দিকে বার্চ এস্পেন আর সাইপ্রেসের সারি। সরু রাস্তায় দুদিকের গাছগুলি মাথার ওপরে মিলে গিয়ে তৈরি করেছে এরকম চাঁদোয়া। তার তলা দিয়ে মসৃণ কালো বিটুমিনাস রাস্তা। এই বিটুমিনাস রাস্তাগুলি হল আমার অভিজ্ঞতায় মসৃণতম রাস্তা। এর ওপর দিয়ে গাড়ি চালালে মনে হয় যেন গাড়ি মসৃণভাবে ভেসে চলেছে কোনও ঘর্ষণ ছাড়াই। এই ফল কালারের চাঁদোয়ার তলা দিয়ে ওই ভাবে গাড়ি চালাতে যে কী অপূর্ব লাগে সে কথা বলে বোঝানো দায়।
আরও পড়ুন:

ফল কালারের রূপ-মাধুরী, পর্ব-৮: এখানে এসে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা…আবার সূর্য ডুবলে বাড়ি ফিরে যাই

ডায়াবিটিস ধরা পড়েছে? হার্ট ভালো রাখতে রোজের রান্নায় কোন তেল কতটা ব্যবহার করবেন? দেখুন ভিডিয়ো

ভারতীয় সাহিত্যের এই সাধক যখনই কলম ধরেছেন বাংলাভাষা ততই পদ্ধতিগতভাবে এগিয়েছে/২

শীতের আমেজে লোভনীয় কিছু খাওয়ার ইচ্ছা? রেস্তরাঁর মতো ঝটপট বানিয়ে ফেলুন সুখা মরিচ মাটন

প্রথম বার যখন সেখানে যাই আকাশ অল্প মেঘলা। কিন্তু তবুও ভাবলাম, বাড়ির কাছেই আর বিকেল বেলায় কোনও কাজও নেই তাই ঘুরেই আসি। শহরে পৌঁছে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে চালাচ্ছি গাড়ি, এদিক-ওদিক রাস্তা পেলেই ঢুকিয়ে দিচ্ছি। শহরের যেদিকটায় পাহাড় সেদিকে একদম শেষে তার সামনের রাস্তাটা দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। হঠাৎ দেখি একটা জলা জায়গা, তার পাশে ঘন সবুজ একটা মাঠ, মাঠ পেরিয়েই ফল কালার-এ ঢাকা পাহাড়, আর সেই মাঠের মাঝখানে ছোট্ট একটা ঘর। ঠিক যেন ছোটবেলার আঁকার খাতা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তারপর একজায়গায় গিয়ে দেখি একটা বাগানের মতো। পুরো বাগানটাই লাল-হলুদ গাছের পাতা পড়ে ঢেকে রয়েছে। ঠিক যেন একটা গালিচা বিছানো আছে মাটির ওপর।
আরও পড়ুন:

দশভুজা: দু’শো বছর আগে হলে তিনি ইঞ্জিনিয়ারের বদলে সতী হতেন

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৪৩: নোবেল-প্রাপ্তির সংবর্ধনা-সভায় রবীন্দ্রনাথ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ২৬: ‘সত্যেরে লও সহজে’—রাজসুখ ছেড়ে কি তবে বনবাসী মন?

কিম্ভূতকাণ্ড, পর্ব-২: শেকড়বাকড়-লতাপাতা, গন্ডারের শিং, বাঘের নখ— যে ভাবেই হোক শরীরের বয়সটা কমিয়ে দাও

এরপর একদিন চলে যায় গ্যালেনা হ্রদের ধারে। গ্যালেনা হ্রদে প্রচুর লোক মাছ ধরতে আসে এই সময়। তার পর তা খাড়াই উঠে গেছে অনেকটা। আর সেই খাড়াইয়ের পুরোটা জুড়ে শুধু রঙের খেলা। আর তার মধ্যে মাঝে মাঝে একটা দুটো বাড়ি। তাছাড়া এই অঞ্চলে মাঝে মাঝে দেখা যায় আকাশে দু-একটা বেলুন উড়ছে। বেলুন মানে মানুষ নিয়ে যাওয়ার হট এয়ার বেলুন। নীল আকাশ, রঙিন ফল কালার, হ্রদের জলে তার প্রতিচ্ছবি, তার মাঝে একটা দুটো ঘর, আর আকাশে উড়ছে বেলুন; ঠিক যেন রূপকথার গল্প। এখানে এলেই আমার মনে পড়ে যায় রাপুঞ্জেলের গল্পগুলো। ওই বাড়িতে বুঝি বন্দি আছে সে। আর রাজপুত্র যেন মায়াবী ফানুসে চেপে আসছে তাকে উদ্ধার করার জন্য।

মুগ্ধ করা প্রেইরি ডু-চিয়েন।

যখন সেখানে যায় আকাশ অল্প মেঘলা। কিন্তু তবুও ভাবলাম, বাড়ির কাছেই আর বিকেল বেলায় কোনও কাজও নেই তাই ঘুরেই আসি। শহরে পৌঁছে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে চালাচ্ছি গাড়ি, এদিক-ওদিক রাস্তা পেলেই ঢুকিয়ে দিচ্ছি। শহরের যেদিকটায় পাহাড় সেদিকে একদম শেষে তার সামনের রাস্তাটা দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। হঠাৎ দেখি একটা জলা জায়গা, তার পাশে ঘন সবুজ একটা মাঠ, মাঠ পেরিয়েই ফল কালার-এ ঢাকা পাহাড়, আর সেই মাঠের মাঝখানে ছোট্ট একটা ঘর। ঠিক যেন ছোটবেলার আঁকার খাতা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তারপর একজায়গায় গিয়ে দেখি একটা বাগানের মতো। পুরো বাগানটাই লাল-হলুদ গাছের পাতা পরে ঢেকে রয়েছে। ঠিক যেন একটা গালিচা বিছানো আছে মাটির ওপর।
* ভ্রমণ— চলো যাই ঘুরে আসি: ফল কালারের রূপ-মাধুরী (Wisconsin Fall Color Travel) : ড. অর্ঘ্যকুসুম দাস (Arghya Kusum Das) অধ্যাপক ও গবেষক, কম্পিউটার সায়েন্স, ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কস।
 

বাইরে দূরে

লেখা পাঠানোর নিয়ম: এই বিভাগে পাঠকদের সঙ্গে আপনার সেরা ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনি ভাগ করে নিতে পারেন। ভ্রমণ কাহিনি লিখতে হবে ১০০০ শব্দের মধ্যে ইউনিকোড ফরম্যাটে। লেখার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি পাঠাতে হবে। চাইলে ভিডিও ক্লিপও পাঠাতে পারেন। ছবি ও ভিডিও ক্লিপ লেখকেরই তোলা হতে হবে। ওয়াটারমার্ক থাকা চলবে না। ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.co


Skip to content