অমিতাভ ও পঞ্চম।
মুক্তি পায় ‘পুকার’। অমিতাভ বচ্চন, রণধীর কাপুর এবং জিনাত আমন অভিনীত এই ছবির গানগুলি খুব স্বাভাবিক ভাবেই হয় ওঠে ‘সুপার হিট’। লেখক গুলশান বাওয়ার সঙ্গে এতদিনে প্রচুর কাজ করেছেন ফেলেছেন পঞ্চম। ফলস্বরূপ, তাঁদের বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া এখন তুঙ্গে। তাই এই ছবির গানগুলিকে সুরে সাজাতে পঞ্চমের বিন্দুমাত্র অসুবিধের সম্মুখীন হতে হয়নি। লেখকের সঙ্গে বসে গানগুলিতে চোখ বুলিয়ে নিয়ে নিজের কাজ শুরু করে দেন তিনি।
অমিতাভের লিপে স্বকণ্ঠে গেয়ে ওঠেন সেই বিখ্যাত গান ‘সমুন্দর ম্যায় নাহাকে আউর ভি নমকিন হো গেয়ি হো’। কোনও একটি সাক্ষাৎকারে পঞ্চম এক অজানা তথ্য জানিয়েছিলেন। অমিতাভ বচ্চন নাকি তাঁর লিপে একটিবারের জন্য হলেও পঞ্চমকে চেয়েছিলেন। আরডি-র কণ্ঠের টেক্সচার খুব পছন্দ বিগ বি-র। তাই তাঁর এই আবদারটিকে সম্মান জানিয়ে তাঁর সেই আশা পূরণ করেছিলেন পঞ্চম। গানটি আজকের দিনেও যথেষ্টই জনপ্রিয়। একের পর এক ভেসে আসা ঢেউয়ের মধ্যে মিশে যাওয়া নায়িকা জিনাত আমানের উদ্দেশ্যে নায়ক অমিতাভ নাচতে নাচতে গেয়ে চলেছেন মজার এই প্রেমের গানটি। নেপথ্যে পঞ্চমের সুর এবং কণ্ঠ।
আরও পড়ুন:
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৪৫: সন্ধ্যাবেলায় তুমি আমি বসে আছি দুজনে…
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৫৯: হারিয়ে যাওয়ার ‘জীবন তৃষ্ণা’
অগ্রজসম কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চম গেয়ে ফেলেন ‘জানে জিগর দুনিয়া ম্যায় তু সবসে হাসিন হ্যায়’ গানটি। খেয়াল করুন, গানটিতে রণধীর কাপুর কিন্তু লিপ দিচ্ছেন কিশোরকে, আর অমিতাভ পঞ্চমকে। অমিতাভের আবদার কি ফেলা যায়? বাদ্যযন্ত্রগুলির আড়ম্বরের মাঝে কিশোর-পঞ্চম এর কণ্ঠ যেন দুটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। অসাধারণ।
‘বাচকে রেহনা রে বাবা বাচকে রেহনা রে’ গানটি পঞ্চমের অগুন্তি অনবদ্য সৃষ্টির মধ্যে একটি বলে গণ্য করা হয়। গানের দৃশ্যে মূলত লিপ দিয়েছেন চার জন। রণধীর কাপুর কিশোরকে, অমিতাভ পঞ্চমকে এবং আশা ভোঁসলে একাই লিপ দিয়েছেন জিনাত আমান এবং টিনা মুনিমকে। মেলোডি এবং অর্কেস্ট্রেশন দুটিই তুলনাহীন। প্রেলুডটি শুনলেই নড়েচড়ে বসতে হয়। আর গানটি শুরু হলে তো কথাই নেই। সুর এবং ছন্দের বারিধারায় কখন যে শিক্ত হয়ে পড়ি আমরা সে আর খেয়ালই থাকে না। গানের শেষ পর্বে অমিতাভের লিপে কিন্তু কিশোরের নয়, এ বারেও পঞ্চমের প্রবেশ ঘটে। গায়ক-নায়কের এক অভাবনীয় তালমিল পরিলক্ষিত হয়। গানের একদম শেষে ছন্দটি আপ টেম্পো হতে হতে একসময় থেমে যায়। মনে হয় বুঝি কোনও কালবৈশাখী হঠাৎ থেমে গেল। প্রসংশার ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না।
‘বাচকে রেহনা রে বাবা বাচকে রেহনা রে’ গানটি পঞ্চমের অগুন্তি অনবদ্য সৃষ্টির মধ্যে একটি বলে গণ্য করা হয়। গানের দৃশ্যে মূলত লিপ দিয়েছেন চার জন। রণধীর কাপুর কিশোরকে, অমিতাভ পঞ্চমকে এবং আশা ভোঁসলে একাই লিপ দিয়েছেন জিনাত আমান এবং টিনা মুনিমকে। মেলোডি এবং অর্কেস্ট্রেশন দুটিই তুলনাহীন। প্রেলুডটি শুনলেই নড়েচড়ে বসতে হয়। আর গানটি শুরু হলে তো কথাই নেই। সুর এবং ছন্দের বারিধারায় কখন যে শিক্ত হয়ে পড়ি আমরা সে আর খেয়ালই থাকে না। গানের শেষ পর্বে অমিতাভের লিপে কিন্তু কিশোরের নয়, এ বারেও পঞ্চমের প্রবেশ ঘটে। গায়ক-নায়কের এক অভাবনীয় তালমিল পরিলক্ষিত হয়। গানের একদম শেষে ছন্দটি আপ টেম্পো হতে হতে একসময় থেমে যায়। মনে হয় বুঝি কোনও কালবৈশাখী হঠাৎ থেমে গেল। প্রসংশার ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন:
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৩১: সুন্দরবনের ঐতিহ্য গঙ্গাসাগরমেলা ও কপিল মুনির আশ্রম
