ছবি: প্রতীকী।
তবে বর্তমানে সারা পৃথিবীতে লঙ্কা উৎপাদনের দিক থেকে চিনের স্থান প্রথম। চিন দেশের নাগরিকরা খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে লঙ্কা রাখেন। পৃথিবীতে উৎপাদিত মোট লঙ্কার প্রায় অর্ধেক পরিমাণই উৎপন্ন হয় এই দেশে। আমাদের ভারত বা কম যায় কিসে। পৃথিবীর ৯০টি দেশে লঙ্কা রপ্তানি করে ভারত। কারণ, আমাদের দেশের লঙ্কার গুণগত মান অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় অনেক অনেক বেশি উন্নত। আবার আমাদের দেশের মধ্যে লঙ্কা উৎপাদনে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে অন্ধপ্রদেশ রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও যেমন মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর ইত্যাদি জেলাতেও লঙ্কা উৎপাদন করে যথেষ্ট পরিমাণে।
এ ভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে প্রায় পঞ্চাশ হাজার লঙ্কার প্রজাতি ছড়িয়ে রয়েছে। লঙ্কার আকৃতি, রঙ এবং ঝালের তীব্রতা অনুযায়ী ভারতের কয়েকটি লঙ্কার প্রজাতির নাম হল ধানি লঙ্কা, কাড্ডি, সান্নাম, জ্বালা, কানঠারি, কাশ্মীরি লাল, সূর্যমুখী, উজ্জ্বালা, পাঞ্জাবি লাল, অপর্ণা, জওহর ইত্যাদি।
পাঠকদের মনে হতেই পারে গ্রীষ্মের অত্যাধিক দাবদাহের মধ্যে ঠান্ডা ও মিষ্টি কোন ফলের পরিবর্তে ঝাল লঙ্কার কথ কেন শোনাচ্ছি! কিন্তু লঙ্কা অত্যাধিক গরমে আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। বাস্তবিক ক্ষেত্রে লঙ্কা হল ঘর্মস্রাবকারক অর্থাৎ কাঁচালঙ্কা নিয়মিত খেলে তা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ঝাল লঙ্কা শরীরের কুলিং প্রসেসকে সক্রিয় রাখে এবং দেহের ভেতরে জমে থাকা বিভিন্ন টক্সিন টেনে বার করে দেয়। এর ফলে শরীর ভেতর থেকে অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে ওঠে। এই কারণবশতই হয়তো ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের লোকেরা নিজেদের শরীরকে অত্যাধিক গরমের হাত থেকে ঠান্ডা রাখতে নিজেদের খাবারের সঙ্গে বেশি পরিমাণে লঙ্কা খান।
প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তাই লঙ্কার কথা ঘুরেফিরে এসেছে। অর্থাৎ লঙ্কার গুণাগুণ বারবার ফল দিয়েছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে।
এক নজরে
হাত বাড়ালেই বনৌষধি: ডাব ও নারকেলের ইতিকথা
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৩: হৃদয়পুরের লক্ষ্যপূরণ ‘কঙ্কাবতীর ঘাট’
পঞ্চমে মেলোডি, পর্ব-৯: ‘মেরা কুছ সামান…’ গানে সুর দেওয়ার প্রস্তাবে গুলজারকে পত্রপাঠ বিদায় জানান পঞ্চম
কী কী উপাদানে ভরপুর?
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা লঙ্কা থেকে আমরা পাই প্রোটিন ২.৯ গ্রাম, ফ্যাট ০.৬ গ্রাম শর্করা ৩ গ্রাম ফাইবার ৬.৫ গ্রাম। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ থেকে থাকে লঙ্কাতে, বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থগুলোর পরিমাণ হল ক্যালশিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৮০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৭২ মিলিগ্রাম, কপার ১.৪ মিলিগ্রাম, ১.৩৮ মিলিগ্রাম এবং জিংক ১.৭৮ মিলিগ্রাম। এগুলো ছাড়াও থাকে নানান ধরনের ভিটামিন। যেমন ভিটামিন সি, থাইয়ামিন, রাইবোফ্ল্যাবিন, ভিটামিন-এ লঙ্কাতে উপস্থিত থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম লঙ্কা থেকে আমরা ২৯ কিলো ক্যালরি শক্তি পেয়ে থাকি।
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৩: যার কাছে টাকা-পয়সা থাকে এ জগতে সেই হল পণ্ডিত
ভবিষ্যবাণী, আপনার জীবনে বাস্তুশাস্ত্রের আটটি দিকের গুরুত্ব ঠিক কতটা? জেনে নিন একঝলকে
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৬১: চাষাবাদ নিয়েও রবীন্দ্রনাথ ভেবেছেন
চিকিৎসাশাস্ত্রে এর ব্যবহার
ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে
কানের ব্যথা ও যন্ত্রণায়
কোলাইটিস নিরাময়
বিছে মৌমাছি বা বিষাক্ত পোকার কামড়ের জ্বালার উপশমে
বাতের ব্যথা উপশমে
হার্টকে সুস্থ রাখতে
ইমিউনিটি বাড়াতে
অজীর্ণ প্রতিরোধে
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে
কোষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণে
দূষিত পদার্থ নিষ্কাশন করে
এছাড়াও কাঁচা লঙ্কা এবং শুকনো লঙ্কা আরও অনেক রোগ প্রতিরোধ করে। হার্ট, ত্বক, চোখ, চুল সুস্থ রাখতেও লঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৭: কোরবা হয়ে সাতরেঙ্গা
দশভুজা: জীবনে যা কিছু করেছি, প্রত্যয়ের সঙ্গে করেছি: কানন দেবী/২
বৈষম্যের বিরোধ-জবানি, পর্ব-১৮: গৃহ-সহায়িকার পাঁচালি এবং আমাদের ভদ্র সমাজ
লঙ্কার আনুষাঙ্গিক ব্যবহার
লঙ্কাকাণ্ডের শেষে একটা কথা বলতেই হয় যে প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রই হোক বা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় হোক প্রমাণিত যে, লঙ্কার মধ্যে উপস্থিত যৌগগুলি মানুষের নানাবিধি রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভৌতিক উপন্যাস: মিস মোহিনীর মায়া, পর্ব-১: জলের তলায় তার শরীরের কোনও অস্তিত্ব নেই!
প্রসঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, জাপানের মতো এ দেশের তরুণ তরুণীরাও হিকিকোমোরি-র সমস্যায় ভুগছেন না তো?
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৮: শুঁটকি মাছে কি আদৌ কোনও পুষ্টিগুণ আছে?
সাবধানতা