শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪


‘সির্ফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’। ছবি: সংগৃহীত।

সত্য, শূল, গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর, আলিগড়, ফ্যামিলি ম্যান (সিজন ১ ও ২)। অজস্র অসংখ্য ছবিতে সিরিজে অনবদ্য অভিনয়। আজ তাঁর অভিনীত ভিন্নধর্মী চরিত্রদের নিয়ে কথা বলব। তিনি মনোজ বাজপেয়ী। ২০১৯-এর পদ্মশ্রী, ১৯৯৯ (সত্য) ২০০৪ (পিঞ্জর) এবং ২০২১ (ভোঁসলে)—তিনটি জাতীয় পুরস্কার। সত্য, শূল, আলিগড় এবং স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তাণ্ডব-এর জন্য চারটি ফিল্মফেয়ার। আলিগড় ও ভোঁসলে ছবির জন্য দু’ বার এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড। ফ্যামিলি ম্যান সিজন ১ এবং ২-এর জন্য দু’বার ফিল্মফেয়ার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড। এছাড়াও স্ক্রিন এবং জি-সিনে অ্যাওয়ার্ড দেশে বিদেশের নানান ফেস্টিভ্যালে অসংখ্য অজস্র পুরস্কারে ভূষিত বিহারের বেতিয়ার এক ছোট্ট গ্রাম বেলয়া’র এক নিম্ন মধ্যবিত্ত চাষির ঘরে জন্মানো মনোজ বাজপেয়ী।

ছেলেবেলা থেকে অভিনয়ের স্বপ্ন ছিল সু্যোগ ছিল না। চারবার এনএসডি থেকে বাতিল হয়েছেন। মানসিক হতাশার শিকার হয়ে পড়েছিলেন। এরপর দিল্লিতে কলেজে পড়ার সময় অসংখ্য নাটক করেছেন। ‘স্ট্রিট প্লে’ থেকে স্টেজ প্লে সব। ব্যারি জনের কাছে অভিনয়ের পাঠ নিয়েছেন। মনোজ বাজপেয়ীর অভিনয়ের শিক্ষা ও শৃংখলা সবটাই থিয়েটার।
থিয়েটারের বিশ্লেষণী ক্ষমতায় নিজেকে ভেঙ্গে সিনেমার জন্য তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন মনোজ। রোজ প্রতিনিয়ত নিজেকে ধারালো করছেন, সেটা রামগোপাল বর্মার ‘সত্য’-র ভিখু মাথরে থেকে দেবাশিস মাখিজার ‘ভোঁসলে’ ছবির অবসরপ্রাপ্ত অসুস্থ কনস্টেবল গণপথ ভোঁসলে সাইলেন্সের কঠোর এসিপি অবিনাশ বর্মা বা দীপেশ জৈন-এর ‘গালি গালিয়াঁ’ ছবির মানসিক দোলাচলে থাকা কুদ্দুস। রাজ ও ডিকে-র সাড়াজাগানো স্পাই-থ্রিলার ‘ফ্যামিলি ম্যান’ সিজন ১ এবং ২”-এর আণ্ডারকভার ইন্টেলিজেন্স এজেন্ট শ্রীকান্ত তিওয়ারি বা অপূর্ব সিং কারকি পরিচালিত “স্রিফ এক বান্দা…’-র শান্ত ঈশ্বরপূজারী অ্যাডভোকেট পিসি শোলাঙ্কির চরিত্রায়ণে নিজেকে বারবার বদলে দেওয়ার অস্বাভাবিক ক্ষমতার স্পষ্ট বিবর্তন লক্ষ্য করলেই তা অনুভব করা যায়।
আলোচ্য তিনটি ছবির তিনটি ভিন্ন চরিত্র নিয়ে আলোচনা করব ভেবেছিলাম। কিন্তু মনোজ বাজপেয়ি এমন একজন অভিনেতা যাঁর কথা মাথায় এলেই তাঁর অভিনীত চরিত্রের কোলাজরা চারদিক থেকে যেন ঘিরে ধরে। উল্লেখিত পাঁচটি চরিত্রে মনোজ পাঁচরকম। একথা অনস্বীকার্য যে এই পাঁচটি ছবির কাহিনি চিত্রনাট্যকার পরিচালক মেকআপ আর্টিস্ট সকলে মিলে আগে দেখা দুর্দান্ত মনোজকে মুছে দিয়ে নতুন এক অসাধারণ অ-দেখা ‘মনোজ’ সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। কিন্তু চাইলেই তো হয় না। সারা ভারত জুড়ে ছবির ব্যবসায় এই যে হাজার হাজার কোটি টাকার লগ্নী হয় তার কাহিনি চিত্রনাট্যকার বা পরিচালকেরা সকলেই চান নতুন কিছু করতে। সকলের টার্গেট থাকে একেবারে অন্যভাবে দর্শককে চমকে দিতে। কিন্তু তা হয়ে ওঠে না। কারণ সব ছবিতেই মনোজ বাজপেয়িই অভিনয় করেন না।

