শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে

এখন অনেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগেন। কেউ কেউ তো অ্যাজমা থাকার জন্য অল্প বয়স থেকেই ওষুধের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ে। আবার বয়স্কদের ক্ষেত্রে সিওপিডি অর্থাৎ শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা যখন-তখন ফুসফুসকে সংক্রমিত করে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়। শুধু শ্বাসকষ্ট নয়, কখনও কখনও অক্সিজেন স্যাচুরেশনও কমে যায়। অর্থাৎ আট থেকে আশি যে কারওই এই সমস্যা হতে পারে। ইতিমধ্যে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ অল্পবিস্তর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। এই যেমন ধরুন অল্প কাজকর্মেই হাঁপিয়ে ওঠা। একটানা খুব বেশি হাঁটতে না পারা। সিঁড়ি ভাঙতে সমস্যা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। একে পালমোনারি রেহ্যাবিলিটেশনও বলা হয়। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ’ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এই এক্সারসাইজ শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে। যাঁদের শ্বাসকষ্টজনিত কোনও সমস্যা নেই, তাঁরাও চাইলে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করতে পারেন। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়বে। বিশেষ করে ছোটরা যারা অ্যাজমা ভুগছে তাদের নিয়মিত এই এক্সারসাইজ করা জরুরি। এতে যখন-তখন অ্যাজমা অ্যাটাকের হাত থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যাবে। ব্রিদিং এক্সারসাইজের দুটি ভালো গুণ—এক, ফুসফুসের ‘ইয়ার ক্যাপাসিটি’ বাড়াতে সাহায্য করে। দুই, ব্রিদিং মাসলকে শক্তিশালী করে ‘চেস্ট শেপ ব্রিদিং প্যাটার্ন’ ও ‘চেস্ট এক্সপানশন’-কে ঠিকঠাক রাখে।
ব্রিদিং এক্সারসাইজের পাঁচটি সহজ পদ্ধতি
ব্রিদিং এক্সারসাইজ অনেক রকমের হয়। আজ পাঁচটি সহজ পদ্ধতিটি নিয়ে আলোচনা করছি।
পদ্ধতি ১: প্রথমে লম্বা করে শ্বাস নেবেন। তারপর ধীরে ধীরে ছাড়বেন। শ্বাস যত সময় ধরে নেবেন তার ডবল সময় ধরে ছাড়তে হবে। এভাবে দশবার করবেন। এক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়া দুটোই নাক দিয়ে করতে হবে।
পদ্ধতি ২: এক্ষেত্রে শ্বাস ছাড়বেন মুখ দিয়ে। মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যতটা ধীরগতিতে ছাড়া যায়। একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। শ্বাস এমনভাবে ছাড়তে হবে যাতে মোমবাতির শিখা নড়লেও, সেটি যেন না নেভে।
পদ্ধতি ৩: একে ‘অ্যাক্টিভ সাইকেল অফ ব্রিদিং’ বলা হয়। এই পদ্ধতিটিতে যতক্ষণ শ্বাস নেবেন ঠিক ততক্ষণই শ্বাস নেওয়া অবস্থায় ধরে রাখবেন এবং আবার ঠিক ততক্ষণ ধরেই ছাড়বেন। ছাড়ার অবস্থাতেও ততক্ষণ ধরেই থাকবেন। এইভাবে দশবার করতে হবে। উদাহরণ: এক্ষেত্রে ৫ সেকেন্ড শ্বাস নিলে ৫ সেকেন্ড সময় পর্যন্ত শ্বাস ধরে রেখে আবার ৫ সেকেন্ড ধরে ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে। ছাড়ার পর এভাবে ৫ সেকেন্ড থেকে আবার শ্বাস নেওয়া শুরু করবেন।
পদ্ধতি ৪: এক্ষেত্রে হাত দুটি মাথার ওপর তুলতে তুলতে শ্বাস নেবেন, আবার নামাতে নামাতে ছাড়বেন। খুব আস্তে এভাবে দশবার করতে হবে।
পদ্ধতি ৫: হাত দুটো কাঁধেৱ লেভেলে রেখে পাশে নিয়ে যেতে যেতে শ্বাস নিতে হবে। আবার জোড় করতে করতে ছাড়তে হবে।
সমস্যা এড়াতে যাঁরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাঁরা তো করবেনই, পাশাপাশি অন্যরাও এগুলি করতে পারেন ফুসফুস ঠিক রাখতে। অস্ত্রোপচারের পর দুর্বলতা কাটাতেও এটি বেশ কার্যকরী। এছাড়াও শাঁখ বাজানো, বেলুন ফোলানো এসবও ব্রিদিং এক্সারসাইজের মধ্যে পড়ে।

যোগাযোগ: ৯০৫১৮৪৩৫৩১

 


Skip to content