রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪


ওপার বঙ্গের পাহাড়ি শহর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হল পাঁচদিনব্যাপী শিশুসাহিত্য উৎসব ও শিশু বইমেলা। ‘বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শিশুসাহিত্য উৎসব ও বইমেলায় প্রতিদিনই বইয়ের টানে মানুষের ঢল নেমেছিল। ছোটরা এখন বই পড়ে না, এমন একটা কথা প্রায়ই বলা হয়ে থাকে। পাঁচদিনের এই মেলায় ব্যাপক পরিমাণে ছোটদের বই বিক্রি হয়েছে। ছোটদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত ১৪ অক্টোবর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘শিল্পকলা একাডেমি’তে আরম্ভ হওয়া এই উৎসব-মেলা আগামী বছর আরও বৃহৎ আকারে অনুষ্ঠিত হবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৮ অক্টোবর আনন্দ-উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোটদের সুপরিচিত কবি-লেখকদের পাশাপাশি উদীয়মান কবি-লেখকরাও প্রতিদিনই উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, সুজন বড়ুয়া, আনজীর রিটন, তপংকর চক্রবর্তী থেকে শুরু করে রহীম শাহ, অরুণ শীল—কে না উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দিনের আলোচনা সভায়, ছড়া-পাঠে! ‘বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি’র পরিচালক রাশেদ রউফের স্বাগত ভাষণ, ড. আনোয়ারা আলম, পুলককান্তি বড়ুয়া, ওমর কায়সার, অমিত বড়ুয়া, রফিকুর রশীদ, বাসুদেব খাস্তগীর, উৎপলকান্তি বড়ুয়া, মাহফুজুর রহমান—এমন অনেকেরই আলোচনা-বক্তব্য হৃদয়গ্ৰাহী হয়ে উঠেছিল। এই শিশুসাহিত্য উৎসবে, বইমেলায় ভারত থেকে অতিথি-আলোচক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন শিশুসাহিত্যিক রতনতনু ঘাটী, শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক ড.পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আততায়ীদের হাতে নিহত মুজিব-পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এই শিশুসাহিত্য উৎসব ও শিশু বইমেলায় ‘বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে শেখ রাসেল’ শিরোনামে একটি আলোচনারও ব্যবস্থা হয়েছিল। রাসেলের বেদনা-বিধুর,মর্মস্পর্শী মৃত্যুকে সামনে রেখে কবি-সাহিত্যিকরা সৃষ্টির ফুল ফুতিয়েছেন। সেই পুষ্পাঞ্জলি নিবেদিত হয়েছে উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত একাধিক গ্রন্থে। প্রকাশিত হয়েছে একটি সুদৃশ্য স্মারকগ্ৰন্থও।
আরও পড়ুন:

শম্ভু, শম্ভু, শিব মহাদেব শম্ভু, খুদার ইবাদত যাঁর গলায় তাঁর আর কাকে ভয়?

এই শিশুসাহিত্য উৎসবে তিনশোরও বেশি শিশুসাহিত্যিক যোগ দিয়েছিলেন। রাজধানী ঢাকার দিকে নয়, এই পাঁচদিন পাঠকের দৃষ্টি ছিল পাহাড়ি শহর চট্টগ্রামের দিকে। দিকবিদিক থেকে আসা‌ শিশুসাহিত্যিক, নিষ্ঠাবান পাঠক ও ছোটদের কলকাকলিতে মেলাপ্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠেছিল।
শিল্পকলা একাডেমির পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে বহু মানুষ নিবিষ্ট হয়ে প্রতিদিন শুনেছেন কত আকর্ষণীয় আলোচনা ও মনোমুগ্ধকর ছড়াপাঠ। দ্বিতীয় দিনে আলোচনার বিষয় ছিল ‘পথ খুঁজছে শিশুসাহিত্য’। এই প্রযুক্তি-শাসিত ছোটদের কথা ভেবে একালের শিশুসাহিত্যিকরা যুগোপযোগী সাহিত্য নির্মাণ করবেন— এই আশা-প্রত্যাশা ‘বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি’ বৃহত্তর পাঠকের মনে জাগ্রত করেছে।

Skip to content