ছবি সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
নিজের ঘরেও অনেক মানুষ পর
কখন কীসের টানে মানুষ পায় যে খুঁজে বাঁচার মানে
ঝাপসা চোখে দেখা এ শহর।’
আমরা তখন সদ্য পা রেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠে। নতুন মানুষ, নতুন জীবন, তার সঙ্গে সঙ্গে আরম্ভ অন্যরকম একটা জার্নির, অন্যরকম এক লড়াই। ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’ তার কয়েক বছর আগে মুক্তি পেয়েছে। বাংলা ছবির দর্শক ধীরে ধীরে নড়চড়ে বসছেন, বদলাচ্ছে আমাদের ভাবনাচিন্তার আপাদমস্তকও। এই ছবি মুক্তি পাওয়ার অনেক অগেই অঞ্জন দত্ত লিখেছিলেন এই গানের কথা। সেই কথা হঠাৎ করে ভীষণরকম সত্যি হয়ে উঠতে আরম্ভ করে যেন ঠিক উনিশ-কুড়ির দরজায় যখন আমরা দাঁড়িয়ে সেই সময়ে। ক্লাস শেষে মাঝেমধ্যেই গানের আড্ডা বসত, বিভাগের আনাচেকানাচে তখন সন্ধে নামছে, আলো-আঁধারের মাঝে একা দাঁড়িয়ে থাকা বিভাগের অফিসে কাজ করতে করতে অনেকেই শুনতে পেতেন ভেসে আসা অনেকগুলো গানের টুকরো টুকরো কোলাজ, যে কোলাজগুলোর মধ্যে এই চারটে লাইন ছিল বড় বেশি জীবন্ত। মফস্বল থেকে কলকাতায় পড়তে আসা এক শ্যামলা রঙের অষ্টাদশী সুন্দরী ছিল আমার আত্মার শরিক, অমন সৌন্দর্য আজ ইস্তক খুব কমই দেখেছি। মনে আছে একদিন ক্লাস শেষে অনেক্ষণ আটকে রেখেছিল আমাকে সে, কিছুতেই বাড়ি ফিরতে দিচ্ছিল না অথচ বিশেষ কোনও কথাও যে বলছিল এমনটাও না। বিকেল নিঃঝুম হয়ে এলে পরে গানটা ধরল ও এক নম্বর ঘরের বারান্দায় বসে। গাইতে গাইতে ঠিক নির্দিষ্ট এই জায়গাটায় এসে গলা ধরে এল ওর। সশব্দে কেঁদে উঠল আমার ‘শ্যামলিকা’। বাধা দিলাম না, কিছুক্ষণ পর কান্না আক্রান্ত কণ্ঠে সে বলল, ‘সত্যিই নিজের ঘর বলে কিচ্ছু হয় না নারে?’ আমি কিছু না বলে উঠে চলে এসেছিলাম, প্রতিদিন গেটের সামনে দুটো বাচ্চা-ছেলেমেয়ে ধূপ কেনার জন্য ধূপ বিক্রি করতে আসত। ভীষণ বিরক্ত করত কেনার জন্য আর আমরা প্রতিদিন বলতাম, ‘আমরা পুজো করি না, যা পালা।’ সেদিনও ছেলেমেয়েদুটো এল, কিন্তু একটুও ঘ্যানঘ্যান করল না, নির্মিমেষ দৃষ্টিতে মুখের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে উলটোদিকে ফিরে গেল গুটিগুটি পায়ে। শিশুরা বোধহয় বুঝতে পারে যে কোন মানুষ সত্যিই পলাতক, তার কাছ থেকে পালিয়ে যায় ওরাও বা তাদেরকে বারবার পালানোর সুযোগ করে দেয়।
আরেকদিন, আরও কিছু বছর পরে বিভাগীয় নবীনবরণের অনুষ্ঠান চলছে। আমাদের সহপাঠীরাই কোরাসে গাইছে ‘একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে থাকবে না সাথে কোনও ছাতা’
আমি কোণে দাঁড়িয়ে শুনছি। ওরা গাইছে, ‘একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে আমরা ধরা পড়ে যাব দেখো ঠিক ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ।’
