ছবি প্রতীকী।
করোনার পরে নতুন আতঙ্কের নাম অ্যাডিনোভাইরাস। এই চলতি মরসুমে রাজ্যে রবিবার পর্যন্ত জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে ১১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শহর থেকে জেলা সর্বত্র ছড়িয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস। প্রায় কোনও হাসপাতালেরই শিশুরোগ বিভাগের সাধারণ শয্যা থেকে পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু) ফাঁকা নেই। পরিস্থিতি এমন যে, খালি নেই ভেন্টিলেটরও।
বি সি রায় শিশু হাসপাতালে রবিবার মৃত্যু হয়েছে ভাঙড়ের ছ’মাসের মেহদি হাসানের। ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল। শিশুটিকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মৃত্যুর কারণ হিসেবে মেহদির ডেথ সার্টিফিকেটে ‘সিভিয়ার নিউমোনিয়া এবং ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ফেলিয়োর’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেহদি অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ভয় ধরাচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস, ছড়িয়ে পড়ছে নিরবে, কী ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে শিশুকে যত্নে রাখবেন?
দেদার খানাপিনা হয়ে গিয়েছে? বদহজম এড়াতে সঙ্গে রাখুন এই বিশেষ পানীয়
জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলায় যত সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়েছে, বেশির ভাগেরই বয়স দু’বছরের মধ্যে। সবাই শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ (রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। চলতি মরসুমে এখনও পর্যন্ত কলকাতা মেডিক্যালে তিন জন শিশু, ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথে তিন জন শিশু এবং বি সি রায় শিশু হাসপাতালে পাঁচ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে, সামনে পরীক্ষা? চূড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য রইল ১০টি জরুরি পরামর্শ
ছোটদের যত্নে: হঠাৎই জ্বর, মুখে-হাতে ঘা হচ্ছে শিশুদের! কষ্টকর হলেও ভয়ের কিছু নেই, জেনে নিন কোন রোগের উপসর্গ এগুলি
চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতরও জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুর অবস্থার দিকে নজর রাখতে নির্দেশিকা জারি করেছে। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে সব মেডিক্যাল কলেজ, জেলাস্তরের হাসপাতালকে প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে পরের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত বিস্তারিত রিপোর্ট স্বাস্থ্যকর্তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং ইমেলে পাঠাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫২: বইয়ের সব কপি কবির নির্দেশে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল
মহাভারতের আখ্যানমালা, পর্ব-৫৫: বালক অষ্টাবক্রের বুদ্ধিবলে পিতা কহোড় পেলেন নবজীবন
চিকিৎসকদের কথায়, এখন মহামারির আকার নিয়েছে অ্যাডিনোভাইরাস। দু’বছরের কম বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে ভয়ের পরিমাণ বেশি। যাদের বয়স এক বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে আরও সাবধান হতে হবে। পাশাপাশি, বড়দের মধ্যে জ্বর-সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, চোখ লাল এর মতো উপসর্গ দেখা দিলে ছোটদের থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ, বড়দের থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়ায়। অ্যাডিনোভাইরাস শিশুদের ফুসফুস ও শ্বাসনালিতে ভীষণ ক্ষতি করছে। দিন দু’য়েকের মধ্যেই সাধারণ সর্দি-কাশি শ্বাসকষ্টে বদলে যাচ্ছে।