অথচ কী আশ্চর্য সত্য-র পরে যখন মনোজ কোনও কাজ পাচ্ছিলেন না। মানে যেমন কাজ তিনি চাইছিলেন তেমন কাজ পাচ্ছিলেন না তখন একা বাড়িতে বসে থাকতেন। তিনি ঠিক করেছিলেন বাণিজ্যিক ছবির ভিলেন তিনি করবেন না। তখন চেকে বা ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার করে টাকা আসতো না। আসতো ব্রিফকেস বোঝাই হয়ে। কাজ না থাকায় কিছুদিনের জন্য অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন কিন্তু তবুও সেই ব্রিফকেসের টাকা স্পর্শ করেননি।

আলিগড়। ছবি: সংগৃহীত।

আসারাম বাপু ধর্ষণ মামলা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এক টানটান কোর্টরুম ড্রামা ‘স্রিফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’। নাটকই হোক বা সিনেমা, আদালতে গড়ে ওঠা কাহিনিতে খুব ঝুঁকি রয়েছে। টি-টোয়েন্টির মতো চালিয়ে খেলার জায়গা নেই। এখানে টেস্ট ম্যাচের ধৈর্য লাগে ধীরে ধীরে লক্ষ্যে পৌঁছতে হয়। অভিনয়ের সামান্য খামতি থাকলে তা অফ স্ট্যাম্পে খোঁচা হয়ে ক্যাচ উঠে যাবে। সত্যঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবিতে বাবাজিকে বাঁচাতে যেমন দেশের নামিদামি উকিলরা তার পক্ষ নিয়েছেন, তেমনি ধর্ষিতা কিশোরীর পক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া আইনজীবী পুনম চাঁদ (পিসি) শোলাঙ্কিকে টাকা বোঝাই ব্যাগের লোভ দেখানো হয়েছে, ভয় দেখানো হয়েছে। একবিন্দু টলানো যায়নি তাঁকে। বাড়িতে টাকা নিয়ে এসে মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রস্তাবের দৃশ্যে শোলাঙ্কির মধ্যে থেকে সেই ব্রিফকেস না-ছোঁয়া মনোজ বাজপেয়ী স্বয়ং যেন বেরিয়ে এলেন।
শোলাঙ্কি শান্তভাবে জানতে চাইলেন ব্যাগের মধ্যে কত টাকা আছে?

— বিশকোটি।এটাএডভান্স।
বাকি টাকা ‘অভিযুক্ত বাবা’ জামিন পেলেই পাওয়া যাবে। শোলাঙ্কির মুখের হাসি আরও চওড়া হল গলা উঁচু করে ভিতরে থাকা বিধবা মাকে জিজ্ঞেস করলেন

— মা! বিশ কোটি টাকা দিয়ে যোধপুরে তুমি কি কি কিনতে চাও?
কাজের মধ্যে থাকা মায়ের শান্ত জবাব।

— হয়তো অর্ধেক যোধপুরটাই কিনে নেওয়া যাবে!

