সোমবার ৭ অক্টোবর, ২০২৪


ছবির নাম ‘অগ্নিসংস্কার’।
টালিগঞ্জের রাধা ফিল্ম স্টুডিওতে ওই ছবির একটি বড় সেট তৈরি করা হয়েছে। এক বড়লোক বাড়ির বৈঠকখানা ঘর। সেখানে দোতলা থেকে সিঁড়িটা নেমে এসেছে বৈঠকখানা ঘর পর্যন্ত। বাড়িটির মালকিন হলেন ছায়াদেবী। দৃশ্যটি ছিল, নায়ক রজত (যে ভূমিকায় অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার) সিঁড়ির নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, আর ওপর থেকে নায়িকা সুমিতা (যে চরিত্রের শিল্পী সুপ্রিয়া দেবী) তিনি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসছেন। তারপর সংলাপ শুরু হবে। এ ভাবে বেশ কয়েকটি রিহার্সাল হওয়ার পর ফাইনাল টেকে যাওয়ার আগে উত্তম কুমার সুপ্রিয়া দেবীকে আলাদা ডেকে নিলেন। ডেকে নিয়ে বললেন, “বেনু নিজের বাড়ির সিঁড়ির ধাপ কেউ দেখে দেখে নামে না। এত প্রাত্যহিক ব্যাপার। শুধু চেষ্টা করো সিঁড়ির ধাপের দিকে না তাকিয়ে উপর থেকে নিচে নেমে আসার ব্যাপারটা।”
কথাটা মনে ধরল সুপ্রিয়া দেবীর। ফাইনাল টেকের সময় পরিচালক বিভূতি লাহা (অগ্রদূত গোষ্ঠীর প্রধান) ‘অ্যাকশন’ বললেন। সুপ্রিয়া উপর থেকে নিচে নামতে শুরু করলেন। যখন তিন চারটি ধাপ বাকি নিচে নেমে আসার ক্ষেত্রে, সেই সময় একটা গোল বাঁধলো। সুপ্রিয়া দেবীর আঁচলটা চলে এলো পায়ের পাতার নিচে। ফলে তিনি তাঁর চেহারা নিয়ে ভল্ট খেয়ে পড়ে গেলেন নিচে। সঙ্গে সঙ্গে উত্তর কুমার তাঁকে তুলে দাঁড় করিয়েছেন। পরিচালক ‘কাট’ বললেন। নিয়ে যাওয়া হল সুপ্রিয়া দেবীকে মেকআপ রুমে। খানিক বিশ্রামের পর আবার নেওয়া হল শটটি। সুপ্রিয়া আগের মতো করে শট দিলেন, উত্তম কুমারের পরামর্শ মতো নয়।
আরও পড়ুন:

পর্ব-১৭: সুচিত্রা সাহস জুগিয়ে বিশ্বজিৎকে বললেন, ‘খুব ভালোই হয়েছে শটটা’

বাজি পসন্দ নয়? এবার না হয় একটু অন্যরকম ভাবে মাতলেন দীপাবলিতে!

‘অগ্নিসংস্কার’ হল উত্তম সুপ্রিয়া অভিনীত চতুর্থ ছবি। এই জুটির প্রথম ছবি ‘সোনার হরিণ’, দ্বিতীয় ছবি ‘উত্তরমেঘ’, তৃতীয় ছবি ‘শুন বরনারী’। অগ্নিসংস্কারের কাহিনীকার বিনয় চট্টোপাধ্যায়। পরিচালক অগ্রদূত এবং সুরকার রবীন চট্টোপাধ্যায়। ছবিতে উত্তম-সুপ্রিয়া ছাড়াও অভিনয় করলেন বিকাশ রায়, ছবি বিশ্বাস, অনিল চট্টোপাধ্যায়, পাহাড়ী সান্যাল, ছায়াদেবী, নীতিশ মুখোপাধ্যায়, শিশির বটব্যাল প্রমুখ শিল্পী। অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ছবিটি। মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬১ সালে উত্তরা, পূরবী, উজ্জ্বলা প্রেক্ষাগৃহে। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য যে এই চেইনের একটি প্রেক্ষাগৃহেরও অস্তিত্ব আজ আর নেই।

Skip to content