সম্প্রতি কয়েকজন মাছচাষির সঙ্গে কথা হচ্ছিল। এই মরশুমে মাছচাষ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা চলছিল। এ বিষয়ে তাঁদের পরিকল্পনা কী? এতেই আমার আগ্রহ ছিল। আমাদের রাজ্যে মাছচাষের কর্মকাণ্ড শুরু হয় ফাল্গুনের গোড়াতেই। এ বারে শীত কিছুটা প্রলম্বিত হওয়ায় মাছচাষিরা উদ্যোগ নিয়েছেন খানিকটা দেরিতে।
মাছচাষের অন্যতম উপকরণ যা বীজ বা ডিমপোনা নামে পরিচিত তার যোগান দেন কিছু মানুষ। যাঁরা বাঁকে করে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে পুকুরপাড়ে এই ডিমপোনা এসে দিয়ে যান। কত পরিমাণ ডিমপোনা ছাড়তে হবে, তাঁর পরিমাপই বা কীভাবে করা হবে, এ সব বিষয়েও অনেকক্ষেত্রে তাঁরাই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন:
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৯৬: পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ‘মিল্ক ফিশ’ কখনও চেখে দেখেছেন?
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৫৪: রাজনীতিতে, যুগান্তরেও স্বার্থচিন্তার আবহমান প্রভাব
মাছের পরিমাপের জন্য পিতলের বাটি পাওয়া যায়। বাটিগুলো বিভিন্ন মাপের হয়ে থাকে। ১০০মিলিলিটারের বাটিতে ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ ডিমপোনা ধরে। সাধারণত একটি ডিমপোনার আনুমানিক দৈর্ঘ্য হয় ৫মিমি। কখনও এ রকমও দেখা গিয়েছে, ডিমপোনা সরবরাহকারীর বাটির আকারের হেরফের হয়। যেহেতু বাটির আকৃতি বা আয়তন একটু ছোট হলেই ডিমপোনার সংখ্যা কমে যাবে, আর এতে তিনি বেশি লাভের মুখ দেখবেন। এটিই কারচুপির মূল কারণ।
অভিজ্ঞ মাছচাষি যাঁরা, তাঁরা একটি সহজ উপায় বের করেছেন। পুরোনো দশটাকার নোটকে ছবিতে যেমন দেখানো হয়েছে সেভাবে বাটির মধ্যে বসানো হলে, নোটের দুই প্রান্ত বাটি বরাবর থাকবে, আর তখনই বোঝা যাবে বাটির মাপটি ঠিক আছে। যে কেউ এ ভাবে দেখে নিতে পারলে, ঠকে যাওয়ার ভয় থাকবে না। এছাড়া আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পুকুরের মাপ বিষয়ে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাঁদের জ্ঞাতার্থে মাপজোকের একটি হিসেব দেওয়া হল।