বইমেলায় 'গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি'।
‘সময় আপডেটস’-এ রোববারের আকর্ষণ পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি’ । এবারের বইমেলারও অন্যতম আকর্ষণ এই ‘গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি’ বইটি। আগ্ৰহের সঙ্গে অনেকেই কিনছেন।
‘সময় আপডেটস’-এর সূচনালগ্ন থেকে প্রকাশিত হচ্ছে জনপ্রিয় এই ধারাবাহিক রচনাটি। ইদানীংকালে জনপ্রিয়তা বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে। এই লেখাটি যে অনেকেই আগ্রহের সঙ্গে পড়ছেন, তা পাঠক-সংখ্যার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোনও আকাদেমিক আলোচনা নয়, গভীর-গূঢ় তত্ত্বকথা নয়, কঠিন কথাও কত সহজে লেখা যায়, এই ধারাবাহিক রচনাটিতে পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেটাই প্রমাণ করেছেন।
‘সময় আপডেটস’-এর সূচনালগ্ন থেকে প্রকাশিত হচ্ছে জনপ্রিয় এই ধারাবাহিক রচনাটি। ইদানীংকালে জনপ্রিয়তা বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে। এই লেখাটি যে অনেকেই আগ্রহের সঙ্গে পড়ছেন, তা পাঠক-সংখ্যার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোনও আকাদেমিক আলোচনা নয়, গভীর-গূঢ় তত্ত্বকথা নয়, কঠিন কথাও কত সহজে লেখা যায়, এই ধারাবাহিক রচনাটিতে পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সেটাই প্রমাণ করেছেন।
শুধু রবীন্দ্রনাথ নন, এ লেখায় আড়ালে থাকা ঠাকুরবাড়ির নানা ব্যক্তিত্ব, অনেক অনেক ঘটনা ক্রমান্বয়ে উঠে এসেছে। অনালোকিত-অনালোচিত ঠাকুরবাড়ির নানা ব্যক্তির উপর আলো পড়েছে। আলোকিত হয়েছেন তাঁরা। কত ঘটনা, ঠাকুরবাড়ি জুড়ে ঘটনার ঘনঘটা। এ বইতে আনন্দমুখর ঘটনার কথা যেমন আছে, তেমনই আছে বিষাদমলিন বেদনাময় ঘটনার কথাও।
পড়তে পড়তে অচেনা-অজানা ঠাকুরবাড়ি আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভাবাও বোধহয় শক্ত, গুজব ছড়িয়েছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ খুন হয়েছেন, সাহেব মারতে ঠাকুরবাড়িতে বোমা তৈরি হত, মাতালের গানে মাতিয়ে দিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথকে দারোয়ান ভেবে রাতের অন্ধকারে দৌড়ে চোর পালিয়েছিল! এমন অনেক ঘটনা, ঘটনার মালা, সে সব মুগ্ধ হয়ে পড়তে হয়। পড়তে পড়তে মুগ্ধতা ও গভীর বিস্ময়বোধ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
পড়তে পড়তে অচেনা-অজানা ঠাকুরবাড়ি আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভাবাও বোধহয় শক্ত, গুজব ছড়িয়েছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ খুন হয়েছেন, সাহেব মারতে ঠাকুরবাড়িতে বোমা তৈরি হত, মাতালের গানে মাতিয়ে দিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথকে দারোয়ান ভেবে রাতের অন্ধকারে দৌড়ে চোর পালিয়েছিল! এমন অনেক ঘটনা, ঘটনার মালা, সে সব মুগ্ধ হয়ে পড়তে হয়। পড়তে পড়তে মুগ্ধতা ও গভীর বিস্ময়বোধ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
'গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি' সুব্রত মাজীর প্রচ্ছদে শোভিত।
কবি তখন চানঘরে, কবির মনে গান জেগেছিল, চানঘর থেকেই ডাক দিয়েছিলেন দিনেন্দ্রনাথকে। দিনেন্দ্রনাথ সে সুর টুকে নিয়েছিলেন। কবির চারপাশেই ছিল এমন সব ভালোবাসার মানুষজন। ভালোবাসার উষ্ণতায় ভরপুর ঘটনাবলির পাশাপাশি বেদনামলিন দুঃখময় ঘটনার কথাও এ বইতে কম নেই। মুখাগ্নি করার সুযোগ পাননি কবিপুত্র। এর থেকে বড়ো ট্রাজেডি আর কী হতে পারে!
