মা-বাবা কর্মরত হবার কারণে সারা দিন তাঁদের সঙ্গে বিশেষ দেখা হয় না অনেক বাচ্চারই। স্কুল থেকে ফেরার পর অনেকটা সময় বাড়িতে একাই থাকতে হয় তাদেরকে। মা-বাবার সঙ্গে যে তাদের সম্পর্ক খুব একটা খারাপ, তা নয়। বন্ধুদের অনেক কথা গল্পের ছলে মায়ের সঙ্গে তারা শেয়ার করলেও নিজের মনের কথা বলতে ভয় পায় তারা।
মনোবিদদের একাংশ বলছেন, ব্যতিক্রম থাকলেও একটা বয়সের পর মা-বাবাদের দরকার সন্তানের বন্ধু হয়ে ওঠা। কিন্তু অল্প বয়সে এই সব বাচ্ছারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধির দোরগোড়ায় থাকা ছেলেমেয়েদের মনে পড়াশোনা, ব্যক্তিগত জীবন, মতামত, সিদ্ধান্তহীনতা— সব কিছু নিয়েই তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। অথচ কারও সঙ্গে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে অনেকেই। সেই সঙ্গে তাদের মনের মধ্যে ভয়ও কাজ করে।
এক্ষেত্রে বন্ধুরা অনেক সময়েই পাশে এসে দাঁড়ায়। তবে সন্তানের মনের অন্ধকার কাটাতে সাহায্য করতে পারেন একমাত্র তাদের অভিভাবকেরাই। কিন্তু তার জন্য কী কী করতে হবে জানেন?
ওদের বেশি আগলে রাখবেন না
● সন্তান ছোট ভেবে তাকে সব ক্ষেত্রে পরিচালনা করতে যাবেন না। তা হলে সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এই অভ্যাসের ফলে সন্তান স্বাধীন ভাবে নিজস্ব মতামত গড়ে তুলতে পারবে না।
সঙ্গেশে থাকুন
● যে কোনও পরিস্থিতিতে সন্তানের পাশে থাকুন। সে যেন আপনার কাছে থেকে নিরাপদ বোধ করে, সেই আশ্বাস দেওয়ার দায়িত্ব আপনারই। বিশ্বাস করে সন্তান যেন সব কথা অকপটে সভিকার করতে পারে, সেই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে আপনাকেই।
নিজের মতো সময় কাটাতে দিন
● ছুটির দিন বাড়ি থাকলেই সন্তানকে নিজের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখবেন না। তাকে নিজের মতো থাকতে দিন। আপনার পরামর্শ সন্তানের এগিয়ে চলার পথকে মসৃণ করুক।
ওদের পছন্দকে গুরুত্ব দিন
● সন্তানকে ভালো-মন্দ বিচার করতে শেখান। কিন্তু নিজের পছন্দ-অপছন্দ জোর করে ওদের উপর চাপিয়ে দেবেন না। এই অভ্যাস থেকেও সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকদের দূরত্ব তৈরি হতে পারে।
সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান
● সারা দিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও বাড়ি ফিরে কিছুটা সময় সন্তানকে দিন। তাদের কিছু কিছু কথা কম গুরুত্বপূর্ণ বা অপ্রাসঙ্গিক মনে হলেও গুরুত্ব দিয়ে টা শুনুন। সারা দিন স্কুল বা খেলার মাঠে কী হল না হল, তা জানতে চান। সন্তানকে পড়াশোনায় সাহায্য করুন। এই সময়টুকু আপনি পুরোটাই সন্তানকে দিন।