![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/sarada-maa.jpg)
শ্রীমা।
ব্রহ্মচারী অক্ষয়চৈতন্য বলেছেন যে, পথভ্রষ্ট মানুষকে উচ্চ ধর্মভাবপ্রকাশ করার উপযোগি জীবনাদর্শ শেখানোর জন্যই ভগবানের লীলা ও নরদেহে অবতরণ হয়ে থাকে। তিনি নিজের স্বকীয় দেবভাবকে মানবীয় আবরণে ঢেকে দেবমানব স্বরূপ ধারণ করেন। তবু ছোটবেলা থেকেই মানবীয় আবরণ ভেদ করে মাঝেমধ্যে দেবভাব প্রকাশ হওয়ায় অবতারত্ব সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ থাকে না। আবার মানবদেহ ধারণ করায় আহারাদি থেকে শুরু করে ঈশ্বরলাভের জন্য যে ব্যাকুলতা দেখতে পাওয়া যায়, তার ফলে মানবত্বকেও অস্বীকার করা যায় না। কারণ, মনের ব্যাকুলতা মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম। এই আপাত বিরুদ্ধ আচরণেও কি রকম মধুর সামঞ্জস্য থাকে, তা স্বামী সারদানন্দের লেখা শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ থেকে বিস্তৃত ভাবে জানা যায়।
এখন জিজ্ঞাসা হল, শ্রীমা সারদা স্বয়ং সমাধিস্থ অবস্থায় নিজ দৈবীস্বরূপে থেকে ঠাকুরের পুজো গ্রহণ করেন। তাঁর আবার নিজের সাধনার প্রয়োজন কি! এপ্রসঙ্গে ঠাকুর উদাহরণ দিয়েছেন যে, ‘লাউকুমড়ার আগে ফল হয়, তারপর ফুল ফোটে’। সারদার মতন মানবীরূপা দেবী যখন সাধনা করেন, তার মধ্যে স্বার্থ থাকে না। তাঁদের সাধনভজন পরার্থে হয় বলেই তাঁদের সাধনায় এমন প্রবল ব্যাকুলতা দেখা যায়, যা ব্যক্তিকেন্দ্রিক সাধনায় লক্ষিত হয় না। কোনও স্নানযোগ উপলক্ষে সারদামা মেয়েদের নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছেন।
এখন জিজ্ঞাসা হল, শ্রীমা সারদা স্বয়ং সমাধিস্থ অবস্থায় নিজ দৈবীস্বরূপে থেকে ঠাকুরের পুজো গ্রহণ করেন। তাঁর আবার নিজের সাধনার প্রয়োজন কি! এপ্রসঙ্গে ঠাকুর উদাহরণ দিয়েছেন যে, ‘লাউকুমড়ার আগে ফল হয়, তারপর ফুল ফোটে’। সারদার মতন মানবীরূপা দেবী যখন সাধনা করেন, তার মধ্যে স্বার্থ থাকে না। তাঁদের সাধনভজন পরার্থে হয় বলেই তাঁদের সাধনায় এমন প্রবল ব্যাকুলতা দেখা যায়, যা ব্যক্তিকেন্দ্রিক সাধনায় লক্ষিত হয় না। কোনও স্নানযোগ উপলক্ষে সারদামা মেয়েদের নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছেন।
স্নান শেষে ঘাটের উড়ে পাণ্ডাকে ডেকে একটি ডাব দিয়ে বললেন, ‘এই ফলটি নাও বাবা, আর ফলের ফলটি দাও’। স্বামী সারদানন্দ বলেছেন যে, অবতাররূপ গুরু যেন সূর্যসম আর সাধারণ গুরু হলেন চন্দ্রতুল্য। কারণ, চাঁদের কিরণ তার নিজস্ব নয়, সূর্য থেকে প্রাপ্ত। ঠাকুর সারদা মাকে দিয়ে ব্যক্তিমানুষ ও সমষ্টিমানবের কল্যাণসাধন করিয়েছিলেন। তাই তিনি সারদাকে বলতেন, ‘শুধু কি আমারই দায়? তোমারও দায়’।
ঠাকুর বলতেন, ‘কলকাতার লোকগুলো যেন অন্ধকারে পোকার মতো কিলবিল কচ্চে, তুমি তাদের দেখবে। আমি কি করেছি, তোমাকে এর চাইতে অনেক বেশি কত্তে হবে’। তবুও ঠাকুরের তিরোভাবের পর সারদা মারও ইচ্ছা হয় চলে যাওয়ার। তখন ঠাকুর দেখা দিয়ে বলতেন, ‘না, তুমি থাক; অনেক কাজ বাকি আছে’। শ্রীমা বলতেন, ‘শেষে দেখলুম, তাই তো, অনেক কাজ বাকি’। সারদা নিজের সাধনভজন নিয়ে কখনও দু’ একটি কথা বলেছেন অথবা তাঁর ভাবাবিষ্ট সমাধি লক্ষ্য করে কখনও ভক্তরাও কিছু কথা জানিয়েছেন। এর থেকে সারদা মায়ের সাধনভজনের গভীরতার আভাস পাওয়া গেলেও পুরো ইতিহাস পাওয়া যায় না।
ঠাকুর বলতেন, ‘কলকাতার লোকগুলো যেন অন্ধকারে পোকার মতো কিলবিল কচ্চে, তুমি তাদের দেখবে। আমি কি করেছি, তোমাকে এর চাইতে অনেক বেশি কত্তে হবে’। তবুও ঠাকুরের তিরোভাবের পর সারদা মারও ইচ্ছা হয় চলে যাওয়ার। তখন ঠাকুর দেখা দিয়ে বলতেন, ‘না, তুমি থাক; অনেক কাজ বাকি আছে’। শ্রীমা বলতেন, ‘শেষে দেখলুম, তাই তো, অনেক কাজ বাকি’। সারদা নিজের সাধনভজন নিয়ে কখনও দু’ একটি কথা বলেছেন অথবা তাঁর ভাবাবিষ্ট সমাধি লক্ষ্য করে কখনও ভক্তরাও কিছু কথা জানিয়েছেন। এর থেকে সারদা মায়ের সাধনভজনের গভীরতার আভাস পাওয়া গেলেও পুরো ইতিহাস পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/03/Ramakrishna-1.jpg)
আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-১৫: সারদা মায়ের রোগ নিরাময়
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/10/samay-Updates_Cartoon.jpg)
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২০: অক্টোবর মাসের ষোলো, কী হল! কী হল?
সেই চোদ্দ বছর বয়স থেকেই কামারপুকুরে ঠাকুরের কাছে তাঁর সাধনার শুরু। ওই সময়ে ঠাকুর যখন মেয়েদের শিক্ষা দিতেন সেই সম্বন্ধে শ্রীমা বলেছেন যে, ঠাকুরের কথা শুনতে শুনতে তিনি ঘুমিয়ে পড়তেন। অন্য মেয়েরা তাঁকে ঠেলে তুলতে গেলে ঠাকুর বলতেন, ‘না গো, ওকে তুল নি, ও কি সাধে ঘুমিয়েছে? এসব শুনলে ও এখানে থাকবে নি, চোঁচা দৌড় মারবে’। সারদা বলেছেন যে, একথা মেয়েরা তাঁকে পরে বলেছে। তবে ঠাকুর কি কারণে ‘ও এখানে থাকবে নি’ বলেছেন, তার অর্থ বোঝা কঠিন। হয়তো, সারদার মনের ঊর্ধ্বগতি ও তাঁর অন্তর্মুখী অবস্থা দেখে তিনি এই কথা বলে থাকবেন। কারণ, সেই সময় ঠাকুরের মুখে ঈশ্বরতত্ত্ব শুনলে সারদার মন সমাধিতে এমনই লীন হয়ে যেত যে তাকে নীচে নামানো কঠিন হয়ে যেত।
সারদা যখন দক্ষিণেশ্বরে আসেন, তখন ঠাকুরের উপদেশে তাঁর সাধনজীবন ধীরে ধীরে গভীরতা লাভ করে। শ্রীমা বলেছেন, ‘সে সব কি দিনই গিয়েছে। জ্যোৎস্না রাতে চাঁদের পানে তাকিয়ে জোড়হাতে বলেচি, তোমার এ জ্যোৎস্নার মতন আমার অন্তর নির্মল করে দাও। রাতে যখন চাঁদ উঠত, গঙ্গার ভিতর স্থিরজলে তার প্রতিবিম্ব দেখে ভগবানের কাছে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা কত্তুম, চাঁদেও কলঙ্ক আছে, আমার মনে যেন কোন দাগ না থাকে’। সারদা মা পূর্ণানন্দ নামে কোন এক সন্ন্যাসীর কাছে শক্তিমন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন। একজন ভক্ত তার ছেলের নাম ‘পূর্ণচন্দ্র’ রাখতে চাইলে সারদা বলেছিলেন যে, তিনি ওই নাম ধরে ডাকতে পারবেন না। কারণ, তাঁর গুরুর নাম। জানা যায়, পূর্ণানন্দ বাঙালি ছিলেন। পরে ঠাকুরও শ্রীমায়ের জিহ্বায় একটি মন্ত্র লিখে দেন। ঠাকুরের ইষ্টদেবী কালী আর সারদা মায়ের ইষ্টদেবী হলেন জগদ্ধাত্রী।
সারদা যখন দক্ষিণেশ্বরে আসেন, তখন ঠাকুরের উপদেশে তাঁর সাধনজীবন ধীরে ধীরে গভীরতা লাভ করে। শ্রীমা বলেছেন, ‘সে সব কি দিনই গিয়েছে। জ্যোৎস্না রাতে চাঁদের পানে তাকিয়ে জোড়হাতে বলেচি, তোমার এ জ্যোৎস্নার মতন আমার অন্তর নির্মল করে দাও। রাতে যখন চাঁদ উঠত, গঙ্গার ভিতর স্থিরজলে তার প্রতিবিম্ব দেখে ভগবানের কাছে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা কত্তুম, চাঁদেও কলঙ্ক আছে, আমার মনে যেন কোন দাগ না থাকে’। সারদা মা পূর্ণানন্দ নামে কোন এক সন্ন্যাসীর কাছে শক্তিমন্ত্রে দীক্ষা নিয়েছিলেন। একজন ভক্ত তার ছেলের নাম ‘পূর্ণচন্দ্র’ রাখতে চাইলে সারদা বলেছিলেন যে, তিনি ওই নাম ধরে ডাকতে পারবেন না। কারণ, তাঁর গুরুর নাম। জানা যায়, পূর্ণানন্দ বাঙালি ছিলেন। পরে ঠাকুরও শ্রীমায়ের জিহ্বায় একটি মন্ত্র লিখে দেন। ঠাকুরের ইষ্টদেবী কালী আর সারদা মায়ের ইষ্টদেবী হলেন জগদ্ধাত্রী।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/10/Health-2.jpg)
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৪১: চোখ ঠিক রাখতে মাছের মুড়ো?
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/10/Chatakpur-4.jpg)
পরিযায়ী মন, পর্ব-১০: চটকপুরের নিরালায়
ডাক্তার অক্ষয়কুমার মিত্র সারদা মার কাছে জগদ্ধাত্রীমন্ত্রে দীক্ষা নিতে চান জেনে শরৎ মহারাজ বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় মা জগদ্ধাত্রীমন্ত্র দেবেন না, জগদ্ধাত্রী তাঁর ইষ্ট। ঠাকুর নিজে যেসকল দেবদেবীর আরাধনা করেছেন, তাঁদের মন্ত্রও সারদাকে শিখিয়ে দেন। আর সারদামা ওই সব মন্ত্রেরও সাধনা করেন। পরবর্তি কালে অধিকারিভেদে তিনি ওই সব মন্ত্র বিভিন্ন শিষ্যকে দান করেন। স্বামী বিশ্বেশ্বরানন্দ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি এত লোককে মন্ত্র দেন কেন? এতে কি তাদের সকলেরই কল্যাণ হবে?’ সারদামা বলেন যে, এগুলি ঠাকুরের দেওয়া মন্ত্র, সব সিদ্ধমন্ত্র। জপ করলে নিশ্চিত কল্যাণ হবে। আধ্যাত্মিক খুঁটিনাটি ব্যাপার ঠাকুর অক্লান্তভাবে শ্রীমাকে বুঝিয়ে দিতেন। এমনকি, তিনি কুলকুণ্ডলিনী, ষট্ চক্র প্রভৃতি সারদাকে কাগজে এঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
দক্ষিণেশ্বরে একসময়ে লক্ষ জপ সম্পূর্ণ না করে তিনি জলগ্রহণ করতেন না। শেষ বয়স পর্যন্ত জপধ্যানে তাঁর অসীম নিয়মনিষ্ঠা ছিল। জয়রামবাটিতেও অনেকে দেখেছেন, অসুখের সময়েও ঠিক চারটের সময় নিদ্রাত্যাগ করে অন্ধকার থাকতেই সারদামা মাঠে গিয়ে প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে লেপ জড়িয়ে পা মেলে বিছানাতেই জপ করতে লাগলেন। তাঁর কাছে মন্ত্রজপের জন্য একগাছা তুলসী আর রুদ্রাক্ষের জপমালা ছিল।
সাধারণভাবে তিনি ব্রাহ্মমুহূর্তে একবার পুজোর সময়, একবার অপরাহ্নে ও একবার সন্ধ্যার সময় জপধ্যান করতেন। এই নিত্যকর্মে তিনি এতই অভ্যস্ত ছিলেন যে তাঁর জপধ্যানে কোন ব্যতিক্রম ঘটত না। একবার দুর্বলশরীরে জপ করতে বসেছেন সারদা, তা দেখে একজন সেবক বলেন, ‘মা, তোমার কি করবার আছে? তোমার তো সব হয়েই গেছে। আবার শুধু শুধু শরীরকে কষ্ট দিচ্চ কেন’? শ্রীমা তাকে বলেন, ‘বাবা, আমার ছেলেরা কে কোথায় কি কচ্চে না কচ্চে, তাদের জন্য দুটো করে রাখছি’।
দক্ষিণেশ্বরে একসময়ে লক্ষ জপ সম্পূর্ণ না করে তিনি জলগ্রহণ করতেন না। শেষ বয়স পর্যন্ত জপধ্যানে তাঁর অসীম নিয়মনিষ্ঠা ছিল। জয়রামবাটিতেও অনেকে দেখেছেন, অসুখের সময়েও ঠিক চারটের সময় নিদ্রাত্যাগ করে অন্ধকার থাকতেই সারদামা মাঠে গিয়ে প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে লেপ জড়িয়ে পা মেলে বিছানাতেই জপ করতে লাগলেন। তাঁর কাছে মন্ত্রজপের জন্য একগাছা তুলসী আর রুদ্রাক্ষের জপমালা ছিল।
সাধারণভাবে তিনি ব্রাহ্মমুহূর্তে একবার পুজোর সময়, একবার অপরাহ্নে ও একবার সন্ধ্যার সময় জপধ্যান করতেন। এই নিত্যকর্মে তিনি এতই অভ্যস্ত ছিলেন যে তাঁর জপধ্যানে কোন ব্যতিক্রম ঘটত না। একবার দুর্বলশরীরে জপ করতে বসেছেন সারদা, তা দেখে একজন সেবক বলেন, ‘মা, তোমার কি করবার আছে? তোমার তো সব হয়েই গেছে। আবার শুধু শুধু শরীরকে কষ্ট দিচ্চ কেন’? শ্রীমা তাকে বলেন, ‘বাবা, আমার ছেলেরা কে কোথায় কি কচ্চে না কচ্চে, তাদের জন্য দুটো করে রাখছি’।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/05/Rahul-Deb-Burman-1.jpg)
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৩৩: নতুন গানের ডালি নিয়ে সুরকার, গীতিকার এবং গায়ক-গায়িকারা পুজোর এই সময়েই হাজির হতেন
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/10/Birendra-Krishna-Bhadra-3.jpg)
রাক্ষসের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ঢুকে গেলেন বেতারকেন্দ্রে
আর একদিন অপর একজন তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনি রাতে ঘুমোন না, আমি যখনই রাতে ঘর থেকে বের হই তখনই আপনি বলেন, কে গো? এতে বেশ বুঝি যে আপনার ঘুম হয় না’। সারদা শুধু বলেন যে, ছেলেগুলো এসেছে, নিজেরা তো কিছু করতে পারেনা, তাদের কাজ করতেই সময় চলে যায়। এই সাধননিষ্ঠা থেকে বোঝা যায় তাঁর প্রাথমিক সাধনার আবেগ ও তীব্রতা কতটা ছিল। সেই সময় কত বিনিদ্র রাত যে তিনি সমাধিতে অতিবাহিত করেছেন, তার বিবরণ কারও জানা নেই। নহবতের ঘরের পশ্চিমের বারান্দায় দক্ষিণমুখী হয়ে তিনি ধ্যান করতেন। একবার অত্যন্ত গভীর রাতে ঠাকুরের খোঁজে পঞ্চবটীতে যাবার সময় স্বামী যোগানন্দ শ্রীমাকে সমাধিস্থা দেখেছিলেন।
‘বাহির দুয়ারে মাতা জগৎজননী।
সমাধিতে বসিয়া আছেন একাকিনী’।। (শ্রীরামকৃষ্ণপুঁথি)
শ্যামাপুজো, ফলহারিণী পুজো আর স্নানযাত্রা এই তিনদিন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে ‘বিশেষপর্বাহ’ বলে গণ্য করা হত। স্নানযাত্রার পর প্রায়শঃ পঞ্চমীর দিন ঠাকুর দেশে যেতেন। কামারপুকুর, জয়রামবাটি আর শিহড়ে যাতায়াত করতেন। তবে দুর্গাপুজোর আগে দক্ষিণেশ্বরে ফিরে আসতেন। ঠাকুরের ভাগ্নী লক্ষ্মীদেবীর কথা থেকে অনুমান করা যায় যে ১২৮৩ সাল থেকে পরপর চারবছর তিনি দেশে গিয়েছিলেন। কলকাতা থেকে ঘাটাল পর্যন্ত স্টিমার চলা আরম্ভ হলে তিনি সারদাকে সঙ্গে নিয়ে স্টিমারে একবার দেশে গিয়েছিলেন। পথে বালিতে তিনদিন থেকে ছিলেন। সেখানে এক ভক্ত ময়রা নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগে সাধুসজ্জনদের তিনদিন নবগৃহে রেখে সেবা করতে চান। ধ্রুবানন্দকে সারদা বলেন যে, নদের তীরে মোদকের ঘর ছিল আর কাছেই অনেকগুলো গৌস্বামিবাড়ি ছিল। বালির লুপ্তবংশ সেই মোদকের ঘর নদীগর্ভে পরে বিলীন হয়ে যাবার পরও গোঁসাইদের বাড়ি বিদ্যমান ছিল।—চলবে।
সমাধিতে বসিয়া আছেন একাকিনী’।।
শ্যামাপুজো, ফলহারিণী পুজো আর স্নানযাত্রা এই তিনদিন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে ‘বিশেষপর্বাহ’ বলে গণ্য করা হত। স্নানযাত্রার পর প্রায়শঃ পঞ্চমীর দিন ঠাকুর দেশে যেতেন। কামারপুকুর, জয়রামবাটি আর শিহড়ে যাতায়াত করতেন। তবে দুর্গাপুজোর আগে দক্ষিণেশ্বরে ফিরে আসতেন। ঠাকুরের ভাগ্নী লক্ষ্মীদেবীর কথা থেকে অনুমান করা যায় যে ১২৮৩ সাল থেকে পরপর চারবছর তিনি দেশে গিয়েছিলেন। কলকাতা থেকে ঘাটাল পর্যন্ত স্টিমার চলা আরম্ভ হলে তিনি সারদাকে সঙ্গে নিয়ে স্টিমারে একবার দেশে গিয়েছিলেন। পথে বালিতে তিনদিন থেকে ছিলেন। সেখানে এক ভক্ত ময়রা নতুন বাড়িতে প্রবেশের আগে সাধুসজ্জনদের তিনদিন নবগৃহে রেখে সেবা করতে চান। ধ্রুবানন্দকে সারদা বলেন যে, নদের তীরে মোদকের ঘর ছিল আর কাছেই অনেকগুলো গৌস্বামিবাড়ি ছিল। বালির লুপ্তবংশ সেই মোদকের ঘর নদীগর্ভে পরে বিলীন হয়ে যাবার পরও গোঁসাইদের বাড়ি বিদ্যমান ছিল।—চলবে।
* আলোকের ঝর্ণাধারায় (sarada-devi): ড. মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় (Dr. Mousumi Chattopadhyay), অধ্যাপিকা, সংস্কৃত বিভাগ, বেথুন কলেজ।