সাবমেরিনের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
অতলান্তিক মহাসাগরের অতলে ১১১ বছর আগে ডুবেছিল টাইটানিক জাহাজ। গত রবিবার তারই ধ্বংসাবশেষ দেখার জন্য পাঁচ যাত্রীকে নিয়ে রওনা দিয়েছিল ডুবোজাহাজ টাইটান। তবে রওনা দেওয়ার ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরই টাইটানের ‘মাদারশিপ’ পোলার প্রিন্সের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জানা গিয়েছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার অনেক পরে আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে খবর আসে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে দ্রুত খবর পৌঁছলে তল্লাশি অভিযান আরও আগে শুরু করা সম্ভব হত। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট নাগাদ মাদারশিপের সঙ্গে টাইটানের যোগাযোগ সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। টাইটান ডুবোজাহাজটি ওশানগেট নামে একটি সংস্থার। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে সংস্থাটি দ্রুততার সঙ্গে আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীকে খবর দেয়নি। ওশানগেট আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনীকে খবর দেয় প্রায় ৮ ঘণ্টা পর বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট নাগাদ। আরও অনেকটা পরে রবিবার রাত ৯টা ১৩ মিনিট নাগাদ কানাডার উপকূলরক্ষী বাহিনীকে খবর পাঠায় ওশানগেট।
আরও পড়ুন:
এই দেশ এই মাটি, সুন্দরবনের বারোমাস্যা, পর্ব-১: সুন্দরবনের শেকড়ের খোঁজে
সমালোচনায় তাঁরও খারাপ লাগে, তবে ছবি ফ্লপ হলে দমে যান না, ফের ঝুলিভর্তি কাজ নিয়ে আসছেন অক্ষয়
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ব্রিটেনের কোটিপতি ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং ওই সাবমেরিনটিতে রয়েছেন। এই প্রৌঢ় অভিযাত্রীর বয়েস ৫৯ বছর। তিনি বিভিন্ন অজানা জায়গায় গিয়ে নতুন কিছু আবিষ্কার এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পছন্দ করেন। হামিশ হার্ডিং গত রবিবারই সমাজমাধ্যমের পাতায় টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। হামিশ হার্ডিং ছাড়াও টাইটানে রয়েছেন পাকিস্তানের দুই ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ, তাঁর পুত্র সুলেমান, ওশানগেট সংস্থার মুখ্য আধিকারিক স্টকটন রাশ এবং ফরাসি বিমানচালক পল হেনরি নার্জিওলেট।
ডুবোযানের যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ১ শতাংশ বলে দাবি করেছেন আমেরিকার নৌসেনা বাহিনীর নিউক্লিয়ার সাবমেরিন কমান্ডার পদে কর্মরত লেফটেন্যান্ট ডেভিড মার্কেট। ওশানগেট ২০২১ সাল থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখানোর অভিযান চালু করে। এর জন্য যাত্রী প্রতি আড়াই লক্ষ ডলারের নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে আনে তারা।
ডুবোযানের যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র ১ শতাংশ বলে দাবি করেছেন আমেরিকার নৌসেনা বাহিনীর নিউক্লিয়ার সাবমেরিন কমান্ডার পদে কর্মরত লেফটেন্যান্ট ডেভিড মার্কেট। ওশানগেট ২০২১ সাল থেকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখানোর অভিযান চালু করে। এর জন্য যাত্রী প্রতি আড়াই লক্ষ ডলারের নিয়ে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে আনে তারা।
আরও পড়ুন:
এক মুহূর্তও ফোন, ল্যাপটপ ছাড়া থাকতে পারেন না! জানেন কি, নিজের অজান্তেই ত্বকের ক্ষতি করছেন?
হুঁকোমুখোর চিত্রকলা, পর্ব-২: রথ দেখো কলা বেচো
উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং কানাডার সেনাবাহিনী যুদ্ধবিমান ও জাহাজ নামিয়ে তল্লাশি শুরু করে। ওশানগেট জানিয়েছে, টাইটান লম্বায় ২১ ফুট। ওজন ১০,৪৩২ কিলোগ্রাম। এই ডুবোজাহাজটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট গভীরে জলের প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে সক্ষম। যদিও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের দাবি, টাইটানে ৯৬ ঘণ্টার জন্য অক্সিজেন মজুত থাকলেও নিরাপদ নয়। কারণ এই পরিমাণ অক্সিজেন মজুত থাকলেও টাইটানের ফাটল ধরা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যে কোনও সময় পাইপে ফাটল ধরতে পারে। এমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞরা। ডুবোজাহাজের তলায় থাকা ওয়াটার সিঙ্ক দিয়েও ভিতর জল ঢুকে যেতে পারে। এরকম হলে ভিতর হাওয়া বাতাস চলাচলের অসুবিধা হবে। আর এমনটা হলে সে সময় টাইটানের ভিতর যে সাংঘাতিক চাপ সৃষ্টি হবে, তা সমুদ্রের জলের চেয়ে প্রায় ৪০০ গুণ বেশি!
আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি সবাই আশা করে রয়েছেন। তাঁরা ভাবছেন উদ্ধারকাজে আমরা সফল হব। তবে সত্যিটা হল, উদ্ধারকাজের জন্য অন্য ডুবোজাহাজ আমরা সমুদ্রের নিচে ২০০০ ফুটের বেশি নামাতে পারি না।’’
আমেরিকার উপকূলরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি সবাই আশা করে রয়েছেন। তাঁরা ভাবছেন উদ্ধারকাজে আমরা সফল হব। তবে সত্যিটা হল, উদ্ধারকাজের জন্য অন্য ডুবোজাহাজ আমরা সমুদ্রের নিচে ২০০০ ফুটের বেশি নামাতে পারি না।’’