রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

।। মোকাবিলা।।

মা কি ঈশ্বরকে দেখতে পায় নাকি মা’র মুখ দিয়ে স্বয়ং জগদীশ্বর এসব বলায়। সিপির সঙ্গে কথা বলার সময় মা’র কথাটা মনে হতেই বিনয় কথাগুলো এভাবে বলেছিল। আগে ভাবেইনি এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বয়ং সিপি তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হবেন। থাক না তার ক্রাইম ব্রাঞ্চে বন্ধু। তাই এই কথাগুলো বলবার আগে কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। কিন্তু তার বলা কথাগুলো নিশ্চয়ই মানুষ হিসেবে সিপিকে স্পর্শ করেছিল।

যে ভাবে সেদিন আছাবাম চা বাগান থেকে দেনপো’র জিপে করে ডিব্রুগড় যাবার সময় চলন্ত গাড়িতে বসে মা’র বলা কথাগুলোই তড়িঘড়ি সাদা কাগজে গুছিয়ে লিখে পিটারসন সাহেবকে পাঠাতে আশ্চর্য্যভাবে সাহেব সব মেনে নিয়েছিলেন।

তারকবাবুর কথায় খেয়াল হয় যুদ্ধটা থামেনি—চলছে।

জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জকে বিনয়কান্তি এ ভাবেই চোয়াল শক্ত করে মোকাবিলা করেছে। যতবার বিপদে পড়েছে ততবার মাথার মধ্যে পরপর প্ল্যান সাজিয়ে গিয়েছে। কোনটার পরে কোনটা করবে? কী ঘটলে অন্য কী কী করতে হবে তার জন্যে সবরকম ভাবে তৈরি থেকেছে বিনয়। এখন আর সে কোন কথা বলবে না। যেরকম ভেবেছে ঘটনাপ্রবাহ সেইদিকে গড়ালে পরের সিদ্ধান্ত নেবার আগে মাকে আর স্বর্ণকে একসঙ্গে সব জানাবে।

বিনয় ঘটনার পরম্পরা অনুযায়ী দু’ তিন রকম সিদ্ধান্ত নিতেন। ঠিক যা ভাবছেন সেই মতো ঘটনা ঘটে গেলে সিদ্ধান্ত এক, তেমন না হলে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দুই বা তিন। এত বছর একসঙ্গে কাজ করতে করতে তারক নিয়োগী সেটা জানতেন। গলা নামিয়ে বিনয়কান্তি তাঁর কালপুরুষকে প্রশ্ন করলেন—

এখন তো সকলকে ছেড়ে দিচ্ছে। এতটা ভাবেনি। ভেবেছিলাম হয়তো শুধু…তাই ওকে বাইরে পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন কী মনে হয়?

আপনার প্রথম সিদ্ধান্তটাই ঠিক ছিল বিকেডি।

ঠিক আছে।

তবে আজ রাতেই এতটা মোটর জার্নির ধকল বুড়ি বা ওর ছেলে কেউই নিতে পারবে না। রাস্তাঘাটের যেমন অবস্থা তাতে নাইট ড্রাইভিংটাও বোধহয় একটু ঝুঁকির হয়ে যাবে।

কী করা উচিত?

আজ রাতটা গ্রে স্ট্রিটের বাড়িতে থেকে গেলে কেমন হয়। কাল একদম আর্লি মর্নিং-এ বেরিয়ে যাওয়া যাবে।

বেশ। আমি মেজখোকাকে যেতে বলেছিলাম। বুড়ি, ওর ছেলে আর আপনি থাকবেন প্রথম গাড়িতে। মেজখোকা পেছনের গাড়িতে আপনাদের ফলো করবে। যদি রাস্তায় বা গাড়ির কোনও অসুবিধে হয়।

আমি বলি কি যদি কোনও সমস্যা না থাকে, তাহলে বিকাশবাবুর সঙ্গে বুড়ি আর সেজো বউমাকেও পাঠানো যায়। বুড়ি, বুড়ির ছেলে সেজবৌমাকে নিয়ে বিকাশবাবু সামনের গাড়িতে যান। আমি পেছনের গাড়িতে ফলো করবো।

সেক্ষেত্রে তুমি একা নয়, ছোটখোকা তোমার সঙ্গে থাকবে। সে যাদবপুর থানায় গিয়েছিল বোধহয় এতক্ষণে ফিরে এসেছে। বুড়ির ছেলেকে রিলিজ করলে ওকে নিয়ে তুমি সোজা গ্রে স্ট্রিট চলে যেও। বুড়ি সেজবউ মা ছোটখোকাকে নিয়ে মেজ খোকা এখান থেকে গ্রে স্ট্রিট যাবে।

ফোনটা রাখার পর বিনয়কান্তি বসুন্ধরার দিকে তাকালো। বসুন্ধরা অবাক

কী রে? কী দেখছিস?