— তোমার চাই?

— পরিষ্কার কে করবে? আমার যেটুকু আছে তাতেই চলবে, শোলাঙ্কির মা উত্তর দিলেন।

— মা বলছেন ‘লাগবে না’।

মিশ্র নামের আশ্রমের যে দূত এই টাকা নিয়ে এসেছিল সে বোঝাবার চেষ্টা করে যে শোলাঙ্কিজির মায়ের বয়স হয়ে গিয়েছে। তার টাকা পয়সা নাও লাগতে পারে কিন্তু ছেলে। তার তো ভবিষ্যৎ রয়েছে। এতক্ষণ পরে শোলাঙ্কির ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে, ধমক লাগিয়ে উঠে যেতে বলেন। মিশ্র আরও কথা বাড়াতে গেলে আইনজীবী পিসি শোলাঙ্কি এবার ইন্সপেক্টর সিয়ালকে ফোন করেন কোনও অভিযোগ নয়। শুধু জানান হঠাৎ করে খেয়াল পড়েছে তাই ফোন করছেন। লোকগুলি বুঝতে পেরে কোন গতিকে ঘর ছেড়ে যাচ্ছিল ফোনে কথা বলতে বলতেই শোলাঙ্কি বলে ওঠেন।

— আরে ভাই আপনাদের ব্যাগটা নিয়ে যান। হ্যাঁ, বাইরের দরজাটা টেনে দিয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন:

রিভিউ: ‘কফস’ হল আমাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সেই ভয়ঙ্কর খাঁচা

আলোকের ঝর্ণাধারায়, পর্ব-৩: আত্মারামে কুটো বাঁধা আছে

কাহিনি ও চিত্রনাট্যকার চেয়েছিলেন পরিচালক অনুভব করেছিলেন আইনজীবী শোলাঙ্কির চারিত্রিক দৃঢ়তা বোঝাতে এ ধরনেরই অনাটকীয় একটি দৃশ্যের অবতারণা করতে। কিন্তু পর্দা টপকে যে বিরল ক্ষমতার অধিকারী এই অভিনেতা এই দৃশ্যভাবনাকে ছবির একটি অনবদ্য মুহূর্ত করে তুললেন তিনি মনোজ বাজপেয়ী। যিনি তার শুরুর দিনগুলোতে এ ভাবেই ব্রিফকেস-এর টাকা ঠেলে সরিয়ে দিয়ে নিজের অভিনয় শিল্পকে সত্তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।

আদর্শ বা সততার অনেক মূল্য চোকাতে হয়। নাটক গল্প ছবির দুষ্টু লোকেরা প্রায় একটি কমন ডায়লগ বলেন। একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। সমস্ত মানুষের নাকি দাম রয়েছে। কেউ কম দামে বিক্রি হয় কেউ-বা একটু বেশি দামে। আসলে যাঁরা বিক্রি হতে চান না তাঁদের কাছে আত্মমর্যাদা অমূল্য। তাঁদের মেরুদণ্ড ‘নট ফর সেল’। তার কোনও ‘স্পেশাল প্রাইস’ নেই। সংখ্যার পিছনে শূণ্য বাড়লেই তাঁদের বিবেক-বুদ্ধি রক্তশূন্য হয়ে যায় না। যাদের মেরুদণ্ড ফাঁপা। স্নায়ু, হাড় বা মজ্জা কিছুই নেই। তাদেরটা ভাঙ্গে। কারও মট করে একটু চাপেই ভাঙ্গে। কারও বেঁকতে বেঁকতে মচকে যায়, আর সোজা হয় না।