আচমকা অনুভব করলাম ভিড়ের মধ্যে খুব কাছে সরে এসেছে যেন কেউ। একটা কণ্ঠস্বর অনুভব করা যায় কেবল৷ ‘তোর প্রেমিকের কাছে ফিরে যা। পথ ভুল করে এদিকে চলে আসিস না কখনও, এলে সিঁদুরের টিপ ধুয়ে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কিন্তু আমার সাধ্যের বাইরে।’ মুখ ফিরিয়ে খুঁজলাম, ভিড়ের মধ্যে দুটো চোখ নজরে পড়ল কেবল। কিছু না বলে বেরিয়ে এলাম। পালিয়ে এলাম। তার এক বছর পর প্রেম ভেঙে গেল যেদিন সেদিন ওই একই জায়গায় ফিরে এসে দেখলাম ক্লাসের সবাই সেদিনের সেই সহপাঠী বন্ধুটির নতুন প্রেমিকাকে তার পাশে বসিয়ে তার প্রেমজীবনের সূচনালগ্ন উদযাপন করছে,
‘তুমি না থাকলে স্বপ্নের রং হয়ে যেত খয়েরি
বনবন করে দুনিয়াটা এই পারত না ঘুরতে
তুমি না থাকলে রবীন্দ্রনাথ কালির দোয়াত মাথায় ঠুকে হতো কুপোকাত
রাপা রাম্পা পা…’
আমাকে ওরা ধরল নাচ করার জন্য। আমি নাচলাম, ওরা সুর ধরল। অনেক দূরে ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসে প্রিয় অধ্যাপকের গলা:
‘বহু দিন পরে বঁধুয়া এলে
দেখা না হইত পরান গেলে
এতেক সহিল অবলা বলে
ফাটিয়া যাইত পাষাণ হলে
দুঃখিনীর দিন দুঃখেতে গেল
মথুরা নগরে ছিলে তো ভাল
এইসব দুখ কিছু না গনি
তোমার কুশলে কুশল মানি।’
তোমার কুশলে কুশল মানি, তোমার কুশলে কুশল মানি…অভিমানী হয়েই রাধা মানবী থেকে এক তুচ্ছ হ্লাদিনী শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে নিজের সেল্ফকে নিজের আত্মকে প্রায় জলাঞ্জলি দিয়ে দিলেন যেন, রাধা নামক একটা রক্তমাংস যেন উধাও হয়ে গেল, যারা রাধাকে ভালোবেসেছিল তার আর কোনওদিন এটা অনুভব করার পর গাইতে পারেনি, ‘ব্রজরমণি গণমুকুটমণি, সুন্দরী রাধে আওরে বনি৷’ এমন ব্যাখ্যা ক্লাসের বাইরে অসম্ভব! কিন্তু ক্লাসের মধ্যে স্যার এমন অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা থেকে বঞ্চিত করতেন না আমাদের। সেদিনও ব্যাখ্যা চলছে, নৃত্যরতা আমি, সামনে উদযাপন চলছে, আর সামনের বারান্দায় একটা শালিখ একলা বসে ভিজছে, ভাদ্র মাসে অকাল বর্ষা নেমেছে। সেদিন থেকে আমি পালানো বন্ধ করে দিলাম। সবাই চলে গেলে ভেজা বারান্দায় কানে হেডফোন দিয়ে বারবার শুনলাম:
‘তুমি আসবে বলে তাই
আর একটা করে দিন চলে যায়
সুদিন আসবে বলে ওরা আগুন জ্বালায়
আর হাজার হাজার মানুষ মরে যায়।‘
শুনলাম, একবার, দুবার বারবার। ভালো করে শুনলে বৃষ্টির শব্দে কথা বোনা যায়, শেষপ্রহরের বৃষ্টিতে যেন সেদিন কথা বুনেছিল কেউ, এমনতরো কিছু কথা যার প্রকাশ নেই কোনও, অপ্রকাশের আড়ালে বসে শুনলে শোনা যায় যেন কেউ বলছে কিংবা আমিই বলছি, ‘কিন্তু তুমি বাইরে নেই, অন্তরে মেঘ করে ভারি ব্যাপক বৃষ্টি আমার বুকের মধ্যে ঝরে।’
তারপর কতগুলো বছর কেটে গেছে। প্রেমিকের হৃদয়ে প্রাক্তনের প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করতে পারি, তাকে ছুঁয়ে দেখি, না পালিয়ে ‘ওদের পাশপাশি দেখি, মনে মনে ‘স্বীকার করি দুজনকেই মানিয়েছিল ভালো। মেয়েটির আলো করা চোখের দিকে তাকিয়ে যেন শুনতে পাই, ‘মনখারাপের বিকেলে কেউ গলা সাধে না/ কার্নিসে আর শালিখ পাখি বাসা বাঁধে না/ কান্না পেলে কেন আমি আর কাঁদি না! ছেলেবেলার বসতবাড়ি ইট কাঠ সিমেন্টে পরিণত হয়ে যায়, সেখানে গড়ে ওঠে বহুতল আবাস, সেদিনের সেই বান্ধবীটির কাঁদতে কাঁদতে বলা কথাটি মনে পড়ে যায়৷ ‘নিজের ঘর বলে সত্যিই কিছু হয় না নারে?’ আজ তার ঘর হয়েছে, আমিও পালানো ভুলেছি কিন্তু চারটে দেওয়ালের মাঝে ঘর খোঁজা উচিত কি না সে উত্তর আমরা এখনও খুঁজছি।