স্বর্ণও বিনয়কান্তিকে চুপ করে দেখছে।

আজকেও মা জিতিয়ে দিল স্বর্ণ।

আমি?
আরও পড়ুন:

দুই বাংলার উপন্যাস: বসুন্ধরা এবং, ২য় খণ্ড, পর্ব-১৪: তোকে দেখে দশটা লোক শিখবে, কারও ক্ষতি না করেও নিজের ভালো করা যায়…

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১২: সকালবেলার আগন্তুক

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৫৩: বায়োফ্লক পদ্ধতিতে সফলভাবে মাছচাষ করছে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও তামিলনাড়ু

হ্যাঁ মা তুমি! স্পেশাল ব্রাঞ্চে আমার এক পরিচিত বন্ধুস্থানীয় মি: সোম খুব হেল্প করেছেন। কিন্তু সিপি আমার অনুরোধ রাখবেন এতটা আমি ভাবতে পারিনি।

মা তুমি সবসময় বলো কারও মনে যেন আঘাত না লাগে। একা বুড়ির ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে এলে অন্যদের খারাপ লাগত, তোমার কথা মনে হতে সকলের জন্যে বললাম।

বেশ বলেছ।

বসুন্ধরার মাথায় অন্য চিন্তা।

আচ্ছা ওদের খাতায় বুড়ির ছেলের নামটাম কোথাও থাকবে না তো? একটা সারা জীবনের ব্যাপার।

মনে হয় না। সে ভবিষ্যতে ঈশ্বর সঙ্কটে ফেললে তিনিই বাঁচাবেন। এবার তোমাদের দু’জনের মনে জমে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিচ্ছি। এত রাতে বুড়ি কোথায় যাবে তাই তো?

সোফা ছেড়ে উঠে হাল্কা পায়চারি করতে করতে বিনয় কথা বলে।

সত্যি সত্যি কি হতে যাচ্ছে সেটা যতক্ষণ না শুনছিলাম মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না তাই তোমাদের বলতে পারিনি। বুড়ির ছেলে সৌরভকে এখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে মা।

স্বর্ণ চমকে বসুন্ধরাকে দেখে বসুন্ধরা স্বর্ণ’র হাতটা শক্ত করে ধরেন।

তুই বল বিনু।

সৌরভকে এখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে। কলকাতা থেকে একেবারে একটা অন্য পরিবেশে। অমিতাভ সেন মনীষা সেনের চোখের সামনে দেখা এই গ্রেপ্তারি ওর মনে একটা ভীষণ ছায়া ফেলবে। এখানে থাকলে কদিন হয়তো স্কুলে যাবে না। তারপর আবার একটু একটু করে সব স্বাভাবিক হবে। আবার স্কুল আবার এসব নিয়ে আলোচনা। ক্লাসে অন্য যারা। তাদের কৌতুহল। টিচারদের কৌতুহল। এগুলো থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বিকেলবেলায় যখন প্রথম ঘটনাটা শুনেছিলাম তখন পরপর দুটো ফোন করেছিলাম একটা স্পেশাল ব্রাঞ্চে সোমকে আর বারানসির অদ্বৈত আশ্রমে বাচ্চা মহারাজকে।
আরও পড়ুন:

উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-১৫: যখন ‘ওরা থাকে ওধারে’

স্বাদে-আহ্লাদে: স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন মুচমুচে আলুর চিপস

আমি বনফুল গো: তিনিই ছিলেন ভারতীয় ছবির প্রথম সিঙ্গিং সুপারস্টার/১

বসুন্ধরা বাচ্চা মহারেজের নাম শুনেই যেন এক ধাক্কায় চল্লিশটা বছর পেছিয়ে বারানসির অদ্বৈত আশ্রম-এ পৌঁছে যান।

