জীবন মানেই সংগ্রাম। সেই সংগ্রাম এগিয়ে যাওয়ার, সেই সংগ্রাম ঘুরে দাঁড়াবার। সংগ্রামের সেই পথের অলিগলি বেয়ে আমরা পৌঁছনোর চেষ্টা করি নিজেদের গন্তব্যে। গন্তব্যে উপনীত হওয়ার সফলতা যখন আসে তখন উচ্ছসিত হই। আর যখন বিফল হই, তখন ঘিরে ধরে একঝাঁক নৈরাশ্য। ধীশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ তখন চেষ্টা করেন সেই নৈরাশ্যতাকে জয় করার। প্রকৃত অর্থে জীবনের সার্থকতা লুকিয়ে থাকে সেখানেই। জগতের বহু কিছু থেকে আমরা সংগ্রহ করতে পারি জীবন সংগ্রামের মন্ত্র। যে সংগ্রামে থাকবে জীবনের সারবত্তা।
‘কই মাছ’-এর জীবনধারণ দেখলে আমাদের মনে আশার সঞ্চার হয়। আশার সঞ্চার হয় এই কারণেই যে, এই মাছকে যেকোনও পরিবেশে যেকোনও পরিস্থিতিতেই রাখা হোক না কেন (বেশি জল, কম জল, জল নেই) সেখানেই সে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকে। এমনকি এই মাছকে যদি মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় বা এই মাছ যদি কোনও ভাবে বিপদের সংকেত পায় তাহলে সে গাছে পর্যন্ত উঠতে পারে! সেই কারণেই একে ‘ক্লাম্বিং পার্চ’ও (Climbing perch) বলা হয়। সুতরাং যেকোনও পরিস্থিতিতে বাঁচবার জন্য এই যে আকুলতা, এই আকুলতাটিই আমাদের আকর্ষণ করে। কোনও রকম প্রতিকূল বা বিরূপ পরিস্থিতিতে এরা দমে যায় না। তাই তো বলা হয় অনুপ্রেরণার আর এক নাম কই মাছ।
অতীতে বাংলাদেশের যশোর জেলা থেকে নৌকা করে প্রচুর পরিমাণে কই মাছ এখানে আসতো। সেই মাছকে বলা হতো যশোরের কই। সাধারণ মানুষ সেই মাছকে পছন্দ করতো। কিন্তু কীটনাশক ব্যবহার করার কারণেই হোক বা অন্য যেকোনও কারণেই এই মাছ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
কাজেই কই মাছের পরিবর্তে বাজারে যে মাছটিকে দেখা যেত সেটি হল ভিয়েত-কই। এই ভিয়েত-কই আকারে বেশ বড় হয়। চাষিরা এই মাছ চাষ বেশ ভালো করেই রপ্ত করে নিয়েছেন। কিন্তু কই প্রেমী বাঙালির কাছে আকারে বড় এই ভিয়েত-কই এর গ্রহণযোগ্যতা তেমন রইল না। কারণ দেশি কইয়ের স্বাদের কাছে ভিয়েতকই কোনওভাবেই আসে না, বাঙালির রসনার তৃপ্তিও হয় না। তাই ভিয়েত-কইয়ের চাষও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বা বন্ধ হবার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
ভিয়েত-কই বাজারে আসার পর মানুষ দেশি কইয়ের মর্ম বুঝতে পেরেছেন মানুষ। কাজেই দেশি কই চাষের উপর গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে। কাজেই আগামীদিনে আমরা যে দেশি কইকে আবার ফিরে পাবো তা মনে হয় ভীষণভাবে।
কই মাছের পুষ্টিগত গুণ অসামান্য। এই মাছে ক্যালসিয়াম এত প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যে অন্য মাছের মধ্যে তা দেখা যায় না। ক্যালসিয়াম ছাড়াও ভিটামিন-ডি এবং ফসফরাস রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে।
