রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

বাবা-মা হতে চেয়েও পারছেন না, এমন সংখ্যা কম নয়। হালের গবেষণা জানাচ্ছে, মহিলা বা পুরুষ, উভয়ের সন্তানহীনতার নেপথ্যে রয়েছে বয়স, আধুনিক জীবনযাত্রা, উদ্বেগ, দূষণ, ফসলে কীটনাশকের ব্যবহার এবং খাদ্যাভ্যাস। বন্ধ্যাত্বর পিছনের শারীরিক নানা জটিলতা হয়তো দম্পতির পক্ষে সামলানো সম্ভব নয়। তবে বেশ কিছু বিষয় দম্পতিরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।

স্থূলতা পুরুষ বা মহিলাদের হরমোনের তারতাম্য ঘটাতে পারে। তাই ওজন কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ জন্য ফাইবারযুক্ত সঠিক খাদ্যাভ্যাসের কোনও বিকল্প নেই। অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা ওভ্যুলেশন (ওভামের পরিপক্ব হওয়ার প্রক্রিয়া) এবং প্রেগন্যান্সি আসার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। দেখা গিয়েছে, স্থূলকায় মহিলাদের প্রেগন্যান্সি আসতে দেরি হয়।

তবে খাদ্যাভ্যাসের স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন প্রজনন ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং সন্তানধারণেও সহায়তা করে। প্রজনন ক্ষমতা বজায় রাখতে সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং সঠিক ওজনের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
 

প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে পাতে কী কী রাখবেন?

 

ডিম

ডিমে প্রজননে সহায়ক ভিটামিন-বি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। এছাড়াও রয়েছে ওমেগা থ্রি ও কোলিন। ডিম প্রাণীজ প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। এই পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
 

চিজ বা পনির

চিজ বা পনিরে পাওয়া যায় পলি অ্যামাইন প্রুট্রেসিন। এই বিশেষ উপাদান প্রজনন ক্ষমতার জন্য ভীষণ উপকারী।

এখন যে পিৎজা, বার্গার, পাস্তা ইত্যাদি খাবার পাওয়া যায় সেগুলোর প্রধান উপাদান হল চিজ। যা আসলে প্রজনন ক্ষমতায় সাহায্য করে। তবে এই সব খাবার বাড়িতে বানিয়ে খেলেই ভালো। প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে পনির বিশেষ ভূমিকা নেয়। তবে অতিরিক্ত পনির খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে ক্যালরির পরিমাণ যেমন বেশি থাকে, তেমন স্যাচুয়েটেড ফ্যাট বেশি। তাই সঠিক পরিমাণে খেতে হবে।

আরও পড়ুন:

হেলদি ডায়েট: এই ১০ খাবার শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও অন্ত্রের যত্ন নেয়, জানতেন?

গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬৪: কবির ভালোবাসার নজরুল

 

আখরোট

আখরোটে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই দুই উপাদন প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
 

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

আয়রন ঘটিত যৌগ যুক্ত খাবার মহিলাদের ডিম্বাণু গঠনে সাহায্য করে। মুরগির মাংস, মাটন, অর্গান মিট, ড্রাই ফ্রুটস যেমন খেজুর, কাজু, কিশমিশ, গুড় ইত্যাদি থেকে যথেষ্ট আয়রন পাওয়া যায়। আয়রন অ্যানিমিয়া ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে।
 

ডাল এবং মটরশুঁটি

ডালে উচ্চমাত্রায় পলি অ্যামাইড স্পার্মাটিন থাকে, যা শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্তকরণে সহায়তা করে। ডাল ও মটরশুঁটিতে থাকা আঁশ হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এক কথায় বলা যায়, ডাল এবং মটরশুঁটিতে প্রজননে সহায়ক কিছু পুষ্টিগুণ আছে। তাই খাদ্য তালিকায় এগুলো রাখা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন:

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১২: হঠাৎ স্নানঘর থেকে পঞ্চমের চিৎকার ‘মিল গয়া মিল গয়া’, সৃষ্টি হল সেই জনপ্রিয় গান ‘মুসাফির হুঁ ইয়ারো’

বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, বৈষম্যের বিরোধ-জবানি

 

সবুজ শাকসব্জি

সবুজ শাকসব্জি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণের উৎকৃষ্ট উৎস। এগুলো শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবুজ শাক সব্জিতে বিভিন্ন ধরনের প্রজনন উপযোগী পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ফলে এই সব খাবার পাতে রাখা যেতে পারে।
 

সূর্যমুখী বীজ

ভিটামিনই পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ায়। এই ভিটামিন শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়িয়ে তার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আর এই ভিটামিন-ই এর খুব ভালো একটি উৎস হল সূর্যমুখীর বীজ। তাই খাদ্য তালিকায় এটি রাখা যেতে পারে। তবে আমাদের এখানে সূর্যমুখী বীজ খাওয়ার প্রচলন খুব একটা বেশি নেই। সেই ক্ষেত্রে সূর্যমুখীর তেল রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এক আউন্স সূর্যমুখী বীজে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভিটামিন-ই থাকে।

আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-২১: ক্যানসার মানেই মৃত্যু?

অমরনাথের পথে, পর্ব-৩: চন্দনবাড়ি থেকে শুরু হল যাত্রা

 

লেবু

লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন-সি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এতে প্রচুর পরিমাণে পলি অ্যামাইন প্রুট্রেসিন থাকে, যা সিমেনের গুণগত মান বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রুট্রেসিন ডিম্বাণুতে ক্রোমোজোমের ত্রুটির সম্ভাবনা প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন লেবু জাতীয় সাইট্রাস ফল যেমন কমলালেবু, বাতাবি লেবু, কমলা লেবু রাখতে পারেন।
 

টমেটো

টমেটোতে রয়েছে লাইকোপেন, যা এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। টমেটো আবার প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিও সাহায্য করে। লাইকোপেন মূলত পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শুধু কাঁচা টমেটো নয়, রান্না করা টমেটোতেও প্রায় সমপরিমাণ লাইকোপেন থাকে। তাই একবাটি টমেটোর সুপ বা টমেটো সস খাদ্য তালিকায় রাখা যেতে পারে
 

বেদানা

বেদানাতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শুক্রাণুর ঘনত্ব এবং সঞ্চালন দুইই বাড়ায়।

যোগাযোগ: ৯৮৩০৭৬৮১৫২

* হেলদি ডায়েট (Healthy Diet): সুতনুকা পাল (Sutanuka Paul), পুষ্টিবিদ, ডায়েট-টু-ফাইট।

Skip to content