কেমন আছেন বাচ্চা মহারাজ? অনেকটা বয়স হয়ে গেল।

হ্যাঁ মা সেটা ১৯৩০, তখন বোধহয় বছর ৩২ ছিলেন। এখন বছর ৭২ হবেন। ওকে সব জানালাম। বললাম আমি চাই আমার নাতিকে ওঁর ওখানে পাঠাতে।

বসুন্ধরা খুশি।

এইটা খুব ভালো ভেবেছিস। ওঁর কাছে থাকলে আমরা সকলে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবো।

কিন্তু সেটা তো হবার নয় মা। ওখানে অন্যান্য স্কুল আছে হোস্টেলও আছে। কিন্তু মিশনের কোন স্কুল তো নেই। সেখানে তো মিশনের কন্ট্রোল নেই।

স্বর্ণ’র গলায় স্পষ্ট হতাশা।

তাহলে কী হবে?

যে স্বর্ণ একসময় কত ডাকাবুকো ছিল সে এখন নিজের ছেলেমেয়ে নাতি-নাতনির ব্যাপারে বড় ভীতু হয়ে গিয়েছে। আগের মতো চটপট সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ভয় পায়। বসুন্ধরা স্বর্ণকে নিশ্চিন্ত করেন। বিনয় বলে—

জানো স্বর্ণ আমার দাদামশাই মানে ফরিদপুর কোটালিপাড়া হাইস্কুলের হেডমাস্টার মশাই ঈশ্বর মুকুন্দ সেনগুপ্ত বলতেন, দাদুভাই বিপদে পড়লে কখনো ভয় পাবে না। সবসময় মনে রাখবে যিনি বিপদ ঘটান-বিপদ থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই দেখান। তাই তিনি বিপদতারণ। তিনি তোমার পরীক্ষা নেন আর একটা নতুন রাস্তা খুলে দেন। বাচ্চা মহারাজ বললেন— তাঁর এক ঘনিষ্ঠ গুরুভাই, বয়সে অনেকটাই কম। দেওঘরের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ-এর প্রেসিডেন্ট মহারাজ। ভীষণ ভালো স্কুল। ক্লাস ইলেভেন পর্যন্ত। লাগোয়া বড় হোস্টেল। ১৯২২ সাল থেকে স্কুল চলছে। ৬৪ সালে সিবিএসসি আফিলিয়েশন পেয়েছে। ঈশ্বরের নিশ্চয়ই এটা ইচ্ছে। মোটরে কলকাতা থেকে বর্ধমান দুর্গাপুর হয়ে ধানবাদ ধরলে সাড়ে আট ঘণ্টা চিত্তরঞ্জন হয়ে আট ঘণ্টার রাস্তা। ছ’-সাত ঘণ্টায় ট্রেন যাচ্ছে। মিশনের আওতার মধ্যে থাকবে। কলকাতার থেকে পলিটিক্যালি অনেক সেফ। তারক যাবে ভর্তি করাতে। বুড়ি প্রথমটা না গেলে ছেলেটা ভয় পাবে। আর তারক বলল সঙ্গে আর একজন মহিলা না থাকলে বুড়ি একটু অসুবিধের মধ্যে থাকবে। তাই সেজবৌমাকে পাঠাব ভাবছি।

বসুন্ধরা সায় দেন।

বেশ ভেবেছো। কিন্তু একা তারকের ঘাড়ে বুড়ি সেজনাতবৌ বাবু।
আরও পড়ুন:

নাট্যকার গিরিশচন্দ্রের সন্ধানে, পর্ব-৩৫: গিরিশচন্দ্রের জীবন আধ্যাত্মিকতায় পূর্ণ, আমরা তাঁকে মুমূর্ষুর সেবা করতেও দেখেছি

এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-১৭: গরমে পান্তা ভাত কি সত্যিই শরীর ঠান্ডা করে?

উৎসবের উষ্ণতায় শারুল-শিমুল

নানা, বলিনি বুঝি? মেজখোকা সেজ খোকাকেও আর একটা গাড়ি দিয়ে পাঠাচ্ছি। আসলে বম্বে মেলটেল-এ তো এখন আর এত জনের টিকিট পাবেনা। আজ রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ হাওড়া থেকে আর একটা ট্রেন ছিল। কিন্তু সেটা মোকামাঘাট প্যাসেঞ্জার। টিকিট পেলেও যেতে খুব কষ্ট তারপর ঢিকঢিক করে কখন গিয়ে পৌঁছবে। তার চেয়ে নিজেদের গাড়ি নিয়ে স্বর্ণ তুমি যাও মেজখোকা বুড়ি আর সেজো বউমাকে গিয়ে তৈরি হতে বল।

