দ্রুতগতি ঘোড়ায় চলেছেন জনক রাজার দূত। যেতে হবে মিথিলা থেকে অযোধ্যা। জুড়বে দুই নগরীর হৃদয়। হরধনু ভঙ্গ করে নিজের পরাক্রম প্রদর্শন করে জনক রাজার মন জয় করে নিয়েছেন দশরথপুত্র রাম। বীর্যশুল্কা কন্যা সীতার জন্য সুযোগ্য পাত্র জনক রাজা পেয়ে গিয়েছেন। মিথিলাধিপতি জনক তাঁর কন্যার সঙ্গে কোশলরাজকুমার রামের বিবাহ স্থির করেছেন। সেই আনন্দবার্তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দূতেরা। পথে পার হয়ে গেল তিনটি রাত। অবশেষে ক্লান্ত দেহে অযোধ্যা নগরীতে প্রবেশ করলেন তাঁরা। রাজসভায় অমাত্য, সচিব, মন্ত্রী, পুরোহিত বেষ্টিত হয়ে সভা আলো করে বসে আছেন রাজা দশরথ। সব বৃত্তান্ত শুনে ভারি খুশি হলেন কোশলাধিপতি দশরথ। জনক জানিয়েছেন, তাঁর দুই কন্যার সঙ্গে রাম-লক্ষ্মণ দুই ভাইয়ের বিবাহ দিতে চান তিনি। শুভ কাজে আর বিলম্ব করতে চাইলেন না দশরথও। রাজপুরোহিত বশিষ্ঠ দূতেদের জানালেন, পরদিন সকালেই তাঁরা সকলে যাত্রা করবেন মিথিলার উদ্দেশ্যে।
রাত পোহালো। রাজপুরীতে সাজো-সাজো রব। দীর্ঘ পথ যাত্রার জন্য প্রস্তুতি চলছে ত্বরিতগতিতে। মন্ত্রীদের মধ্যে রাজা দশরথের সবচেয়ে নির্ভরতার স্থান মন্ত্রী সুমন্ত্র। রাজা তাঁকে ডেকে বললেন, “রাজকোষ থেকে পর্যাপ্ত ধনরাশি নিয়ে ধনাধ্যক্ষগণ চলবে আগে আগে। এই মঙ্গলযাত্রাপথে বশিষ্ঠ, বামদেব, জাবালি, কাশ্যপ, ভৃগু প্রমুখ ব্রাহ্মণেরা থাকবেন আমার অগ্রভাগে। সঙ্গে যাবে চতুরঙ্গ সৈন্যদল।”
চার রাত পরে হয়ে তবে তাঁরা পৌঁছলেন বিদেহদেশে। ফু্লে মালায় সেজে উঠেছে মিথিলাপুরী। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রাজপুরোহিত শতানন্দ সহরাজা জনক স্বয়ং। তিনি অভ্যর্থনা জানিয়ে দশরথকে বললেন, “মহারাজ, মিথিলাপুরীতে আপনার উপস্থিতি পরম সৌভাগ্য আমার। সৌভাগ্যবশত, ভগবান বশিষ্ঠও এসে ধন্য করেছেন আমাদের। রাঘব, আপনার দুই পুত্রের বীরত্ব, তেজস্বিতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমার কন্যার বিবাহে ছিল নানা বিঘ্ন। সেসব বিঘ্ন কেটে গিয়েছে। বিখ্যাত রঘুবংশের সঙ্গে চিরকালীন মৈত্রী সম্বন্ধ স্থাপন করতে পেরে আমি ধন্য, আমার রাজকুল গৌরবান্বিত। আগামীকাল ভোরে যজ্ঞকার্য শেষ হলে ঋষিদের উপস্থিতিতে বিবাহকার্য সম্পন্ন করুন আপনি।”
রাত পোহালো। রাজপুরীতে সাজো-সাজো রব। দীর্ঘ পথ যাত্রার জন্য প্রস্তুতি চলছে ত্বরিতগতিতে। মন্ত্রীদের মধ্যে রাজা দশরথের সবচেয়ে নির্ভরতার স্থান মন্ত্রী সুমন্ত্র। রাজা তাঁকে ডেকে বললেন, “রাজকোষ থেকে পর্যাপ্ত ধনরাশি নিয়ে ধনাধ্যক্ষগণ চলবে আগে আগে। এই মঙ্গলযাত্রাপথে বশিষ্ঠ, বামদেব, জাবালি, কাশ্যপ, ভৃগু প্রমুখ ব্রাহ্মণেরা থাকবেন আমার অগ্রভাগে। সঙ্গে যাবে চতুরঙ্গ সৈন্যদল।”