জীবনের চলার পথে অনুপ্রেরণা দানে যে মাছ অগ্রণী, রসনায় যে অতুলনীয়, পুষ্টিগত গুণাবলীতে যার জুড়ি মেলা ভার বাঙালির সেই প্রিয় কইমাছ আজীবন গ্রামের ধানক্ষেতে, জলাভূমিতে খেলে বেড়াক।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।
‘কই মাছ’-এর জীবনধারণ দেখলে আমাদের মনে আশার সঞ্চার হয়। আশার সঞ্চার হয় এই কারণেই যে, এই মাছকে যেকোনও পরিবেশে যেকোনও পরিস্থিতিতেই রাখা হোক না কেন (বেশি জল, কম জল, জল নেই) সেখানেই সে সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকে। এমনকি এই মাছকে যদি মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় বা এই মাছ যদি কোনও ভাবে বিপদের সংকেত পায় তাহলে সে গাছে পর্যন্ত উঠতে পারে! সেই কারণেই একে ‘ক্লাম্বিং পার্চ’ও (Climbing perch) বলা হয়। সুতরাং যেকোনও পরিস্থিতিতে বাঁচবার জন্য এই যে আকুলতা, এই আকুলতাটিই আমাদের আকর্ষণ করে। কোনও রকম প্রতিকূল বা বিরূপ পরিস্থিতিতে এরা দমে যায় না। তাই তো বলা হয় অনুপ্রেরণার আর এক নাম কই মাছ।
অতীতে বাংলাদেশের যশোর জেলা থেকে নৌকা করে প্রচুর পরিমাণে কই মাছ এখানে আসতো। সেই মাছকে বলা হতো যশোরের কই। সাধারণ মানুষ সেই মাছকে পছন্দ করতো। কিন্তু কীটনাশক ব্যবহার করার কারণেই হোক বা অন্য যেকোনও কারণেই এই মাছ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
কাজেই কই মাছের পরিবর্তে বাজারে যে মাছটিকে দেখা যেত সেটি হল ভিয়েত-কই। এই ভিয়েত-কই আকারে বেশ বড় হয়। চাষিরা এই মাছ চাষ বেশ ভালো করেই রপ্ত করে নিয়েছেন। কিন্তু কই প্রেমী বাঙালির কাছে আকারে বড় এই ভিয়েত-কই এর গ্রহণযোগ্যতা তেমন রইল না। কারণ দেশি কইয়ের স্বাদের কাছে ভিয়েতকই কোনওভাবেই আসে না, বাঙালির রসনার তৃপ্তিও হয় না। তাই ভিয়েত-কইয়ের চাষও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে বা বন্ধ হবার উপক্রম দেখা দিয়েছে।
ভিয়েত-কই বাজারে আসার পর মানুষ দেশি কইয়ের মর্ম বুঝতে পেরেছেন মানুষ। কাজেই দেশি কই চাষের উপর গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে। কাজেই আগামীদিনে আমরা যে দেশি কইকে আবার ফিরে পাবো তা মনে হয় ভীষণভাবে।
কই মাছের পুষ্টিগত গুণ অসামান্য। এই মাছে ক্যালসিয়াম এত প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যে অন্য মাছের মধ্যে তা দেখা যায় না। ক্যালসিয়াম ছাড়াও ভিটামিন-ডি এবং ফসফরাস রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে।
জীবনের চলার পথে অনুপ্রেরণা দানে যে মাছ অগ্রণী, রসনায় যে অতুলনীয়, পুষ্টিগত গুণাবলীতে যার জুড়ি মেলা ভার বাঙালির সেই প্রিয় কইমাছ আজীবন গ্রামের ধানক্ষেতে, জলাভূমিতে খেলে বেড়াক।
* বাঙালির মৎস্যপুরাণ (Bangalir Matsya Purana – Fish) : ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় (Pratap Mukhopadhyay) অবসরপ্রাপ্ত প্রধান মৎস্যবিজ্ঞানী, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, ভারত সরকার।