বসুন্ধরা ভাবছিল এই যে পরিবারের সকলে মিলেমিশে বিপদের মোকাবিলা করার পরম্পরা সেটা কতদিন বজায় থাকবে। শুধু ছেলেকে নিয়ে এতগুলো বছর পার করে স্বর্ণ’র কাছে বসুন্ধরা একটা পরিবার চেয়েছিল। স্বর্ণ তাঁকে সেই স্বজন-সুখ দিয়েছে। কিন্তু সময় বয়ে যাচ্ছে। দিন বদলে যাচ্ছে। তারপরে স্বর্ণ রয়েছে স্বর্ণ’র পরে সেজ নাতবৌ সুরঙ্গমার ওপর ভরসা করা যায়। জগদীশ্বর তাকে সকলকে নিয়ে চলবার আশ্চর্য্য ক্ষমতা দিয়েছেন। না হলে বড় নাতবৌ আরতি বা মেজজন ছন্দা দু’ জনেই খুব ভালো। ন’বৌ সুজাতা তাদের ধারায় পড়ে না।

স্বর্ণ চলে যাবার পর বসুন্ধরা বলে উঠলো।

স্বর্ণ দুশ্চিন্তা করে তাই বলিনি ওরা কি আজ রাতেই রওনা দেবে?

না মা, বসুন্ধরা ভিলা থেকে রাতেই রওনা দেবে। কিন্তু গ্রে স্ট্রিটে গিয়ে রাতটা থাকবে তারক ব্যবস্থা করবে ওখান থেকে কালকে ভোরবেলা বের হবে।

বসুন্ধরা এই বিনয়কান্তিকে চেনে। বিপদের সময় সে সাংঘাতিক সতর্ক। বিশেষ কারণেই সে সকলকে বসুন্ধরা ভিলা থেকে রাতেই বেরিয়ে পড়তে বলছে। বিনু চায়না রাতে গ্রে স্ট্রিট্রে থাকার ব্যাপারটা খুব একটা জানাজানি হোক।—চলবে

দেওঘর। ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

ছবি সৌজন্য: সত্রাগ্নি
 

বসুন্ধরা এবং… ২য় খণ্ড/পর্ব-১৬

“উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেনকে দেখা যেত না। তাই তাঁদের প্রেম দেখতে হাজারে হাজারে উৎসাহী তাঁদের জুটির এক-একটি ছবি দেখতে চার-পাঁচ-ছয়বার এসে হলে ভিড় করতেন। তাঁরা মলে বা হলে গিয়ে ছবির কথা প্রচার করতেন না। আজ দুনিয়াটা বদলে গিয়েছে।”

* বসুন্ধরা এবং… দ্বিতীয় খণ্ড (Basundhara Ebong-Novel Part-2) : জিৎ সত্রাগ্নি (Jeet Satragni) বাংলা শিল্প-সংস্কৃতি জগতে এক পরিচিত নাম। দূরদর্শন সংবাদপাঠক, ভাষ্যকার, কাহিনিকার, টেলিভিশন ধারাবাহিক, টেলিছবি ও ফিচার ফিল্মের চিত্রনাট্যকার, নাট্যকার। উপন্যাস লেখার আগে জিৎ রেডিয়ো নাটক এবং মঞ্চনাটক লিখেছেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘জিৎ সত্রাগ্নি’র নাট্য সংকলন’, উপন্যাস ‘পূর্বা আসছে’ ও ‘বসুন্ধরা এবং…(১ম খণ্ড)’।
 

গল্প ও উপন্যাস পাঠানোর নিয়ম

‘সময় আপডেটস’-এর এই বিভাগে যাঁরা গল্প ও উপন্যাস পাঠাতে চান তাঁরা ছোটদের ও বড়দের আলাদা আলাদা গল্প পাঠাতে পারেন৷ বুঝতে সুবিধার জন্য ইমেলের ‘সাবজেক্ট’-এ বিভাগের উল্লেখ করবেন৷ ছোটদের গল্পের জন্য ১০০০ শব্দ ও বড়দের গল্পের জন্য ১০০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে পাঠাতে হবে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর দিতে ভুলবেন না৷ গল্প বা উপন্যাস নির্বাচিত হলে যোগাযোগ করা হবে৷ ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com


Skip to content