চার রাত পরে হয়ে তবে তাঁরা পৌঁছলেন বিদেহদেশে। ফু্লে মালায় সেজে উঠেছে মিথিলাপুরী। সেখানে তাঁদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রাজপুরোহিত শতানন্দ সহরাজা জনক স্বয়ং। তিনি অভ্যর্থনা জানিয়ে দশরথকে বললেন, “মহারাজ, মিথিলাপুরীতে আপনার উপস্থিতি পরম সৌভাগ্য আমার। সৌভাগ্যবশত, ভগবান বশিষ্ঠও এসে ধন্য করেছেন আমাদের। রাঘব, আপনার দুই পুত্রের বীরত্ব, তেজস্বিতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমার কন্যার বিবাহে ছিল নানা বিঘ্ন। সেসব বিঘ্ন কেটে গিয়েছে। বিখ্যাত রঘুবংশের সঙ্গে চিরকালীন মৈত্রী সম্বন্ধ স্থাপন করতে পেরে আমি ধন্য, আমার রাজকুল গৌরবান্বিত। আগামীকাল ভোরে যজ্ঞকার্য শেষ হলে ঋষিদের উপস্থিতিতে বিবাহকার্য সম্পন্ন করুন আপনি।”
রঘুকুলপতি দশরথ এ সম্মানে, সমাদরে আপ্লুত। মিথিলেশ্বর জনককে বললেন, “আপনি কন্যা দান করবেন, আপনি দাতা। আর আমি গ্রহীতা মাত্র। গ্রহীতা বস্তুত দাতারই অধীনস্থ। আপনি যা করতে বলবেন, আমরা তাই করব।” মৈত্রীবন্ধনে রাজর্ষি জনককে এ মুহূর্তেই জড়িয়ে নিলেন কোশলেশ্বর দশরথ। এত পরাক্রমশালী রাজার এমন বিনয়বাক্যে মুগ্ধ হলেন উপস্থিত সকলে।
এবার দশরথের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল মহর্ষি বিশ্বামিত্রের। তাঁকে দেখে আজ বড় আনন্দিত হলেন রাজা। উপলব্ধি করলেন, তাঁর শিক্ষার আলোয়, পথপ্রদর্শনেই সেদিনের কোমলমতি দুই বালক আজ ক্ষাত্রতেজে উজ্জ্বল করেছে নিজের বংশকে। ভীরু পিতৃস্নেহের ছায়া থেকে প্রায় জোর করেই একদিন দুই রাজকুমারকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিশ্বামিত্র। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তাঁরা আজ হয়ে উঠেছেন কোশল রাজ্যের উপযুক্ত উত্তরাধিকারী। কৌশল্যানন্দন রাম আজ শুধু মানবের নয়, দেবতাদেরও সম্মানের পাত্র। বিশ্বামিত্র আজ সফলকাম। তাঁর অভিপ্রায় পূর্ণ হয়েছে। সন্তুষ্ট মনে তিনি দুই রাজপুত্রকে ফিরিয়ে দিলেন তাঁদের পিতার কাছে। দীর্ঘদিনের অসাক্ষাৎ পিতার সঙ্গে পুত্রদের। অতৃপ্ত পিতৃহৃদয় পরম স্নেহে এক নিমেষে কাছে টেনে নিলেন পুত্রদের।
এবার দশরথের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল মহর্ষি বিশ্বামিত্রের। তাঁকে দেখে আজ বড় আনন্দিত হলেন রাজা। উপলব্ধি করলেন, তাঁর শিক্ষার আলোয়, পথপ্রদর্শনেই সেদিনের কোমলমতি দুই বালক আজ ক্ষাত্রতেজে উজ্জ্বল করেছে নিজের বংশকে। ভীরু পিতৃস্নেহের ছায়া থেকে প্রায় জোর করেই একদিন দুই রাজকুমারকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন বিশ্বামিত্র। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তাঁরা আজ হয়ে উঠেছেন কোশল রাজ্যের উপযুক্ত উত্তরাধিকারী। কৌশল্যানন্দন রাম আজ শুধু মানবের নয়, দেবতাদেরও সম্মানের পাত্র। বিশ্বামিত্র আজ সফলকাম। তাঁর অভিপ্রায় পূর্ণ হয়েছে। সন্তুষ্ট মনে তিনি দুই রাজপুত্রকে ফিরিয়ে দিলেন তাঁদের পিতার কাছে। দীর্ঘদিনের অসাক্ষাৎ পিতার সঙ্গে পুত্রদের। অতৃপ্ত পিতৃহৃদয় পরম স্নেহে এক নিমেষে কাছে টেনে নিলেন পুত্রদের।
আরও পড়ুন:
দশভুজা: শম্ভু, শম্ভু, শিব মহাদেব শম্ভু, খুদার ইবাদত যাঁর গলায় তাঁর আর কাকে ভয়?
