সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪


এই রোদ তো, এই বৃষ্টি— এই রকম আবহাওয়ায় শরীর কখনও ঘামে ভিজে থাকে, আবার কখনও বৃষ্টির জলে একেবারেই নাজেহাল অবস্থা। গায়ে হাতে পায়ে ঘাম, তার সঙ্গেই জল জমে থাকছে। ফলে ত্বকে কিছু ছত্রাক সংক্রমণ (ফাংগাল ইনফেকশন) দেখা যাচ্ছে।
আজ এই ফাঙ্গাল ইনফেকশন নিয়ে আলোচনা করব। ফাঙ্গাল ইনফেকশন একটি সংক্রামক রোগ। এটি বহু নামে পরিচিত যেমন— দাদ, হাজা, চুলকানি ইত্যাদি। অনেকেই বাজার চলতি বিভিন্ন দাদ, হাজার মলম লাগাতে থাকেন এটি ভালো কিনা খারাপ তা নিয়ে পড়ে আলোচনা করছি। তার আগে ফাঙ্গাল ইনফেকশন কিভাবে চিনব তা জেনে নেওয়া যাক।
 

উপসর্গ

ফাঙ্গাল ইনফেকশন শরীরের ভাঁজে ভাঁজে হতে পারে। যেমন বগলের ভাঁজে, বুকের ভাঁজে, কোমরের ভাঁজে, কুঁচকিতে— এই সমস্ত জায়গায় হয়ে থাকে।
এগুলি দেখতে গোলাকৃতি হয়। অনেকগুলি গোল মিলে একটা বড় আকারের গোল হয়ে থাকে।
ত্বকে প্রচুর চুলকানি, জ্বালা-পোড়া ও অস্বস্তি বোধ হয়।
ত্বক ক্রমশ অস্বাভাবিক লাল হয়ে যায়।
এই রোগ ছোঁয়াচে। তাই একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আরও পড়ুন:

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-২৯: জীবন-জীবিকায় পুণ্যসলিলা গঙ্গা, হারিয়ে যাওয়া নদীয়ালি মাছের অস্তিত্ব রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে আমাদেরই

আরও ১১২ জনকে চাকরির নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, পুজোর আগেই মোট ১৮৯ টেট পরীক্ষার্থীর চাকরি

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১: আলোছায়ায় ‘দৃষ্টিদান’

গত কয়েক বছরের মধ্যে এই ফাঙ্গাল ইনফেকশনের প্রাদুর্ভাব খুব বেড়েছে। বেশির ভাগ মানুষই না জেনে বাজার চলতি বিভিন্ন মলম ব্যবহার করেন যেগুলিতে স্টেরয়েড থাকে। এই স্টেরয়েড জাতীয় মলম লাগালে প্রথমে ফাঙ্গাল ইনফেকশন আপাতভাবে একটু ভালো হয়ে গেলেও পরে সেটা বেড়ে যেতে থাকে এবং তা সারা শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে। এমনকি মাথায়, নখে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তখন এগুলো সারানো মুশকিল হয়ে যায়। তাই এই ফাঙ্গাল ইনফেকশনকে খুব সাধারণভাবে নেওয়া ঠিক নয়। উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলেই সরাসরি নিজে চিকিৎসা না করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
 

প্রতিরোধের উপায়

ফাঙ্গাল ইনফেকশনের মতো সমস্যা দেখা দিলেই খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেন না এটি আক্রান্ত স্থান থেকে সারা শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

খুব বেশিক্ষণ ঘামে ভেজা পোশাক পরে থাকা যাবে না। যেহেতু ফাঙ্গাল ইনফেকশন গরমকালে ঘাম থেকেই বেশি হয়, সেই জন্য শরীরের ভাঁজে ভাঁজে বেশি দেখা দেয়। যারা অফিসে যাচ্ছেন সকাল থেকেই একই পোশাক পড়ে থাকছেন। তাঁরা সম্ভব হলে কাজের মাঝখানে অন্তর্বাস বদলে ফেলুন।

নিয়মিত পোশাক-আসাক ডিটার্জেন্ট দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।

আরও পড়ুন:

ডাক্তারের ডায়েরি, পর্ব-৩৪: সেই সব মহান ডাক্তারবাবুরা / ২

বরণীয় মানুষের স্মরণীয় সঙ্গ, পর্ব-৯: কলকাতায় মাঝপথে পড়াশোনা থামিয়ে মুম্বইয়ের ট্রেন ধরলেন অশোককুমার/১

ছাদে দাঁড়িয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছেন বিগ-বি, রশ্মিকার হাতে লাটাই, ‘গুডবাই’ কবে মুক্তি পাচ্ছে?

অনেকে মনে করেন বাজার চলতি ওষুধ পাঁচ থেকে সাত দিন ওষুধ খেলেই ভালো হয়ে যাবে। আপাত দৃষ্টিতে ভালো হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হলেও আসলে কিন্তু এটি ভেতরে রয়ে যাচ্ছে। ছাই চাপা আগুনের মতো। তাই ফাঙ্গাল ইনফেকশনকে একেবারেই সাধারণ ভাবে নেওয়া যাবে না। যখনই এটা শরীরে দেখা দেবে, তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। নিয়মিত মলম লাগালে এটি নিরাময় হবে। সাধারণ ওষুধের দোকান থেকে কেনা ওষুধ বা মলমে আপাতভাবে সারলেও তা গভীরে পৌঁছে যাচ্ছে। এবং আমাদের কাছে যখন সেই রোগী আসছেন, তখন তাঁর রোগ সারাতে একমাসের জায়গায় তিনমাস সময় লেগে যাচ্ছে। খরচও অনেক বেড়ে যাচ্ছে। যেটা বাড়িয়ে তুলছেন আপনারা নিজেরাই। তাই নিজে ডাক্তারি না করে সব সময়ই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলুন।

বাড়িতে যেসব জামাকাপড় ব্যবহার করেন, যেমন: বিছানার চাদর, গামছা ইত্যাদি সেগুলি অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না ।
রোগটা ছোঁয়াচে রোগ কাজেই নিজে সাবধানে থাকুন অপরকে সুরক্ষিত রাখুন।

যোগাযোগ: ৯৮৩১৫৮৫০৮০, ৯৮৩০৩৮২৪৯৮

Skip to content