রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি প্রতীকী

সুখী দম্পতিই সাধারণত সুস্থ এবং সুসন্তান দিতে পারে। সুখী দম্পতি বলতে আমরা কিন্তু শুধু মানসিক সুখের কথাই বলতে চাই না। স্বামী-স্ত্রী দুজনই শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ এবং তাঁদের মানসিক নৈকট্য বজায় থাকলেই তাদেরকে আমরা সুখী দম্পতি হিসাবে বিবেচনা করি। এর সঙ্গে সঙ্গে পারিবারিক এবং সামাজিক অনুকূল পরিবেশ থাকাটাও নব দম্পতির সুসন্তান লাভের পক্ষে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

আমাদের সমাজে প্রাগবিবাহের শর্ত হিসাবে ছেলে এবং মেয়ের বয়সকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। সুসন্তান লাভের জন্য ছেলে-মেয়ে দুজনকেই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। কারণ, অপরিণত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দম্পতি কখনওই সুস্থ ও সবল সন্তান দিতে পারেন না। প্রাপ্তবয়স্ক বলতে আইনগতভাবে ছেলেদের বয়স ২১ এবং মেয়েদের বয়স ১৮ হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বয়স কুড়ির উপর হলেই তারা নিজেদের ভালো-মন্দ এবং বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে শুধু সন্তান নেওয়াই নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই মেয়েদের যে কথাটি শুনতে হয় সেটি হচ্ছে— সন্তান নেবে কবে? নব দম্পতির কাছে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমার মতে, পরিণত বয়সের আগে বিয়ে হলে সন্তান নেওয়ার জন্য বয়স পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা সন্তান নেওয়ার জন্য প্রাথমিক শর্ত হওয়া উচিত। সেটা দুই, তিন, চার বা এমনকি পাঁচ বছরও হতে পারে। তার সঙ্গে অন্যান্য যে সমস্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করা উচিত—
 

সন্তান নেওয়ার সঠিক সময়

সন্তান নেওয়ার আগে প্রত্যেক নারীর শারীরিক ও মানসিক পূর্ণ বিকাশ প্রয়োজন। অল্প বয়সে সন্তান নিতে গিয়ে অনেক মেয়েকেই অকালে প্রাণ হারাতে হয়। দম্পতির মা বা বাবা বা দাদু-দিদিমা নবজাতকের মুখ দেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন, এই অজুহাতে একটা অপ্রাপ্তবয়স্কা মেয়েকে সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা — এই ঘটনা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।

বিয়ের মাধ্যমে নারীর সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতে প্রবেশ। নতুন এই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য একটু সময় দরকার। সুতরাং বিয়ের পরই সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তটা না নিয়ে নতুন পরিবেশকে সামাল দিয়ে পরে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তটা যুক্তিসঙ্গত। আবার অনেক দম্পতি শুধু দাম্পত্য জীবন গুছিয়ে নেওয়া ছাড়াও নিজেদের পড়াশুনা, কেরিয়ার উৎকর্ষের কথাও ভাবেন। সেটাও কিন্তু বিবেচ্য হওয়া উচিত। তবে দম্পতিরা নিজেদের কেরিয়ার ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাচ্চা নিতে বেশি দেরি করলে অনেক সময় সেটাই পরবর্তীকালে বাচ্চা না হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নব দম্পতি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হন তবে বিয়ের দু-তিন বছরের মধ্যে সন্তান নেওয়া সবথেকে উপযোগী সময়। প্রথম সন্তান নিতে বেশি দেরি করলে পরবর্তীকালে অনেক সমস্যা হতে পারে। প্রথম সন্তান স্ত্রীর বয়স ২০ বছর হওয়ার পরেই এবং অবশ্যই ২৫ বছর বয়সের আগে নেওয়া উচিত। কোনও দম্পতি দ্বিতীয় সন্তান নিতে চাইলে প্রথম সন্তানের ৩-৪ বছর পরে এবং অবশ্যই স্ত্রীর বয়স ৩০ বছর হওয়ার আগেই নেওয়া উচিত।

সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী দুজনের বয়সই বিবেচনা করা উচিত। প্রথম সন্তান ধারণের সময় স্ত্রীর বয়স যেমন ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে এবং স্বামীর বয়স ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তেমনি দ্বিতীয় সন্তান নিতে চাইলে স্ত্রীর যেমন ৩০ বছরের নীচে হওয়া উচিত, স্বামীর বয়স ৩৫ বছরের এর মধ্যে হলে ভালো। মেয়েদের বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গেলে সন্তান ধারণের ক্ষমতা ৫০ শতাংশ কমে যায়। আবার মেয়েদের বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাওয়ার পরে সন্তান নিলে সন্তান জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাতে পারে। শুধু তাই নয়, মায়ের জীবন সংশয়েও হতে পারে নানা কারণে।

আরও পড়ুন:

ছোটদের যত্নে: বাচ্চা খেতেই চায় না? কী করে খিদে বাড়াবেন? কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন? জানুন শিশু বিশেষজ্ঞের মতামত

ত্বকের পরিচর্যায়: উৎসবের মরসুমে চাই ত্বকের বিশেষ যত্ন? কী কী মেনে চলবেন? রইল ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

আপনি কি চল্লিশোর্ধ্ব নারী? ঘাড় ও গলায় কালো দাগের সমস্যায় অস্বস্তি? রইল সমাধান

সপ্তাহান্তে শরীরচর্চা? ভাবছেন এতে আদৌ লাভ হবে কি না?

 

শাস্ত্রীয় মতে কোনদিন সহবাস (গর্ভধারণ) করলে সুসন্তান লাভ সম্ভব

মাসিক (ঋতু) হওয়ার প্রথম চার দিন, ১১তম এবং ১৩তম দিন সহবাস করা উচিত নয়।

এই ৬ দিন বাদ দিয়ে বাকি ১০ দিনের মধ্যে যেকোনও দিন গর্ভধারণ করা কাম্য।

এই দশ দিনের মধ্যে যত বেশি দিন পরে গর্ভধারণ করবেন, সন্তান তত বেশি সুস্থ ও বলবান হবে। দশম দিন সব থেকে বেশি কার্যকর।

অবশ্য এই দশ দিনের মধ্যে অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, অষ্টমী ও সংক্রান্তি— এই দিনগুলিতে সহবাস না করাই ভালো। এই দিনগুলিতে স্বামী ও স্ত্রীর শুক্র ও শনি দশা থাকে।

রাত্রির প্রথম প্রহরে গর্ভধারণ করলে সেই সন্তান রুগ্ন ও স্বল্পায়ু হয়।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রহর সহবাসের জন্য খুব একটা ভালো সময় নয়।

রাত্রির চতুর্থ প্রহরে সহবাস করলে সন্তান দীর্ঘায়ু ও নীরোগ হয়।

সোম, বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাতে গর্ভধারণ হলে সেই সন্তান ভালো হয়।

মঙ্গলবার রাতে সহবাস করতে নেই।

সকাল সন্ধ্যা ও দ্বিপ্রহরে সহবাস হানীকর।

 

আরও জানলে ভালো

পায়খানা, প্রস্রাব পাওয়া বা ক্ষুদার্থ বা তৃষ্ণার্ত অবস্থায় সহবাস করা উচিত নয়।

গর্ভবতী মা রাগ হিংসা মিথ্যা কথা বলা প্রভৃতি অন্যায় আচরণ করলে গর্ভস্থ সন্তান সেইসব খারাপ দোষ নিয়ে জন্মাবে।

রজস্বলা অবস্থায় সহবাস করলে গর্ভের সন্তান এলে সেই সন্তান স্বল্পায়ু ও অসুস্থ হয়।

গর্ভাবস্থায় দিবানিদ্রা, উপবাস, সহবাস, রাত্রি জাগরণ পরিত্যাগ করা উচিত।

শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ থাকবে, মনে কোনও খারাপ চিন্তা থাকবে না এবং স্বামী স্ত্রী উভয়ই একটা সুসন্তান কামনা করে সহবাস করলে অবশ্যই সুস্থ ও সবল সন্তান লাভ হবে।

সন্তান যখন গর্ভে আসবে ধর্ম চিন্তা, সৎ চিন্তা, করলে সন্তান ধার্মিক হবে ও সুখী হবে।

গর্ভের চতুর্থ মাসে গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ প্রতঙ্গ ও চৈতন্যের বিকাশ হয়। এই সময় মা যে ধরনের আচরণ করবে সন্তান সেই সব গুণ নিয়ে জন্মাবে।

যোগাযোগ: ৯৮৩০২৯৪৯৩২


Skip to content