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১: আলোছায়ায় ‘দৃষ্টিদান’
মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-২৯: একাগ্রচিত্ত অর্জুন উর্বশীকেও ফিরিয়ে দিলেন
ভোর হল মিথিলা পুরীতে। নতুন এক অধ্যায় সূচনার আশায় উদ্ভাসিত ভোর। জনক ডাকলেন পুরোহিত শতানন্দকে। তাঁর মনের কথা জানালেন রাজপুরোহিতকে।
মিথিলার পাশে ইক্ষুমতী নদী। তার তীরে সাংকাশ্য নগরী, দেখে মনে হয় যেন ইক্ষুমতীর জল পান করছে সে আনত হয়ে। সৌন্দর্যে সে পুরী পুষ্পক বিমানের মতো। উন্নত প্রাচীরে ঘেরা সেই নগরীর শোভা বাড়িয়েছে বিরাটকায় সুরম্য সব অট্টালিকা। সেখানকার রাজা কুশধ্বজ জনকের প্রিয় ভাই। তাঁরই আদেশে তিনি সে নগরী শাসন-পালন করছেন। জনকের মনে পড়ল কুশধ্বজের কথা। যে কোনও ধর্ম-আচরণে সঙ্গী থাকেন তিনিই। আজও তাঁকে পাশে রাখার বিশেষ প্রয়োজন অনুভব করলেন রাজর্ষি জনক। শতানন্দের নির্দেশে দূতরা দ্রুত গেলেন এ বার্তা নিয়ে। ভ্রাতৃবৎসল অগ্রজের নির্দেশ পেয়ে মিথিলায় এলেন কুশধ্বজ।
রাজসিংহাসনে বসে আছেন মিথিলাপতি জনক। পাশে অনুজ রাজা কুশধ্বজ। তাঁদের পাশের রাজযোগ্য আসনে অযোধ্যাপতি দশরথ। চারপাশে অমাত্য, পুরোহিত সবাই যথাযোগ্য মর্যাদায় নিজেদের আসনে। এমন আলোকিত সভায় বিবাহযজ্ঞের সূচনা হল। যজ্ঞবেদি প্রস্তুত হল। দুই রাজপুরোহিত দুই খ্যাত রাজবংশের পরিচয় দিলেন প্রচলিত বিবাহের রীতি মেনে। অযোধ্যাপুরীতে দশরথের আদি পূর্বপুরুষ ছিলেন রাজা ইক্ষ্বাকু। ব্রহ্মা থেকে জাত মরীচি। তাঁর পুত্র কশ্যপ। এর পর অঙ্গিরা, প্রচেতা, মনুর পর ইক্ষ্বাকু আবির্ভূত হন এই বংশে। তাঁর নামেই পরবর্তী কালে খ্যাত এই রাজবংশ। রত্নপ্রসূ এই বংশের উত্তরপুরুষ দাশরথি রাম ও লক্ষ্মণ বিবাহের পাত্র। রাজা জনকের পূর্বপুরুষ ছিলেন নিমি। তাঁর বংশে মিথি, জনক, উদাবসু, সুকেতু, দেবরাত, বৃহদ্রথ, সুধৃতি, অন্ধক, স্বর্ণরোমা, হ্রস্বরোমা প্রমুখ রাজগণ আবির্ভূত হন। মহাত্মা পুরুষ হ্রস্বরোমার দুই পুত্র জনক ও কুশধ্বজ। রাজা জনকের দুই কন্যা সীতা ও ঊর্মিলার সঙ্গে রাম ও লক্ষ্মণের বিবাহ স্থির হয়েছে। সভায় বর্ণিত হল দুই বিখ্যাত রাজবংশের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। খ্যাতনামা পূর্বপুরুষদের স্মরণে মননে বিবাহসভার উজ্জ্বলতা বেড়ে উঠল আরও। এ বর্ণনা যেন ছবি একখানি, আর্য ভারতের দুই গৌরবময় বংশের।
পরদিন পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র। জনক নিজের অভিপ্রায় জানালেন সকলের কাছে। তিনি ও তাঁর ভ্রাতা কুশধ্বজ মিলে সীতা ও ঊর্মিলাকে বধূরূপে দান করবেন আগামীকাল। আজ বিবাহের পূর্বে করণীয় যা কিছু কর্তব্য, সে সব হবে।
