শরীরচর্চার সময় আমারা সাধারণত কাঁধ, মেরুদণ্ড এবং বাহুর মতো অঙ্গগুলিকে বেশি গুরুত্ব দিই। এ সময় বেলামুম ভুলে যাই গোড়ালির যত্নের কথা। বেশির ভাগ মানুষেরই গোড়ালিকে শক্তিশালী করার কথা মাথায় থাকে না। যদিও মনে রাখা দরকার গোড়ালি একটি জটিল সন্ধি। আমাদের শরীরের ভার বহন করে গোড়ালি। শরীরচর্চার অভাব, ভুল ব্যায়াম, উঁচু হিলের জুতো পরার অভ্যাস ইত্যাদি আমাদের গোড়ালিকে দুর্বল করে দেয়। পাশাপাশি পায়ের পাতায় থাকা ‘প্লান্টার ফাসিয়া লিগামেন্ট’-এ টান ধরলেই গোড়ালির ব্যথা বাড়তে থাকে। একে বলা হয় ‘প্লান্টার ফাসাইটিস’-এর সমস্যা। ‘প্লান্টার ফাসাইটিস’-এর প্রধান লক্ষণই হল গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা। পায়ের ওই অংশে প্রদাহ তৈরি হলে শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। আবার আমাদের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে গোড়ালিতে ব্যথা হতে থাকে।
এই ব্যথা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
● অনেক সময় অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটির জন্যও গোড়ালিতে প্রদাহ হয়। তাই নিয়ম মেনে বিশ্রাম নিতে হবে।
● উঁচু ও শক্ত সোলের জুতো ব্যবহার করুন। এতে ব্যথা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
● ব্যথা কমাতে গোড়ালিতে ঠান্ডা-গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে। তবে প্রথমে ঠান্ডা সেঁক দিয়ে পর মুহূর্তে গরম সেঁক দিলে উপকার পাওয়া যাবে।
● ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা হল ভীষণ জরুরি।
কী কী ব্যায়াম করলে আরাম পাবেন?
● একটি দেওয়ালের পাশে দুই পায়ের মাঝে সামান্য ফাঁক রেখে দাঁড়ান। আপনার হাত দুটি দেওয়ালে রাখুন। এ বার পায়ের পাতার উপরে ভর দিয়ে উঠুন। শরীর সোজা রেখে ভারসাম্য বজায় রাখুন। কয়েক সেকেন্ড পর এ ভাবে থাকার পরে স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসুন। এই ব্যায়াম ১০-১৫ বার করুন।
● প্রথমে দুই পা একসঙ্গে করুন। তার পর হাত দুই পাশে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এ বার গোড়ালির উপর পুরো শরীরের ভর দিয়ে দাঁড়ান। আর ধীরে ধীরে পায়ের আঙুলগুলি মাটি থেকে তুলুন। এ ভাবে সামনের দিকে হাঁটতে থাকুন। এই ব্যায়াম যে কোনও সময়ই করতে পারবেন।
এছাড়াও যা করতে পারেন
গোড়ালি ব্যথার কারণে কারও কারও সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেলতে সমস্যা হয়। সমস্যা এড়াতে প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েকটি কাজ করলে উপকার পাওয়া যাবে। যেমন:
● আরেকটি কাজ করতে পারেন। একটি টেনিস বল নিয়ে পায়ের পাতার তলায় রেখে গোড়ালি থেকে আঙুল পর্যন্ত ঘোরাতে থাকুন। দিনের যে কোনও সময়েই এটা করতে পারেন। শুধু বল ঘোরানো নয়, সঙ্গে এ সময়ে হালকা করে তার উপর চাপও দিন।
● রোজ দিন নিয়ম মেনে দশ মিনিট স্ট্রেচিং করুন। তার পর পায়ের পাতা মাসাজ করুন।
● ঘুম ভাঙার পরে নীচে নামার আগে বিছানাতেই পা স্ট্রেচ করুন।
তবে ব্যথা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।