বুধবার ২৭ নভেম্বর, ২০২৪


চিকিৎসার জন্য সলমন রুশদিকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদিকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তাঁর এজেন্ট এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি জানিয়েছেন, হামলার জন্য লেখক একটি চোখ হারাতে পারেন। হাতের স্নায়ু ও যকৃৎ ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অ্যান্ড্রুকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘সলমন রুশদি এখনও কথা বলতে পারছেন না। তাঁর অবস্থা বেশ গুরুতর। তিনি হয়তো একটি চোখ হারাতে পারেন। এলোপাথাড়ি হামলার ফলে লেখকের হাতের স্নায়ু ছিঁড়েছে। পর পর ছুরির আঘাতে যকৃৎ ক্ষতিগ্রস্ত।’
শুক্রবার নিউ ইয়র্ক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শতকা ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে তিনি ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন। এমন সময় এক দুষ্কৃতী আচমকা তাঁকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। মঞ্চে রুশদিকে যখন এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করানো হচ্ছিল, তখনই ওই দুষ্কৃতী আক্রমণ করে। আক্রমণের পরই প্রেক্ষাগৃহ দ্রুত খালি করে দেওয়া হয়। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে লেখকের ঘাড়ে, বুকে ও পেটে ১৫ থেকে ২০ বার ছুরির কোপ বসানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পুলিশে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তাঁরা ৭৫ বছর বয়সি লেখকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। এই ঘটনায় ২৪ বছর বয়সি ওই হামলাকারী হাদি মাতারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, রুশদির লেখা বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্যই হামলা চালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, রুশদির লেখা বিতর্কিত বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ের-এর জন্য ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা রুহোল্লা খোমেইনি লেখকের নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিলেন। আয়াতোল্লা মারা গেলেও সেই ‘ফতোয়া’ এখনও জারি রয়েছে। বুকারজয়ী লেখক সলমন রুশদি মাথার দাম রাখা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও লেখকের ওপর হামলা হয়েছে। ইসলামি কট্টরপন্থী সংগঠন ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য রুশদির বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে। এর আগে ইটালির মিলানেও তাঁর উপর হামলা হয়। শুধু তাই নয়, টোকিয়োর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ের জাপানি অনুবাদক হিতোসি ইগারাসিকের ওপর হামলা চালানো হয়।

Skip to content