অলঙ্করণ : শিঞ্জনা দে, কেজি বিভাগ, অ্যাবট শিশু হল
একদিন একটা বুলবুলি পাখি বহু দূর থেকে উড়তে উড়তে এসে আমাদের জারুল গাছে বসল। অচেনা জায়গা, সূর্য ডুবে যাওয়ায় বিকেল শেষের কালসাঁঝি নেমে আসছে। এ সময় তো আর কোথাও যাওয়া চলে না। ছোট্ট বুলবুলি তখন একটা শক্তপোক্ত আশ্রয় খুঁজতে লাগল। একটু দূরেই একটা বড় গাছের থেকে পাখিদের হইহই শুনতে পেয়ে বুঝল, ওটাই সব পাখিদের থাকার জায়গা। বুলবুলি তখন উড়ে গিয়ে ওই গাছেরই একটা মাঝারি ডালে বসল। নতুন পরিবেশে এত বন্ধুদের কিচিরমিচির বেশ লাগছিল বুলবুলির। সন্ধে আর একটু বাড়তেই পাখিরা যে যার বাসায় ঘুমিয়ে পড়ল। বেশিরভাগ পাখি তো রাতে দেখতে পায় না, তাই সূর্য ডুবলেই ওরা ঘুমিয়ে পড়ে, আর সূর্যের আলো ফুটলেই আবার আকাশে উড়ে যায়। যা-ই হোক, বুলবুলিও চোখ বন্ধ করল। কিছুক্ষণ বাদেই গাছের ওই ডাল থেকেই কিচিরমিচির শুরু হল। চোখে ভালো না দেখলেও বুঝতে পারল ওগুলো বাচ্চা পাখির গলা। আস্তে আস্তে বুলবুলিটা ওই বাসার দিকে এগিয়ে গিয়ে বুঝতে পারল সেখানে ছানা পাখিগুলো ছাড়া কোনও বড় পাখি নেই। বুলবুলির মনে হল তাহলে এখন করণীয় কী?
বাচ্চাগুলো এভাবে একা থাকলে তো যে কোনও বিপদ হতে পারে। আর বিশেষ কিছু না ভেবে বুলবুলি বাসায় ঢুকে পড়ল। এদিকে ছানাগুলো তো মা ফিরে এসেছে ভেবে খুশি হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। বুলবুলি প্রায় রাতভর সজাগ থেকে কখন জানি একটু ঘুমিয়ে গিয়েছিল। বাসার সামনে হঠাৎ জোরালো কিচিরমিচিরে চমকে ঘুম ভাঙল বুলবুলির। দেখে একটা চড়াই পাখি প্রচণ্ড উদবেগে ডাকাডাকি করছে… এই তাহলে মা-পাখি। অচেনা বুলবুলিকে বাসায় দেখে মা-চড়াই তো আরও ভয় পেয়ে গেল। বুলবুলি তখন বলল—’নাও চড়াই, তোমার বাচ্চাদের এবার সামলাও। কাল রাতে ওরা খুব কাঁদছিল দেখে আমিই ওদের সাথে ছিলাম। আর কখনও এমনভাবে বাচ্চাদের ফেলে রেখে বাইরে থেকো না।’
মা-চড়াই সবটা বুঝতে পেরে বলল—’তোমাকে কী বলে যে ধন্যবাদ দিই! আসলে বড় বড় মানুষেরা আমাদের ধরে আটকে রাখে, মজা করে, কষ্ট দেয়। ওরা তো বোঝেও না যে আমাদেরও সংসার, ছেলেমেয়ে সব আছে। ওরা দিন দিন মানবিকতা হারালেও তোমার বিবেক আর মমতা বোধ আমাকে স্বস্তি দিল। ভালো থেকো গো ভালো পাখি।’ ভোরের আলো মেখে বুলবুলি উড়ে গেল বহু বহু দূরের পথ। শিখিয়ে গেল দায়িত্ব কীভাবে নিতে হয়।
* গল্প (Short Story) – দায়িত্ব (dayitwa) : মনশ্রী দে (Monosree De), লেখিকা
বাচ্চাগুলো এভাবে একা থাকলে তো যে কোনও বিপদ হতে পারে। আর বিশেষ কিছু না ভেবে বুলবুলি বাসায় ঢুকে পড়ল। এদিকে ছানাগুলো তো মা ফিরে এসেছে ভেবে খুশি হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। বুলবুলি প্রায় রাতভর সজাগ থেকে কখন জানি একটু ঘুমিয়ে গিয়েছিল। বাসার সামনে হঠাৎ জোরালো কিচিরমিচিরে চমকে ঘুম ভাঙল বুলবুলির। দেখে একটা চড়াই পাখি প্রচণ্ড উদবেগে ডাকাডাকি করছে… এই তাহলে মা-পাখি। অচেনা বুলবুলিকে বাসায় দেখে মা-চড়াই তো আরও ভয় পেয়ে গেল। বুলবুলি তখন বলল—’নাও চড়াই, তোমার বাচ্চাদের এবার সামলাও। কাল রাতে ওরা খুব কাঁদছিল দেখে আমিই ওদের সাথে ছিলাম। আর কখনও এমনভাবে বাচ্চাদের ফেলে রেখে বাইরে থেকো না।’
মা-চড়াই সবটা বুঝতে পেরে বলল—’তোমাকে কী বলে যে ধন্যবাদ দিই! আসলে বড় বড় মানুষেরা আমাদের ধরে আটকে রাখে, মজা করে, কষ্ট দেয়। ওরা তো বোঝেও না যে আমাদেরও সংসার, ছেলেমেয়ে সব আছে। ওরা দিন দিন মানবিকতা হারালেও তোমার বিবেক আর মমতা বোধ আমাকে স্বস্তি দিল। ভালো থেকো গো ভালো পাখি।’ ভোরের আলো মেখে বুলবুলি উড়ে গেল বহু বহু দূরের পথ। শিখিয়ে গেল দায়িত্ব কীভাবে নিতে হয়।
* গল্প (Short Story) – দায়িত্ব (dayitwa) : মনশ্রী দে (Monosree De), লেখিকা