আমাদের যৌবন, যৌবনের অবমাননা, অভিমান অভিমানহীনতা, সমস্ত দুঃখের উদযাপন দুঃখ ভোলার উদযাপন ঘিরে থেকেছে তার সৃষ্টি। আমরা বড় হয়ে গেছি, আমরা কষ্ট মানিয়ে নিতে ও মেনে নিতে শিখেছি যত তিনি তত বেশি নতুন হয়ে উঠেছেন আমাদের কাছে। আজ তার জন্মদিন। অঞ্জন দত্তের জন্মদিন মানেই তার বয়োবৃদ্ধির উদযাপন নয় বরং তার আরও বেশি করে উত্তরোত্তর যুবক হয়ে ওঠার একটা পরিক্রমাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা উল্লাসের আবহ, আহ্লাদের আবহ। তার জন্মদিনে এর থেকে বেশি কিছু দেওয়ার হয়তো ছিল না, অভিজ্ঞতার অবেগ ছাড়া আর কী দিয়েই বা শুভেচ্ছা জানানো যায় তাকে। আজ তার জন্মদিন, ‘সাদা কালো এই জঞ্জালে ভরা মিথ্যে কথা শহরে’ তাকে কেবল একটাই খাঁটি সত্য বচন উপহারস্বরূপ দেওয়া যায়, সেটা হল: ‘আপনি থাকছেন স্যার!’ আমাদের হারিয়ে যাওয়ার দিনগুলো সম্বল করে, কঠিন হলেও যেটুকু কেবল রেখে যাওয়া যায় আপনার জন্য সেটুকুই রাখা থাক না হয়, আজ বলা যাক সাহস করে সেই কঠিন কথা: ‘তোমার জন্মদিনে কী আর দেব শুধু এই কথাটুকু ছাড়া যে কাল থেকে রোজই আমার জন্মদিন।’
আরেকদিন, আরও কিছু বছর পরে বিভাগীয় নবীনবরণের অনুষ্ঠান চলছে। আমাদের সহপাঠীরাই কোরাসে গাইছে ‘একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে থাকবে না সাথে কোনও ছাতা’
আমি কোণে দাঁড়িয়ে শুনছি। ওরা গাইছে, ‘একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে আমরা ধরা পড়ে যাব দেখো ঠিক ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ।’
আচমকা অনুভব করলাম ভিড়ের মধ্যে খুব কাছে সরে এসেছে যেন কেউ। একটা কণ্ঠস্বর অনুভব করা যায় কেবল৷ ‘তোর প্রেমিকের কাছে ফিরে যা। পথ ভুল করে এদিকে চলে আসিস না কখনও, এলে সিঁদুরের টিপ ধুয়ে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কিন্তু আমার সাধ্যের বাইরে।’ মুখ ফিরিয়ে খুঁজলাম, ভিড়ের মধ্যে দুটো চোখ নজরে পড়ল কেবল। কিছু না বলে বেরিয়ে এলাম। পালিয়ে এলাম। তার এক বছর পর প্রেম ভেঙে গেল যেদিন সেদিন ওই একই জায়গায় ফিরে এসে দেখলাম ক্লাসের সবাই সেদিনের সেই সহপাঠী বন্ধুটির নতুন প্রেমিকাকে তার পাশে বসিয়ে তার প্রেমজীবনের সূচনালগ্ন উদযাপন করছে,
‘তুমি না থাকলে স্বপ্নের রং হয়ে যেত খয়েরি
বনবন করে দুনিয়াটা এই পারত না ঘুরতে
তুমি না থাকলে রবীন্দ্রনাথ কালির দোয়াত মাথায় ঠুকে হতো কুপোকাত
রাপা রাম্পা পা…’
আমাকে ওরা ধরল নাচ করার জন্য। আমি নাচলাম, ওরা সুর ধরল। অনেক দূরে ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসে প্রিয় অধ্যাপকের গলা:
দেখা না হইত পরান গেলে
এতেক সহিল অবলা বলে
ফাটিয়া যাইত পাষাণ হলে
দুঃখিনীর দিন দুঃখেতে গেল
মথুরা নগরে ছিলে তো ভাল
এইসব দুখ কিছু না গনি
তোমার কুশলে কুশল মানি।’