আরও পড়ুন:
গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি, পর্ব-৫০: লুকোনো বই পড়ার জন্য রবীন্দ্রনাথ বাক্সের চাবি চুরি করেছিলেন
চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-৫: জনজাতি ও জনসত্ত্বা
বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৪১: মৎস্যজীবীদের মীন সংগ্রহে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিলে প্রচুর অপচয় কমবে, রক্ষা পাবে মাছের জীব বৈচিত্র্যও
কত না কৌতূহল জাগানিয়া সব ঘটনা। ‘ঠাকুরবাড়ির বাঙালিয়ানা’ বা ‘রান্নাঘরের ঠাকুরবাড়ি’— এমনতরো বিচিত্র প্রসঙ্গ নিয়েও লেখা রয়েছে, যা পড়তে পড়তে আমাদের অভিভূত হতেই হয়। কাদম্বরী দেবী কবি বিহারীলালকে ‘সাধের আসন’ বুনে দিয়েছিলেন, সুরেন্দ্রনাথ ও সংজ্ঞাদেবীর দারুণ ছিল দাম্পত্যজীবন। সেসব বিবরণ আমাদের কৌতূহলী করে তোলে। অবনীন্দ্রনাথের ‘পুরাতন ভৃত্য’ রাধুর মজা-ভরপুর আখ্যান, প্রতিমা দেবীর কথা বা কবিপুত্র শমীর কথা জানতে কার না ইচ্ছে হয়! কবি অনুরাগিনী হেমন্তবালা কবির পরা জোব্বাটি চেয়েছিলেন কেন, তা জানতে কার না কৌতূহল জাগ্ৰত হয়!
'গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি' বইটির ভূমিকার অংশবিশেষ।
পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে প্রবেশ করে বহু না জানা, অল্প-জানা তথ্য উদ্ধার করেছেন। গল্পচ্ছলে সেসব ‘সময় আপডেটস’-এ লিখেছেন। ঠাকুরবাড়ি নিয়ে মনগড়া মিথ্যে গল্পের শেষ নেই। পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য ব্যতিক্রমী, বিভিন্ন বইপত্র ও স্মৃতিকথা থেকে যাবতীয় তথ্য যে সংগ্রহ করেছেন, তা অকপটে তিনি ভূমিকায় জানিয়েছেন। ভুমিকা-অংশে ‘সময় আপডেটস’-এর উদ্দেশে সুগভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ‘চল্লিশটি লেখা নিয়ে এ বই প্রকাশিত হল। আরও লিখতে পারলে, আরও একটি বইয়ের উপাদান সঞ্চিত হলে না হয় প্রকাশিত হবে ‘গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি’র দ্বিতীয় খণ্ড।’
আরও পড়ুন:
স্বাদে-আহ্লাদে: শীতে পছন্দের তালিকায় রয়েছে লাড্ডু? মিষ্টিমুখ হয়ে যাক গাজরের লাড্ডু দিয়েই
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-২২: স্বপ্নের সারথি পাঠিয়েছেন ‘বকুল’ ফুল
এগুলো কিন্তু ঠিক নয়, পর্ব-৫: সত্যিই কি মায়ের দয়ায় পক্স হয়?
‘গল্পকথায় ঠাকুরবাড়ি’ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট প্রকাশন-সংস্থা ‘দীপ প্রকাশন’-এর পক্ষে দীপ্তাংশু মণ্ডল। বইটির মূল্য আড়াইশো টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন সুব্রত মাজী। কলকাতা বইমেলায় হই হই করে বইটি বিক্রি হচ্ছে দীপ প্রকাশনের ৪৬৮ নং স্টলে। স্টলে ঢুকলেই নজরে পড়বে, অনেকেই বইটি নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন, দেখছেন, কিনছেন। ‘সময় আপডেটস’ পরিবার স্বভাবতই আনন্দিত। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ধারাবাহিক রচনাটি বই হয়ে বেরিয়েছে, বইমেলায় বইপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, এই সংবাদ আমাদের আপ্লুত করেছে।
* বইয়ের দেশে (Book Review): লেখিকা সঞ্চিতা কুণ্ডু (Sanchita Kundu) সংস্কৃতের অধ্যাপিকা, হুগলি মহসিন কলেজ।