বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী।

এখন পছন্দ মতো জায়গায় জমি পাওয়া দুষ্কর। বড় বাড়ি তৈরি করাও প্রায় অসম্ভব। তাই বাস্তুশাস্ত্র মতে, ষোল ঘরের বাড়ি আজকের দিনে কল্পনা করাও বৃথা। ষোল কক্ষযুক্ত বাড়ির সম্ভব না হলে এগারো কামরা বা নয় কামরা বা সাত কামরা অথবা পাঁচ কামরাযুক্ত বাড়ি করা যেতে পারে। তাও যদি সম্ভব না হয় অন্ততপক্ষে তাহলে তিন কামরার বাড়িও ভালো। এই প্রেক্ষিতে আধুনিক প্রয়োজনের কথা মনে রেখে আদর্শ বাড়ির জন্য বিভিন্ন অনুকূল দিক ও অন্যান্য পরামর্শের কথা বলা হয়েছে।
 

বাড়ি তৈরি করার সময়

জমির উত্তর পূর্ব কোণে ভূমি পুজো করা উচিত। শাস্ত্র মতে পুজো সম্পন্ন করার পরই প্রথম খনন শুরু করা কর্তব্য। চারদিকে জমিকে প্রথমে সমান ভাবে চৌরস করে নিতে হবে। এরপর জমির ঢাল রাখতে হবে উত্তর পূর্বে। ভিত্তিপ্রস্তর চন্দ্র মাস অনুসারে উপযুক্ত দিকে বিশেষ অনুষ্ঠানপূর্বক স্থাপন করতে হবে। সে সম্বন্ধে অভিজ্ঞ জ্যোতিষের মতানুসরণ করা উচিত। নির্মাণ কাজ প্রথম দিকে দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে শুরু করতে হবে। পূর্ব ও উত্তরে বেশি জায়গা ছাড় দিতে হবে। উঁচু আর মোটা করতে হবে মূল বাড়িটি রাস্তার তল থেকে দু’ ফুট উঁচু করে করা উচিত।

মনে রাখা দরকার যে, প্রথম খনন করার সময় শুভ মুহূর্ত অনুসরণ করা অবশ্য কর্তব্য পর্যায়ক্রমে সর্বপ্রথম উত্তর-পূর্ব তারপর উত্তর-পশ্চিম দক্ষিণ-পূর্ব এবং পরিশেষে দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এইভাবে খনন করা উচিত।

আরও পড়ুন:

বাস্তুবিজ্ঞান, পর্ব-১৮: বাস্তু মতে আপনার বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বার কোন দিকে হওয়া উচিত?

ভবিষ্যবাণী: ভিন দেশে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন? জেনে নিন গ্রহের কোন অবস্থানে আপনার বিদেশ যাত্রা পাকা হতে পারে

পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৪: একজন জ্ঞানী পণ্ডিত এবং ব্যবসায়ীর মধ্যে রাজা কাকে বেশি গুরুত্ব দেবেন?

 

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

বাস্তু বিশেষজ্ঞ ও জ্যোতিষীর পরামর্শ অনুযায়ী শুভ ভিতি প্রস্তর স্থাপন করা উচিত। প্রথম খননের ঠিক বিপরীত নিয়মে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে হবে। পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ-পশ্চিম দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর-পশ্চিম ও পরিশেষে উত্তর পূর্ব।

আরও পড়ুন:

শাশ্বতী রামায়ণী, পর্ব-৪৬: ব্যর্থ প্রেমের বহ্নিশিখা

মহাকাব্যের কথকতা, পর্ব-১০: প্রশিক্ষক গুরু বিশ্বামিত্র, নারীহত্যা না মানবধর্ম?

পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-১১: ‘কটি পতঙ্গ’ ছবিতে পঞ্চমের সুরে কিশোর নিজেকে উজাড় করে দেন

 

সীমানা প্রাচীর

বাড়ির চারদিকে সীমানা প্রাচীর হওয়া বাঞ্ছনীয়। সীমানা প্রাচীর এবং মুখ্য বাড়ির মাঝখানে যেন ছাড় থাকে সীমানা প্রাচীরের পশ্চিম দিকে দেওয়াল পূর্ব দিকের দেয়ালের চেয়ে যেন বেশি উঁচু থাকে যদি দক্ষিণ-পশ্চিমের দেওয়াল উঁচু করা সম্ভব না হয়। তবে যেন দেওয়ালটিকে তুলনামূলকভাবে একটু মোটা করে তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন:

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৯: পাকা আম খাবেন, নাকি কাঁচা আম?

ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে, বাচ্চা খেতে খেতে টিভি দেখে কিংবা ফোন ঘাঁটে?

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৯: কুরদার ইকো রিসর্ট—অনাবিস্কৃত এক মুক্তা

 

সীমানা প্রাচীরের দ্বার

সীমানা প্রাচীরের দরজা নির্ভর করছে জমিটি কোন মুখী তার ওপরে সীমানা প্রাচীরের দরজা কীভাবে তৈরি করতে হবে সে সমন্ধে প্রামাণিক সূত্রগুলি প্রাচীন বাস্তুশাস্ত্রে বলা আছে। নিচে দেখে নিন একঝলকে।

পূর্বমুখী জমি উত্তর-পূর্বদিকের পূর্বে করতে হবে।

পশ্চিমমুখী জমি উত্তর-পশ্চিমের পশ্চিম দিকে করতে হবে।

উত্তরমুখী জমি উত্তর-পূর্বের উত্তর দিকে করতে হবে

দক্ষিণমুখী জমি দক্ষিণ পূর্বের দক্ষিণ দিকে করতে হবে।
 

সীমানা প্রাচীরের দরজা যে দিকে করা যাবেই না

দক্ষিণ-পূর্ব দিকের পূর্ব দিকে।

দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের পশ্চিম দিকে।

উত্তর-পশ্চিম দিকের উত্তর দিকে চার দক্ষিণ দিকের মাঝখানে।

গ্যারেজ হওয়া উচিত দক্ষিণ-পূর্ব বা উত্তর পশ্চিম অঞ্চলে।

* বাস্তুবিজ্ঞান (Vastu Shastra): সুরেন্দ্র কাপুর (Surendra Kapoor), বিশিষ্ট বাস্তুবিদ।

Skip to content