তোমার কুশলে কুশল মানি, তোমার কুশলে কুশল মানি…অভিমানী হয়েই রাধা মানবী থেকে এক তুচ্ছ হ্লাদিনী শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে নিজের সেল্ফকে নিজের আত্মকে প্রায় জলাঞ্জলি দিয়ে দিলেন যেন, রাধা নামক একটা রক্তমাংস যেন উধাও হয়ে গেল, যারা রাধাকে ভালোবেসেছিল তার আর কোনওদিন এটা অনুভব করার পর গাইতে পারেনি, ‘ব্রজরমণি গণমুকুটমণি, সুন্দরী রাধে আওরে বনি৷’ এমন ব্যাখ্যা ক্লাসের বাইরে অসম্ভব! কিন্তু ক্লাসের মধ্যে স্যার এমন অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা থেকে বঞ্চিত করতেন না আমাদের। সেদিনও ব্যাখ্যা চলছে, নৃত্যরতা আমি, সামনে উদযাপন চলছে, আর সামনের বারান্দায় একটা শালিখ একলা বসে ভিজছে, ভাদ্র মাসে অকাল বর্ষা নেমেছে। সেদিন থেকে আমি পালানো বন্ধ করে দিলাম। সবাই চলে গেলে ভেজা বারান্দায় কানে হেডফোন দিয়ে বারবার শুনলাম:
আর একটা করে দিন চলে যায়
সুদিন আসবে বলে ওরা আগুন জ্বালায়
আর হাজার হাজার মানুষ মরে যায়।‘
শুনলাম, একবার, দুবার বারবার। ভালো করে শুনলে বৃষ্টির শব্দে কথা বোনা যায়, শেষপ্রহরের বৃষ্টিতে যেন সেদিন কথা বুনেছিল কেউ, এমনতরো কিছু কথা যার প্রকাশ নেই কোনও, অপ্রকাশের আড়ালে বসে শুনলে শোনা যায় যেন কেউ বলছে কিংবা আমিই বলছি, ‘কিন্তু তুমি বাইরে নেই, অন্তরে মেঘ করে ভারি ব্যাপক বৃষ্টি আমার বুকের মধ্যে ঝরে।’
তারপর কতগুলো বছর কেটে গেছে। প্রেমিকের হৃদয়ে প্রাক্তনের প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করতে পারি, তাকে ছুঁয়ে দেখি, না পালিয়ে ‘ওদের পাশপাশি দেখি, মনে মনে ‘স্বীকার করি দুজনকেই মানিয়েছিল ভালো। মেয়েটির আলো করা চোখের দিকে তাকিয়ে যেন শুনতে পাই, ‘মনখারাপের বিকেলে কেউ গলা সাধে না/ কার্নিসে আর শালিখ পাখি বাসা বাঁধে না/ কান্না পেলে কেন আমি আর কাঁদি না! ছেলেবেলার বসতবাড়ি ইট কাঠ সিমেন্টে পরিণত হয়ে যায়, সেখানে গড়ে ওঠে বহুতল আবাস, সেদিনের সেই বান্ধবীটির কাঁদতে কাঁদতে বলা কথাটি মনে পড়ে যায়৷ ‘নিজের ঘর বলে সত্যিই কিছু হয় না নারে?’ আজ তার ঘর হয়েছে, আমিও পালানো ভুলেছি কিন্তু চারটে দেওয়ালের মাঝে ঘর খোঁজা উচিত কি না সে উত্তর আমরা এখনও খুঁজছি।
আমাদের যৌবন, যৌবনের অবমাননা, অভিমান অভিমানহীনতা, সমস্ত দুঃখের উদযাপন দুঃখ ভোলার উদযাপন ঘিরে থেকেছে তার সৃষ্টি। আমরা বড় হয়ে গেছি, আমরা কষ্ট মানিয়ে নিতে ও মেনে নিতে শিখেছি যত তিনি তত বেশি নতুন হয়ে উঠেছেন আমাদের কাছে। আজ তার জন্মদিন। অঞ্জন দত্তের জন্মদিন মানেই তার বয়োবৃদ্ধির উদযাপন নয় বরং তার আরও বেশি করে উত্তরোত্তর যুবক হয়ে ওঠার একটা পরিক্রমাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা উল্লাসের আবহ, আহ্লাদের আবহ। তার জন্মদিনে এর থেকে বেশি কিছু দেওয়ার হয়তো ছিল না, অভিজ্ঞতার অবেগ ছাড়া আর কী দিয়েই বা শুভেচ্ছা জানানো যায় তাকে। আজ তার জন্মদিন, ‘সাদা কালো এই জঞ্জালে ভরা মিথ্যে কথা শহরে’ তাকে কেবল একটাই খাঁটি সত্য বচন উপহারস্বরূপ দেওয়া যায়, সেটা হল: ‘আপনি থাকছেন স্যার!’ আমাদের হারিয়ে যাওয়ার দিনগুলো সম্বল করে, কঠিন হলেও যেটুকু কেবল রেখে যাওয়া যায় আপনার জন্য সেটুকুই রাখা থাক না হয়, আজ বলা যাক সাহস করে সেই কঠিন কথা: ‘তোমার জন্মদিনে কী আর দেব শুধু এই কথাটুকু ছাড়া যে কাল থেকে রোজই আমার জন্মদিন।’