শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

আমাদের শরীরে রোগের কোনও শেষ নেই। একটা না একটা লেগেই আছে। তবে প্রকৃতি সেই রোগ মুক্তিরও ব্যবস্থা করে রেখেছে। প্রাচীনকাল থেকে ওষুধ হিসেবে কালো জিরে ব্যবহার করা হয়। অনেকেই হয়তো জানেন না, কালো জিরে রোগমুক্তির জন্য অন্যতম একটা উপাদান।

কালো জিরে ক্যানসার থেকে শুরু করে অ্যাসিড কমানো, ইউরিনের সমস্যা খুব সহজেই দূর করতে পারে। এতে আছে বেশ কিছু শক্তিশালী এবং রোগ প্রতিরোধক উপাদান। কালো জিরের থেকে পাওয়া যায় ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং প্রায় ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল। এছাড়াও ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে এতে। প্রতি গ্রাম কালো জিরায় থাকা পুষ্টিকর উপাদানগুলি হল—প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-বি ১১৫ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালশিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম, কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম, জিঙ্ক ৬০ মাইক্রোগ্রাম, ফোলাসিন ৬১০ আইউ প্রভৃতি।
কালো জিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আরও আছে—নাইজেলোন, থাইমোকিনোন ও তেল। এই তেলে রয়েছে, লিনোলিক অ্যাসিড, অলিক অ্যাসিড, ফসফেট, আয়রন, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি২, নিয়াসিনও, ভিটামিন-সি ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান।
 

কালো জিরের জাদু

 

ডায়েবেটিস প্রতিরোধে

ডায়েবিটিস রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয় কালো জিরে। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ তেলের সঙ্গে কালো জিরে মিশিয়ে খেলে ডায়েবিটিস নিরাময় করা সম্ভব।
 

ওজন কমাতে

ডায়েটে নিয়মিত কালো জিরে রাখলে উপকার মিলবে। যে কোনও তরকারির সঙ্গে কালো জিরে খেলে সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। মধু ও জলের সঙ্গে কালো জিরে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে ওটমিল ও টক দইয়ের সঙ্গে কালোজিরা খেলে আরও ভালো উপকার পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: সর্ষের তেল না অলিভ অয়েল? কোন তেলে রান্না করা বেশি উপকারী

মুভি রিভিউ: অরবিন্দনের প্রথম ছবি ‘উত্তরায়ণম’ স্বাধীনতার আগে ও পরের মূল্যবোধের গল্প

 

ব্রণর দাগ দূর করতে

লেবুর রস ও কালো জিরের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে মুখের ব্রণ এবং দাগ দুটিই দূর হবে। এছাড়া লেবুর রস ও কালো জিরের তেল মুখে লাগিয়েও ব্রণ দূর করা যায়।
 

ব্যথা কমাতে

সরিষার তেলের সঙ্গে কালো জিরের তেল মিশিয়ে হাঁটু বা অন্যান্য জয়েন্টে মালিশ করলে হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করা সম্ভব।

আরও পড়ুন:

এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩২: ইতিহাস ও বিজ্ঞানের আলোয় গঙ্গাসাগর মেলা

দশভুজা, সরস্বতীর লীলাকমল, পর্ব-৭: আশাপূর্ণা দেবী—স্বপ্ন আর সত্যির লেখক!

 

সর্দি-কাশি দূর করতে

কাশির সময় আরাম পেতে এক চা চামচ কালো জিরের তেলের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। অথবা এককাপ লাল চায়ের সঙ্গে আধা চা চামচ কালো জিরের তেল মিশিয়ে খেলেও উপকার মিলবে। দিনের মধ্যে তিনবার এ ভাবে খেলে সর্দি-কাশি রোগ দূর হয়ে যাবে। পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালো জিরে বেঁধে শুঁকলে শ্লেষ্মা তরল হয়। এছাড়া এক চা চামচ কালো জিরের সঙ্গে তিন চা চামচ মধু ও দুই চা চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশি কমে যায়।

আরও পড়ুন:

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৭: পলায়নপর পঞ্চপাণ্ডব-ভীমসেনের গতিময়তায় কোন মহাভারতীয় দিগদর্শন?

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩০: গিরীশচন্দ্রের মা সারদা

 

হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগ প্রতিরোধ

হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ক্ষেত্রে কালো জিরে বেশ উপকারী। নিয়মিত কালো জিরের ভর্তা খেলে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট দ্রুত উপশম হয়। শুধু কালো জিরে খেলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দূর হয়ে যায়।
 

কালো জিরা নিয়ে সতর্কতা

কালো জিরে নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অতিরিক্ত খেলে বা ব্যবহার করলে হিতের বিপরীত হতে পারে। কালো জিরের তেল গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করা যাবে না। অতিরিক্ত কালো জিরে খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। অনেকেই কালো জিরে হজম করতে পারেন না। তবে অভ্যাস করলে ভালো।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content