মিথিলার পাশে ইক্ষুমতী নদী। তার তীরে সাংকাশ্য নগরী, দেখে মনে হয় যেন ইক্ষুমতীর জল পান করছে সে আনত হয়ে। সৌন্দর্যে সে পুরী পুষ্পক বিমানের মতো। উন্নত প্রাচীরে ঘেরা সেই নগরীর শোভা বাড়িয়েছে বিরাটকায় সুরম্য সব অট্টালিকা। সেখানকার রাজা কুশধ্বজ জনকের প্রিয় ভাই। তাঁরই আদেশে তিনি সে নগরী শাসন-পালন করছেন। জনকের মনে পড়ল কুশধ্বজের কথা। যে কোনও ধর্ম-আচরণে সঙ্গী থাকেন তিনিই। আজও তাঁকে পাশে রাখার বিশেষ প্রয়োজন অনুভব করলেন রাজর্ষি জনক। শতানন্দের নির্দেশে দূতরা দ্রুত গেলেন এ বার্তা নিয়ে। ভ্রাতৃবৎসল অগ্রজের নির্দেশ পেয়ে মিথিলায় এলেন কুশধ্বজ।
রাজসিংহাসনে বসে আছেন মিথিলাপতি জনক। পাশে অনুজ রাজা কুশধ্বজ। তাঁদের পাশের রাজযোগ্য আসনে অযোধ্যাপতি দশরথ। চারপাশে অমাত্য, পুরোহিত সবাই যথাযোগ্য মর্যাদায় নিজেদের আসনে। এমন আলোকিত সভায় বিবাহযজ্ঞের সূচনা হল। যজ্ঞবেদি প্রস্তুত হল। দুই রাজপুরোহিত দুই খ্যাত রাজবংশের পরিচয় দিলেন প্রচলিত বিবাহের রীতি মেনে। অযোধ্যাপুরীতে দশরথের আদি পূর্বপুরুষ ছিলেন রাজা ইক্ষ্বাকু। ব্রহ্মা থেকে জাত মরীচি। তাঁর পুত্র কশ্যপ। এর পর অঙ্গিরা, প্রচেতা, মনুর পর ইক্ষ্বাকু আবির্ভূত হন এই বংশে। তাঁর নামেই পরবর্তী কালে খ্যাত এই রাজবংশ। রত্নপ্রসূ এই বংশের উত্তরপুরুষ দাশরথি রাম ও লক্ষ্মণ বিবাহের পাত্র। রাজা জনকের পূর্বপুরুষ ছিলেন নিমি। তাঁর বংশে মিথি, জনক, উদাবসু, সুকেতু, দেবরাত, বৃহদ্রথ, সুধৃতি, অন্ধক, স্বর্ণরোমা, হ্রস্বরোমা প্রমুখ রাজগণ আবির্ভূত হন। মহাত্মা পুরুষ হ্রস্বরোমার দুই পুত্র জনক ও কুশধ্বজ। রাজা জনকের দুই কন্যা সীতা ও ঊর্মিলার সঙ্গে রাম ও লক্ষ্মণের বিবাহ স্থির হয়েছে। সভায় বর্ণিত হল দুই বিখ্যাত রাজবংশের সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। খ্যাতনামা পূর্বপুরুষদের স্মরণে মননে বিবাহসভার উজ্জ্বলতা বেড়ে উঠল আরও। এ বর্ণনা যেন ছবি একখানি, আর্য ভারতের দুই গৌরবময় বংশের।
পরদিন পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র। জনক নিজের অভিপ্রায় জানালেন সকলের কাছে। তিনি ও তাঁর ভ্রাতা কুশধ্বজ মিলে সীতা ও ঊর্মিলাকে বধূরূপে দান করবেন আগামীকাল। আজ বিবাহের পূর্বে করণীয় যা কিছু কর্তব্য, সে সব হবে।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-২৬: ঠাকুরবাড়ির বাঙালিয়ানা
যে জীবন মানেনি বাধা…
ত্বকের পরিচর্যায়: যখন তখন হানা দিতে পারে ফাঙ্গাল ইনফেকশন, কী ভাবে বাঁচবেন? রইল উপায়
সে সভায় দীপ্ত অগ্নিশিখার মতো রয়েছেন বিশ্বামিত্র মহর্ষি। সুদূরপ্রসারী তাঁর ভাবনার জগৎ। বলে উঠলেন তিনি, “ইক্ষ্বাকু ও বিদেহ দুই রাজবংশ নিজ গরিমায় ভুবনবিখ্যাত। রাজা কুশধ্বজের দুই কন্যা। রূপে গুণে অতুলনীয়া তারাও। কোশলাধিপতির অপর দুই পুত্র ভরত ও শত্রুঘ্নের জন্য আমি প্রার্থনা করছি এই দুই কন্যাকে। রাজা কুশধ্বজ এ সভায় উপস্থিত। তিনি যদি সম্মত হন এ বিবাহে, তাহলে চার দশরথ পুত্রের যোগ্য পত্নী লাভ সম্ভব।” ভিন্ন ভিন্ন রাজবংশে বিবাহের ফলে ভাঙন আসতে পারে ইক্ষ্বাকু বংশে, এ সম্ভাবনা হয়ত বিশ্বামিত্রের প্রাজ্ঞ মন দেখতে পেয়েছিল।
