রবিবার ৬ অক্টোবর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

যে কোনও মরসুমেই শুষ্ক ত্বকের সমস্যা হতে পারে। সব সময়ে যে এই সমস্যা শীতকালেই যে হবে, তার কোনও মানে নেই। বিভিন্ন ঋতুতেই শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় মুশকিলে পড়তে হয়। বেশির ভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না এই সমস্যায় ভুগলে ঠিক কী ভাবে যত্ন নেবেন?
 

এই সমস্যা সাধারণত কেন হয়

আমাদের ত্বক কেন শুষ্ক হয়ে যায়, আজ আমরা সেই বিষয় নিয়েই আলোচনা করব। আমাদের ত্বকে নিজস্ব কিছু গ্রন্থি বা গ্ল্যান্ড আছে। যেমন ত্বক থেকে ঘাম বের হয়, তেমনি তেলও বের হয়। তাই অনেকের মুখ তৈলাক্ত কিন্তু ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকে। আসলে যে গ্রন্থিগুলো থেকে শরীরে তেল তৈরি হয় সেগুলো শরীরের সব জায়গায় সমান ভাবে থাকে না। নাকের কাছে, কপালে, বুকের মাঝখানে এই গ্রন্থি গুলি বেশি থাকে। তুলনায় হাতে, পায়ে এই গ্রন্থিগুলি কম থাকায় সেখানে তেল কম উৎপন্ন হয়। এটাই একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে এই গ্রন্থিগুলির সংখ্যা ও কাজ করার ক্ষমতা কমতে থাকে। আবার ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সে অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকালে এই গ্রন্থ গুলি প্রচুর তেল উৎপন্ন করে, যা আঠারো উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত থাকে।
অনেক সময় দেখা যায় গ্রন্থিগুলিতে থেকে তেল তৈরি হলেও তা ঠিকমতো বেরোতে পারছে না। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, ধরুন আপনার শরীরের স্বাভাবিক নিয়মই তেল উৎপন্ন হচ্ছে। কিন্তু আপনি মুখে ক্রিম মাখার ফলে সেই তেল যথাযথভাবে বেরোতে পারছে না। ফলে ব্রণ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই অনেকের গালে মাথায়ও ব্রণ দেখা যায়। এমনকি পিঠেও কারও কারও ব্রণ হয়।
অনেক সময়ই কারও কারও ত্বকে তেল ভালোভাবে তৈরি হয় না। ফলে ত্বক শুকনো হয়ে পড়ছে। এছাড়া অনেকের ত্বকে মাছের আঁশের মতো ছাল উঠে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ইকসিওসিস বলা হয়। শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকায় প্রায় সকলেরই ত্বক শুকনো হয়ে যায়। কিন্তু অনেকের দেখা যায় গরমকালেও ত্বক শুকনো হয়েই যাচ্ছে। বয়স্কদের প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়। ফলস্বরূপ তাঁদের ত্বক অনেক সময় শুকনো হয়ে যায়।

 

তাহলে প্রতিকারের উপায়

এই শুকনো ত্বকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার অনেক রকম তেল মাখা যায়। আপনার ত্বকের ক্ষতি করবে না এমন কিছু ব্যবহার করতে হবে। যেমন সর্ষে তেল, নারকেল তেল, পেট্রোলিয়াম জেলি ইত্যাদি। সাধারণভাবে আমরা বলি সরষের তেলের থেকে নারকেল তেল আমাদের ত্বকের পক্ষে বেশি উপকারী। এতে সমস্যা কম হয়। সানফ্লাওয়ার অয়েল, অলিভ অয়েল প্রভৃতিও মাখতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন তেল মাখতে হবে।
এছাড়া পেট্রোলিয়াম জেলি যদি খুব মোটা হয়, মাখলে কষ্ট হয় তাহলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন অন্য কোনও হালকা ধরনের লোশনও ত্বকে লাগাতে পারেন। অনেক সময় ওষুধের দোকানেও নানান রকম ওষুধ পাওয়া যায়। যেগুলি সুগন্ধি এবং লোশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চাইলে সেগুলোও দেখে-শুনে মাখতে পারেন। এছাড়া মশ্চারাইজার কিংবা গ্লিসারিন জলে মিশিয়েও মাখতে পারে।

আরও পড়ুন:

ত্বকের পরিচর্যায়: হঠাৎ শিশুর জ্বর আর মুখে-হাতে দানাদানা? কোন রোগের উপসর্গ? জানুন বিশেষজ্ঞের মতামত

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৩৫: শেকল-বাঁধা ঠাকুরবাড়ির খাতা

শিশুকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছেন? কোন কোন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন? কী কী ওষুধ সঙ্গে রাখবেন? রইল পরামর্শ

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব ১০: গঙ্গা এলেন মর্ত্যে, হলেন ভাগীরথী

 

খাবার পাতে থাকলে ভালো

শুষ্ক ত্বকের সমস্যা এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণ সব্জি খেতে হবে। প্রতিদিন মরসুমি ফল খেতে হবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। এতে আপনার ত্বক ভালো থাকবে।
 

পোশাক-আসাক

কারও যদি ত্বক স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শুষ্ক হয় তাহলে সিন্থেটিক কাপড়ের বদলে সুতির পোশাক পরতে হবে। কারণ সিন্থেটিক পোশাকে ত্বকে একপ্রকার জ্বালা বা চিড়চিড়ে ভাব আসতে পারে। তাই একান্তই যদি সিন্থেটিক পোশাক পরতে হয়, তাহলে ভিতরে একটি আরামদায়ক সুতির পোশাক পরে তার ওপর সিন্থেটিক পোশাক করুন। ব্যস, এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা এড়ানো সম্ভব। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

যোগাযোগ: ৯৮৩১৫৮৫০৮০, ৯৮৩০৩৮২৪৯৮


Skip to content