শূল। ছবি: সংগৃহীত।

নিজের কথা বলতে গিয়ে মনোজ এসব অকপটে বলেছেন নীলেশ শর্মাকে। আজকাল স্মার্টফোন আর ইউটিউবের খোলা-দরজার কল্যাণে আমরা সকলেই বিখ্যাতদের সাক্ষাৎকার নিয়ে সম্প্রচার করে দিই। নীলেশ শর্মার ‘স্লো ইন্টারভিউ’ নামের অনুষ্ঠান সম্ভবত সাক্ষাতকারের প্রশ্নবিচিত্রা ও উত্তরাবলীর সুলভ সংস্করণ।

এই মেডইজি সাক্ষাতকারের ধ্যান-ধারণা বদলাতে বাধ্য। নীলেশের সঙ্গে আলাপচারিতায় মনোজ জানিয়েছিলেন তিনি পুরোপুরি ফ্যামিলি ম্যান। স্বামী-স্ত্রী আলোচনা করে নিজেদের চাহিদাকে যথাসম্ভব কমিয়ে এনেছেন। চাহিদা কম থাকলে সহজভাবে বাঁচা যায়। মনোজ ভণিতা পছন্দ করেন না। বলেন মিথ্যে কথা ভন্ডামিতে অনেক সমস্যা, সেই মিথ্যে হাবভাব বজায় রাখতে অনেক অভিনয় করতে হয়। নিজের অভিনয়টা মন দিয়ে করতে গিয়ে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন:

লাইট সাউন্ড ক্যামেরা অ্যাকশন, পর্ব-৭: গোদারের ব্রেথলেস ও প্যারিসের শঁসেলিজে

হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-৬: মজল আঁখি মজেছে মন, ইমোজি তোদের ডাকল যখন

তাই নতুন করে অভিনয় করার কথা ভাবতে পারেন না। তিনি মনে করেন তিনি আর পাঁচজন মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীর মতোই একটা কাজ করেন সংসারকে বজায় রাখতে। আর পাঁচজন স্বাভাবিক সংসারী বাবার মতোই গাড়ি নিয়ে মেয়েকে টিউশনে ছাড়তে যান। কাজ থেকে ফেরত আসার সময় গাড়ি থামিয়ে সবজি বাজারে সবজি কেনেন। নিজেকে বিখ্যাত স্টারসুলভ কোন ফ্রেমে বন্দি করতে চান না মনোজ বাজপেয়ি। তিনি অন্তর্মুখী মানুষ একা থাকতে ভালোবাসেন। আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী।

ভোঁসলে ছবির রিটায়ার্ড কনস্টেবল গণপথ ভোঁসলে আর গালি গালিয়াঁ ছবির কুদ্দুস দু’ জনেই একটা ভাঙাচোরা বাড়িতে একাই থাকেন। দু’ জনের মধ্যেই একটা মানসিক কষ্ট রয়েছে কিন্তু দু’ জনের মধ্যে অভিনয়ের তফাতটা এত অক্লেশে করেছেন মনোজ যেটা তাকিয়ে দেখতে হয়। অভিনয়ের শিক্ষার্থীরা যেটার মধ্যে দাঁড়ি কমা, কোলন, হাইফেন, সেমিকোলন বা কোটেশনের তফাৎ বুঝতে পারবেন। আলিগড় ছবির সেই প্রফেসর তিনিও একা থাকেন। কিন্তু তাঁর চরিত্রের ভিন্ন সরগম ভিন্ন ঠাট ভিন্ন তাল।
পরিচালক ঈশ্বর নিবাসের শূল ছবিতে অসৎ সামাজিক পরিমণ্ডলে যুদ্ধে মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত ইন্সপেক্টর সমর প্রতাপ সিং আর সাইলেন্স…ক্যান ইউ হিয়ার ইট ছবিতে খুনিকে খুঁজে বেড়ানো এসিপি অবিনাশ ভার্মা দু’ জনেই সৎ ও দক্ষ পুলিশ অফিসার কিন্তু একজন অন্য জনের তুলনায় কয়েক আলোকবর্ষ দূরে।