বরসে গা সাওন: স্মরণে উস্তাদ রাশিদ খান
‘তু মাইকে মত যাইও’-র মতো একটি মজার গান স্বয়ং অমিতাভকেই গাইবার অনুরোধ করেন পঞ্চম। মাঝের একটি অংশে সংক্ষিপ্তভাবে পঞ্চমকণ্ঠ শোনা যায় ঠিকই, কিন্তু বচ্চন সাহেবকে কুর্নিশ জানাতে হয় অসাধারণ ভাবে গানটি উপস্থাপিত করার জন্য। এই ক্ষেত্রে গায়ক-নায়ক একই মানুষ। আর তাই অভিনয় এবং গান, দুই ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণভাবে সফল অমিতাভ।
আশা ভোঁসলের গাওয়া ‘ম্যায় তেরে লিয়ে’ গানটি কানে এলেই বলে দেওয়া যায় এর সুরকার কে হতে পারে। বঙ্গ থেকে উৎপত্তি হওয়া আরডি-র সিগনেচার রিদম, ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে চলা বাস গিটার, ছন্দের পরিবর্তন, ভায়োলিনের ফিলার, খালি বোতলে ফুঁ দিয়ে সৃষ্টি করা অদ্ভুত একটি শব্দ, সব কিছুই পঞ্চমের দিকেই ইঙ্গিত করে। সর্বোপরি আশা ভোঁসলের কণ্ঠের সম্মোহনী শক্তি, যেটির আকর্ষণ উপেক্ষা করা কোনওমতেই সহজ কাজ নয়।
আশা ভোঁসলের গাওয়া ‘ম্যায় তেরে লিয়ে’ গানটি কানে এলেই বলে দেওয়া যায় এর সুরকার কে হতে পারে। বঙ্গ থেকে উৎপত্তি হওয়া আরডি-র সিগনেচার রিদম, ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে চলা বাস গিটার, ছন্দের পরিবর্তন, ভায়োলিনের ফিলার, খালি বোতলে ফুঁ দিয়ে সৃষ্টি করা অদ্ভুত একটি শব্দ, সব কিছুই পঞ্চমের দিকেই ইঙ্গিত করে। সর্বোপরি আশা ভোঁসলের কণ্ঠের সম্মোহনী শক্তি, যেটির আকর্ষণ উপেক্ষা করা কোনওমতেই সহজ কাজ নয়।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-১৭: শোকস্তব্ধ কবি সারারাত ছাদে পায়চারি করেছিলেন
মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-৪৫: প্রতিযোগিতা সর্বদা স্বাস্থ্যকর নয়, কদ্রুবিনতার শত্রুতায় কি তারই ইঙ্গিত?
কোনও তুফানি আমেজে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে চান? তাহলে শুনতে হবে পঞ্চম আশার দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া ‘মারেঙ্গে ইয়া মর জায়েঙ্গে’ গানটি। প্রেলুডে তুফান, রিদমে তুফান, মেলোডিতে তুফান, ফিলারে তুফান, ইন্টারলুডে তুফান এবং গায়ক-গায়িকার কণ্ঠে তুফান। সর্বাঙ্গসুন্দর একটি গান। বারবার শুনতে মন চায়। বলা বাহুল্য, এই গানেও পঞ্চম-কণ্ঠে ঠোঁট মিলিয়েছেন স্বনামধন্য অমিতাভ বচ্চন।
বস্তুত, অমিতাভ কিন্তু পঞ্চমের অনেক গুণমুগ্ধদের মধ্যে একজন। অভিনয় তাঁর পেশা হলেই বা কি? পঞ্চম সুরারোপিত যেকোনও গানেরই অনুরাগী তিনি। পঞ্চমকে কাজের সূত্রে বহুবার খুব কাছ থেকে দেখেছেন অমিতাভ। আরডি-র সুর করা গানে বহুবার লিপ দিয়েছেন। অনেক সময় রিহার্সালেও উপস্থিত থেকেছেন। ধীরে ধীরে পঞ্চমের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জন্মেছে তাঁর মনে। ফলত, আরডি বর্মণের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলি টুকরো টুকরো স্মৃতির আকারে আজও তাঁর মনের মণিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে থেকে গিয়েছে।—চলবে।
বস্তুত, অমিতাভ কিন্তু পঞ্চমের অনেক গুণমুগ্ধদের মধ্যে একজন। অভিনয় তাঁর পেশা হলেই বা কি? পঞ্চম সুরারোপিত যেকোনও গানেরই অনুরাগী তিনি। পঞ্চমকে কাজের সূত্রে বহুবার খুব কাছ থেকে দেখেছেন অমিতাভ। আরডি-র সুর করা গানে বহুবার লিপ দিয়েছেন। অনেক সময় রিহার্সালেও উপস্থিত থেকেছেন। ধীরে ধীরে পঞ্চমের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা জন্মেছে তাঁর মনে। ফলত, আরডি বর্মণের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলি টুকরো টুকরো স্মৃতির আকারে আজও তাঁর মনের মণিকোঠায় উজ্জ্বল হয়ে থেকে গিয়েছে।—চলবে।
* পঞ্চমে মেলোডি (R D Burman): সৌম্য ভৌমিক, (Shoummo Bhoumik) সঙ্গীত শিল্পী।