শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

এখন শহরে যেহেতু আগের মতো বাড়ি বাড়ি গোয়ালা গিয়ে দুধ দেওয়ার চল নেই, তাই অনেকেই প্যাকেট দুধ কেনেন। তবে প্রতিদিন বাইরে দুধ কেনার মতো সময়ও অনেকের থাকে না। সেইজন্য দু-তিন দিনের দুধ একেবারে কিনে রাখতে হয়। সেই দুধ দিয়েই প্রতিদিন কতকিছু তৈরি হয়। ছানা, কেক, মিষ্টি, পায়েস, পিঠে—বাড়িতে এইসব এখন প্যাকেট দুধ দিয়েই তৈরি করা হয়। এছাড়াও, দুধ চা, কফি তো আছেই। তাই একেবারে দু-তিন প্যাকেট দুধ এনে ফ্রিজে রেখে দেন অনেকেই তারপর সেটা পাঁচ-ছ’দিন ধরে ব্যবহার করেন। কিন্তু দুই-তিন দিনের বেশি ফ্রিজে দুধ রাখলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। শুধু দুধ নয়, দুধের তৈরি যেকোনও খাবারই দু-তিন দিনের বেশি ফ্রিজে রাখলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই দুধ যাতে নষ্ট না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আর যদি দুধ নষ্ট হয়েও যায় তবে ফেলে না দিয়ে কীভাবে সেই দুধকে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।

দুধ যাতে ভালো থাকে তার জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে।
দুধ কেনার আগে এক্সপায়ারি ডেট দেখে নিন
যদি আপনি দু-তিন দিনের দুধ একসঙ্গে কেনেন তাহলে অবশ্যই কেনার সময় দুধের প্যাকেটে লেখা এক্সপায়ারি ডেটটা দেখে নেবেন। আর ওই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই দুধটা শেষ করার চেষ্টা করবেন। যাতে সহজেই নষ্ট না হয়ে যেতে পারে তার জন্য দুধ প্রথমেই ফ্রিজে রাখুন। কোনও টাইট কন্টেইনারের মধ্যে দুধ ঢেলে তাতে কয়েকটি আইস কিউব ফেলে দায়ে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখলেও দুধ নষ্ট হবে না। তবে এভাবে বেশি দিন রাখবেন না। সবসময় এক্সপায়ারি ডেটের মধ্যেই দুধ ব্যবহার করে ফেলার চেষ্টা করবেন।

দুধের মধ্যে এক চিমটে নুন ফেলে দিন
এক ডেচকি দুধের মধ্যে এক চিমটে নুন ফেলে দিন। দেখবেন বেশ কয়েকদিন দুধ ফ্রিজে থাকলেও নষ্ট হবে না। দুধ ফোটানোর পরেও নুন দিতে পারেন। আবার কাঁচা দুধেও যদি আপনি এক চিমটে নুন ফেলে দেন, তাহলে দুধ বেশ কয়েকদিন ভালো থাকবে।

ফ্রিজের তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে রাখুন
ফ্রিজের তাপমাত্রার হেরফের হলেও অনেক সময় দুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ফ্রিজের তাপমাত্রা রাখুন ৩২ থেকে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এতে দুধ ভালো থাকবে। দুধ সবসময় ডিপ ফ্রিজে রাখার চেষ্টা করবেন। কখনওই ফ্রিজের দরজায় দুধ রাখবেন না। কারণ, ফ্রিজের দরজায় তাপমাত্রা কম থাকে। তাই দুধ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বেশি।

ফ্যাটহীন মিল্ক কিনতে পারেন
ফ্যাট নেই এমন দুধ অনেকদিন ফ্রিজে রাখা যায়। অর্থাৎ আপনি যদি লো ফ্যাটযুক্ত দুধ কেনেন তাহলে প্রায় সাতদিন ফ্রিজে রাখতে পারবেন। পাস্তুরাইজড দুধ অবশ্য এক মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। ফলে অনেকদিন সংরক্ষণ করা যায়। তবে ফ্যাট আছে এমন দুধ বেশিদিন রেখে দিলে, তা মোটেই ভালো থাকে না।

দুধ কেটে গেলে মিষ্টি, মেয়োনিজ কিংবা চিজ তৈরি করে নিতে পারেন
দুধ যদি কোনও কারণে কেটে যায় তাহলে তা ফেলে না দিয়ে ওই দুধ দিয়ে ছানা তৈরি করে ফেলুন। আর তারপর সেই ছানা দিয়ে তৈরি করুন মিষ্টি, মেয়োনিজ কিংবা চিজ। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওই দুধ দিয়ে তৈরি করতে পারেন ঘি-ও।

গাছের পরিচর্যায় ব্যবহার করুন কেটে যাওয়া দুধ
দুধ কেটে গেলে আপনি গাছ পরিচর্যায় তাকে ব্যবহার করতে পারবেন। যাঁরা বাগান সাজাতে ভালোবাসেন, তাঁরা সকলেই জানেন যে কেটে যাওয়া দুধ সার হিসাবে খুবই ভালো। নষ্ট হয়ে যাওয়া দুধ গাছের গোড়ায় দিলে গাছ খুব তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে।

ত্বকের যত্নে ব্যবহার করুন কেটে যাওয়া দুধ
ত্বকের যত্ন নিতে ব্যবহার করুন কেটে যাওয়া দুধ। এটি ফেসমাস্ক হিসাবে কাজ করে। এই দুধ মুখে লাগিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট মতো রেখে দিন। তারপর শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

Skip to content