মনোজ নিজেকে একেবারেই সিরিয়াসলি নেন না। তিনি বোধহয় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন সাফল্য ধুপের সুগন্ধ। ধুপকাঠি জ্বলে ছাই হয়ে যাবে সুগন্ধ হারিয়ে যাবে, আবার একই সুগন্ধ ছড়ালে মানুষের মনে কোনও ছাপ থাকবে না। তাই পরিশ্রমের আগুনে নিজেকে পুড়িয়ে একের পর এক নতুন সুগন্ধে ভরিয়ে দিতে হবে জগত।
আরও পড়ুন:

ইতিহাস কথা কও, কোচবিহারের রাজকাহিনি, পর্ব-২: রাজাদের স্থাপত্য-কীর্তি ও রাজধানী

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-১৪: রাজনীতিতে নিজের উন্নতি করতে গেলে দেবগুরু বৃহস্পতির মতো মানুষের উপরেও বিশ্বাস করা অনুচিত

যাঁরা ভোঁসলে বা শূল দেখেছেন বা দেখবেন তাঁরা গণপথ বা সমরপ্রতাপের মধ্যে একবিন্দু সাইলেন্সের এসিপি অবিনাশ বার্মাকে খুঁজে পাবেন না। অবিনাশের মাথার মধ্যে অবিরত বিশ্লেষণ চলে, সে কানে যা শুনছে তা যেন চোখে দেখে। মানে অবিনাশের অন্তর্দৃষ্টিতে দেখে। আবার সঙ্গে সঙ্গে অবিনাশ যা ভাবছে সেটাও তাকে বদলে দেয়। অভিনয়ের এই রেশমি সুতোর সূক্ষ্ম-বুননকে ক্যামেরা মারফৎ আমার আপনার মনের মণিকোঠায় স্মৃতির ফরম্যালিনে চিরনতুন সতেজ রাখতে জানেন, এনএসডি থেকে চার চারবার বাতিল হওয়া মনোজ বাজপেয়ি।

ফ্যামিলি ম্যান। ছবি: সংগৃহীত।

‘‘সির্ফ এক বান্দা কাফি হ্যায়’তে’ এক অন্যধারার অভিনয়ে তিনি কেন কাফি হ্যায় কেন তিনি একাই একশ সেটা বুঝতে কারও অসুবিধে হয় না!!

সিনেমার অভিনয়ে কণ্ঠস্বর সংলাপ ভঙ্গি ম্যানারিজম স্টাইল এসব পেরিয়ে একটা তীব্রতা লাগে, যা সিঙ্গল স্ক্রিন মাল্টিপ্লেক্স এলসিডি ল্যাপটপ স্মার্টফোনের পর্দা থেকে এক অদৃশ্য ব্লু-টুথে সরাসরি দর্শকের মস্তিষ্ক ও হৃদয়স্পর্শ করে। স্মৃতির পাতায় পারমানেন্ট ট্যাটু হয়ে আজীবন থেকে যায়। তার জন্যে পেশির আন্দোলন, রোলস রয়েস বা বেন্টলে’র আস্ফালন, আকাশচুম্বী পেন্টহাউস, নিজস্ব মাসলম্যান কিম্বা টিকে থাকার জন্যে আলপিন থেকে এলিফ্যান্টের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখাতে হয় না। তার জন্য চিত্রজগতের সম্রাট বা যুবরাজ হবারও কোনও প্রয়োজন নেই। বিহারের পাহাড়-নদী-গাছগাছালিতে ভরা কিষাণ পরিবারের সাধারণ ছেলেটি— সে কথা তাঁর বিনীত নিবেদনে প্রমাণ করছেন। প্রতিটি দিন। প্রতিটি নতুন চরিত্রে। সে আজও একই ভাবে মাটিতে পা রেখে মাথা নিচু করে আছে। তাঁর অভিনীত চরিত্রেরা দম্ভের সঙ্গে বিচরণ করছে ভারতীয় চিত্রজগৎ।
* বসুন্ধরা এবং… দ্বিতীয় খণ্ড (Basundhara Ebong-Novel Part-2) : জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’।

Skip to content