![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2022/03/Tulsi-1.jpg)
তুলসী চক্রবর্তী, ‘সাড়ে ৭৪’ ছবির একটি দৃশ্যে। ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে।
গত ৩ মার্চ ছিল তাঁর জন্মদিন। ১৮৯৯ সালে তিনি হাওড়া জেলার গোয়ারি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তুলসী চক্রবর্তী৷ বাবা আশুতোষ চক্রবর্তী রেলকর্মী হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে বদলি হতে হত৷ তার ফলে তিনি কলকাতায় কাকা প্রসাদ চক্রবর্তীর কাছেই ছিলেন। সেই কাকার হাত ধরেই তাঁর থিয়েটার জগতে প্রবেশ। স্টার থিয়েটারের কর্ণধার অপরেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কাছেও তুলসীবাবুকে নিয়ে যান তাঁর কাকা। থিয়েটার জগতে এসে উনি প্রথম অভিনয় করেন ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ নাটকে।
বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর আত্মপ্রকাশ ‘পুনর্জন্ম’ ছবিতে। এর পর একে একে তিনি অভিনয় করে গিয়েছেন বিভিন্ন ছবিতে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘মায়ামৃগ’, ‘শুনো বরনারী’, ‘দ্বীপ দ্বেলে যাই’, ‘অযান্ত্রিক’ ইত্যাদি৷ তাঁর অভিনয়ের নৈপুণ্যতা দেখে কারও মনে হয় না তিনি অভিনয় করছেন। বাস্তবের প্রতিটি জীবন্ত চরিত্রকে তিনি ক্যামেরার ওপারে প্রাণসঞ্চার করতেন। ছবি বিশ্বাস থেকে শুরু করে মহানায়ক উত্তমকুমার সকলেই তাঁর অভাবনীয় অভিনয়সত্তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
তুলসী চক্রবর্তীকে আমরা বড় কোনও চরিত্রে পাইনি কখনও। কিন্তু সেই ছোট চরিত্রের অপূর্ব মাধুর্যে বিমোহিত হত দর্শক। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘অপুর সংসার’ যেন তার জ্বলন্ত উপমা। সাড়ে চুয়াত্তর-এ অভিনয়দক্ষতায় উত্তম-সুচিত্রাকেও যেন ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ এখানেই বোধহয় তিনি অগ্রগণ্য। ব্যতিক্রম শুধু একটি ছবি যেখানে আমরা মুখ্য চরিত্রে পাই তুলসীবাবুকে; স্বনামধন্য চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘পরশ পাথর’। জহুরি যেমন জহর চেনে, সেরকমই সত্যজিৎ রায় চিনেছিলেন তুলসীবাবুকে। তুলসীবাবুকে না পেলে হয়তো আমরা সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘পরশ পাথর’ ছবিও পেতাম না। চলচ্চিত্রপ্রেমী বাঙালি আজও আক্ষেপ করেন এই ভেবে যে, এরকম ব্যতিক্রমী দু-একটি ছবি আর কেন আমরা পেলাম না; যেখানে তুলসীবাবু থাকতেন মুখ্য চরিত্রে।
মানব জীবনের শিক্ষার প্রথম ধাপই হল বিনয়। তুলসী চক্রবর্তীর কাছ থেকে আমরা সেই শিক্ষাও পেয়েছি। খুবই অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন তিনি৷ সত্যজিৎ রায় ওঁকে শ্যুটিংয়ে যাবার জন্য গাড়ি পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু পরম বিনয়ের সঙ্গে উনি তা ফিরিয়ে দেন। জীবনের শেষ দিকেও উনি ট্রামে-বাসে করে শ্যুটিং-এ যেতেন। ‘পরশ পাথর’ ছবির জন্য সত্যজিৎ রায় যে সাম্মানিক অর্থ ওঁকে দিতে চেয়েছিলেন উনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি বলেছিলেন, আপনার থেকে এত পরিমাণ অর্থ নিলে আমাকে আর কেউ কাজে ডাকবে না। চরম দারিদ্র ও অর্থকষ্টে জীবন কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও ঠোঁটের কোণের হাসিকে মলিন হতে দেননি। সত্যি এ যেন এক রূপকথার চরিত্র; যা আমাদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষা দিয়ে যান।
‘যদি তুলসী চক্রবর্তীর জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হত তাহলে তাঁর অস্কার পাওয়া কেউ আটকাতে পারত না৷’ সত্যজিৎ রায়ের এরূপ মন্তব্যে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হত না তুলসীবাবু ঠিক কোন পর্যায়ের অভিনেতা ছিলেন।