এ বিবাহ প্রস্তাবে সম্মত হলেন উভয়পক্ষই। জ্বলে উঠল উৎসবের আলো মিথিলানগরীতে। একই বিবাহবাসরে চার দীপ্তিমতী অগ্নিশিখার মতো সীতা, ঊর্মিলা, মাণ্ডবী ও শ্রুতকীর্তি — চার রাজকন্যার সঙ্গে রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন চার দাশরথির শুভ পরিণয় সম্পন্ন হল। অগ্নি প্রদক্ষিণ কালে রাজারা, সকল ঋষিরা শান্তি পাঠ করতে লাগলেন। রাজপুরোহিত শতানন্দের উচ্চারিত মন্ত্রে চার কন্যার পাণি গ্রহণ করলেন চার রাজকুমার। স্বর্গলোকে দেবতারাও খুশি হলেন। পুষ্পবৃষ্টি ঝরে পড়ল আকাশ হতে। মঙ্গলবাদ্য বেজে উঠল অন্তরিক্ষলোকে। গান গেয়ে উঠলেন গন্ধর্বরা। অপ্সরারা নাচ করে উঠলেন আনন্দে।
ভোর হল আনন্দ উৎসবের শেষে। বিদায়ের পালা ঘনিয়ে এল। এমন পূর্ণ অয়োজনের হোতা বিশ্বামিত্র দুই রাজার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাত্রা করলেন উত্তর অভিমুখে। এবার যেতে হবে তাঁকে নগাধিরাজ হিমালয়ের কাছে। —চলবে
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
এ বিবাহ প্রস্তাবে সম্মত হলেন উভয়পক্ষই। জ্বলে উঠল উৎসবের আলো মিথিলানগরীতে। একই বিবাহবাসরে চার দীপ্তিমতী অগ্নিশিখার মতো সীতা, ঊর্মিলা, মাণ্ডবী ও শ্রুতকীর্তি — চার রাজকন্যার সঙ্গে রাম, লক্ষ্মণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন চার দাশরথির শুভ পরিণয় সম্পন্ন হল। অগ্নি প্রদক্ষিণ কালে রাজারা, সকল ঋষিরা শান্তি পাঠ করতে লাগলেন। রাজপুরোহিত শতানন্দের উচ্চারিত মন্ত্রে চার কন্যার পাণি গ্রহণ করলেন চার রাজকুমার। স্বর্গলোকে দেবতারাও খুশি হলেন। পুষ্পবৃষ্টি ঝরে পড়ল আকাশ হতে। মঙ্গলবাদ্য বেজে উঠল অন্তরিক্ষলোকে। গান গেয়ে উঠলেন গন্ধর্বরা। অপ্সরারা নাচ করে উঠলেন আনন্দে।
ভোর হল আনন্দ উৎসবের শেষে। বিদায়ের পালা ঘনিয়ে এল। এমন পূর্ণ অয়োজনের হোতা বিশ্বামিত্র দুই রাজার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাত্রা করলেন উত্তর অভিমুখে। এবার যেতে হবে তাঁকে নগাধিরাজ হিমালয়ের কাছে। —চলবে
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
*শাশ্বতী রামায়ণী (Saswati Ramayani – Ramayana) : ড. অমৃতা ঘোষ (Amrita Ghosh) সংস্কৃতের অধ্যাপিকা, আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল মহাবিদ্যালয়। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সম্পাদিত গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বেশ কিছু গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ।