![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/Ramakrishna-1.jpg)
শ্রীরামকৃষ্ণদেব। ছবি: সংগৃহীত।
স্বামী অরূপানন্দ শ্রীশ্রী মায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, (যেখান উপস্থিত ছিলেন নলিনী দিদি, গোলাপ মা) গোলাপ মা একদিন উদ্বোধনে উপরের পায়খানা পরিষ্কার করে এসে আবার কাপড় ছেড়ে ঠাকুরের ফল কাটতে গেলেন। তখন নলিনী দিদি তাঁকে বললেন, “ও কি গোলাপ দিদি গঙ্গায় ডুব দিয়ে এসো।” গোলাপ দিদি বললেন, “তোর ইচ্ছে হয় তুই যা না।”
শ্রীশ্রীমা শুনে বললেন, “গোলাপের মন কত শুদ্ধ, কত উঁচু মন। তাই ওর অত শুচিবাই-টাইয়ের ধার ধারে না। ওর এই শেষ জন্ম। তোদের অমন মন হতে আলাদা দেহ দরকার। আর চার ক্রোশি গঙ্গাতীর পবিত্র হাওয়া বয়। হাওয়া রূপী নারায়ণ। বহু তপস্যা করলে এই মন শুদ্ধ হয়। সাধন বিনা শুদ্ধবস্তু কভু না মিলায়। ভগবান লাভ হলে কি আর হয়? দুটো কি শিং বেরোয়? না, মন শুদ্ধ হয়। শুদ্ধ মনে জ্ঞান চৈতন্য লাভ হয়।”
শ্রীশ্রীমা শুনে বললেন, “গোলাপের মন কত শুদ্ধ, কত উঁচু মন। তাই ওর অত শুচিবাই-টাইয়ের ধার ধারে না। ওর এই শেষ জন্ম। তোদের অমন মন হতে আলাদা দেহ দরকার। আর চার ক্রোশি গঙ্গাতীর পবিত্র হাওয়া বয়। হাওয়া রূপী নারায়ণ। বহু তপস্যা করলে এই মন শুদ্ধ হয়। সাধন বিনা শুদ্ধবস্তু কভু না মিলায়। ভগবান লাভ হলে কি আর হয়? দুটো কি শিং বেরোয়? না, মন শুদ্ধ হয়। শুদ্ধ মনে জ্ঞান চৈতন্য লাভ হয়।”
স্বামী অরূপানন্দ শ্রীশ্রী মাকে জিজ্ঞেস করলেন, “মা, যারা ভগবানের উপর নির্ভর করে পড়ে থাকে তাদের বিনা সাধনে কী করে হয়?” শ্রীমা বললেন, “ভগবানের উপর নির্ভর করে বিশ্বাস করে যে পড়ে থাকা এটি তাদের সাধনা। নরেন বলেছিল লক্ষ জন্ম হলেই বা তাতে ভয় কী? তাই তো জ্ঞানীর জন্ম নিতে ভয় কী? তাদের তো আর পাপ হয় না। অজ্ঞানেরই যত ভয় তারাই বদ্ধ হয়। পাপে লিপ্ত হয়। কত লাখ লাখ জন্ম ভোগে ভোগে যন্ত্রণা পেয়ে শেষে ভগবানকে চায়।” স্বামী অরূপানন্দ বললেন, “ঘেঁটে ঘেঁটে তবে তো শিক্ষা হয়, জ্ঞান হয়।” শ্রীমা বললেন, “ঢাক, ঢোল, বীণা সব যন্ত্র বাজিয়ে বাজিয়ে শেষে ধুনুরির হাতে পড়ে তবে তহু তহু ডাক ছাড়ে।”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/Ramakrishna.jpg)
অনন্ত এক পথ পরিক্রমা, পর্ব-৩২: ঈশ্বরের নিকট যতই যাওয়া যায়, ততই তাহার ভাব-ভক্তি হয়
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/fish-e.jpg)
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৬৮: উন্নতমানের প্রোটিনের উৎস বলেই মাছ এত জনপ্রিয়
ভক্তিযোগের প্রথম সোপান হল, তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও আত্ম সমর্পণ। ভক্ত ভগবানের সামীপ্য চায়। তাঁর সান্নিধ্যে আনন্দ অনুভব করে। সে আনন্দ জগতের অতীত। জগতের কোনও পঙ্কিলতা স্পর্শ করতে পারে না। যার ভক্তি লাভ হয়েছে তিনি ভগবানকেই লাভ করেছেন। ভাগবত-ভক্ত-ভগবান। তিনে এক একে তিন।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, “বিচার করা যতক্ষণ না শেষ হয় লোকে ধরপর করে, তর্ক করে, শেষ হলে চুপ হয়ে যায়। কলসি পূর্ণ হলে কলসির জল পুকুরের জল এক হলে আর শব্দ থাকে না। যতক্ষণ না কলসি জলপূর্ণ হয় ততক্ষণই শব্দ।” তাঁকে লাভ হলে আর শব্দ থাকে না। তিনি যে কী মুখে তা প্রকাশ করা যায় না।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, “বিচার করা যতক্ষণ না শেষ হয় লোকে ধরপর করে, তর্ক করে, শেষ হলে চুপ হয়ে যায়। কলসি পূর্ণ হলে কলসির জল পুকুরের জল এক হলে আর শব্দ থাকে না। যতক্ষণ না কলসি জলপূর্ণ হয় ততক্ষণই শব্দ।” তাঁকে লাভ হলে আর শব্দ থাকে না। তিনি যে কী মুখে তা প্রকাশ করা যায় না।
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/Kishore-Kumar2.jpg)
অমর শিল্পী তুমি, পর্ব-২: কাজের আশায়, তারকা অশোককুমারের গাড়িতে নয়, লোকাল ট্রেনে-বাসে ঘুরে বেড়াতেন কিশোর
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/Sundarban-1-1.jpg)
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-৯: সুন্দরবনের লুপ্ত নদী আদিগঙ্গা
“যত লোক দেখি ধর্ম কর্ম করে এ ওর সঙ্গে ঝগড়া করছে। হিন্দু, মুসলমান, ব্রহ্মজ্ঞানী, বৈষ্ণব, শাক্ত, শৈব, সব পরস্পরে ঝগড়া এ বুদ্ধি নেই যে যিনি কৃষ্ণ, তিনি শিব তিনি আদ্যাশক্তি, তিনিই যিশু, তিনি আল্লা। যেখানে দর্শন শেষ হয় সেখান থেকেই ধর্ম শুরু হয়। ধর্ম আচরণ আর ধর্ম লাভ অনেক পার্থক্য। ধর্ম লাভের সাধন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। ধর্ম লাভ হলে আর ভিন্নতা আর থাকে না। ধর্ম সত্য যা লাভে অপরিবর্তনীয় সত্ত্বাকে লাভ হয়। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, “যেমন এক রাম কারও বাবা কারও খুড়ো, কারও পিসে কারও মামা আরও কত কী?”
আরও পড়ুন:
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/07/Ramayana-1.jpg)
শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব-৫২: আঁধার ঘনালো বুঝি সীতার ভুবনে…
![](https://samayupdates.in/wp-content/uploads/2023/08/Mandir-3.jpg)
মন্দিরময় উত্তরবঙ্গ, পর্ব-২: ভারতের স্থাপত্যশৈলীতে ভিতরকুঠি টেরাকোটা শিব মন্দিরের অবদান অপরিসীম
বাড়ি প্রস্তুত করতে হলে প্রথমে ভাড়া বাঁধতে হয়। কিন্তু বাড়ি প্রস্তুত হয়ে গেলে আর ভাড়া দরকার থাকে না। মূর্তি পূজাও সেই রূপ প্রথমে দরকার শেষে আর প্রয়োজন থাকে না। ভক্ত তখন অদ্বৈত আনন্দে বিচরণ করেন।
* অনন্ত এক পথ পরিক্রমা (Ananta Ek Patha Parikrama) : স্বামী তত্ত্বাতীতানন্দ (Swami Tattwatitananda), সম্পাদক, রামকৃষ্ণ মিশন, ফিজি (Fiji)।