মহান এই অভিনেতা ১১ ডিসেম্বর ১৯৬১ সালে পরলোকগমন করেন। এটা খুব ভীষণভাবে সত্য যে, যতদিন মানুষের বিনোদনের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রজগৎ থাকবে, তুলসী চক্রবর্তীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে; আগামী প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে, পাবে এক নতুন দিশা।
বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর আত্মপ্রকাশ ‘পুনর্জন্ম’ ছবিতে। এর পর একে একে তিনি অভিনয় করে গিয়েছেন বিভিন্ন ছবিতে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘মায়ামৃগ’, ‘শুনো বরনারী’, ‘দ্বীপ দ্বেলে যাই’, ‘অযান্ত্রিক’ ইত্যাদি৷ তাঁর অভিনয়ের নৈপুণ্যতা দেখে কারও মনে হয় না তিনি অভিনয় করছেন। বাস্তবের প্রতিটি জীবন্ত চরিত্রকে তিনি ক্যামেরার ওপারে প্রাণসঞ্চার করতেন। ছবি বিশ্বাস থেকে শুরু করে মহানায়ক উত্তমকুমার সকলেই তাঁর অভাবনীয় অভিনয়সত্তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
তুলসী চক্রবর্তীকে আমরা বড় কোনও চরিত্রে পাইনি কখনও। কিন্তু সেই ছোট চরিত্রের অপূর্ব মাধুর্যে বিমোহিত হত দর্শক। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’, ‘অপুর সংসার’ যেন তার জ্বলন্ত উপমা। সাড়ে চুয়াত্তর-এ অভিনয়দক্ষতায় উত্তম-সুচিত্রাকেও যেন ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ এখানেই বোধহয় তিনি অগ্রগণ্য। ব্যতিক্রম শুধু একটি ছবি যেখানে আমরা মুখ্য চরিত্রে পাই তুলসীবাবুকে; স্বনামধন্য চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘পরশ পাথর’। জহুরি যেমন জহর চেনে, সেরকমই সত্যজিৎ রায় চিনেছিলেন তুলসীবাবুকে। তুলসীবাবুকে না পেলে হয়তো আমরা সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘পরশ পাথর’ ছবিও পেতাম না। চলচ্চিত্রপ্রেমী বাঙালি আজও আক্ষেপ করেন এই ভেবে যে, এরকম ব্যতিক্রমী দু-একটি ছবি আর কেন আমরা পেলাম না; যেখানে তুলসীবাবু থাকতেন মুখ্য চরিত্রে।
মানব জীবনের শিক্ষার প্রথম ধাপই হল বিনয়। তুলসী চক্রবর্তীর কাছ থেকে আমরা সেই শিক্ষাও পেয়েছি। খুবই অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন তিনি৷ সত্যজিৎ রায় ওঁকে শ্যুটিংয়ে যাবার জন্য গাড়ি পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু পরম বিনয়ের সঙ্গে উনি তা ফিরিয়ে দেন। জীবনের শেষ দিকেও উনি ট্রামে-বাসে করে শ্যুটিং-এ যেতেন। ‘পরশ পাথর’ ছবির জন্য সত্যজিৎ রায় যে সাম্মানিক অর্থ ওঁকে দিতে চেয়েছিলেন উনি তা গ্রহণ করেননি। তিনি বলেছিলেন, আপনার থেকে এত পরিমাণ অর্থ নিলে আমাকে আর কেউ কাজে ডাকবে না। চরম দারিদ্র ও অর্থকষ্টে জীবন কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু কখনও ঠোঁটের কোণের হাসিকে মলিন হতে দেননি। সত্যি এ যেন এক রূপকথার চরিত্র; যা আমাদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষা দিয়ে যান।
‘যদি তুলসী চক্রবর্তীর জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হত তাহলে তাঁর অস্কার পাওয়া কেউ আটকাতে পারত না৷’ সত্যজিৎ রায়ের এরূপ মন্তব্যে আমাদের বুঝতে অসুবিধা হত না তুলসীবাবু ঠিক কোন পর্যায়ের অভিনেতা ছিলেন।
মহান এই অভিনেতা ১১ ডিসেম্বর ১৯৬১ সালে পরলোকগমন করেন। এটা খুব ভীষণভাবে সত্য যে, যতদিন মানুষের বিনোদনের জন্য বাংলা চলচ্চিত্রজগৎ থাকবে, তুলসী চক্রবর্তীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে; আগামী প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে, পাবে এক নতুন দিশা।