সোমবার ২৫ নভেম্বর, ২০২৪


যে কোনও পরীক্ষার আগেই চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু মনে রাখবে, তোমরা প্রত্যেকেই সসম্মানে নিজের বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছ। ফলে ফাইনালের জন্য নতুন করে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। তাই আত্মবিশ্বাস না হারিয়ে এতদিন যা পড়াশোনা করেছ, তার ভিত্তিতেই ভালো করে পরীক্ষা দাও।

ভূগোলের সিলেবাস

প্রথমেই তোমাদের এবছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সিলেবাস ও অধ্যায় ভিত্তিক নম্বর বিভাজন একবার স্মরণ করিয়ে দিই—

হাইব্রিড পদ্ধতিতে পরীক্ষা

উচ্চ মাধ্যমিকে ‘হাইব্রিড’ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়। অর্থাৎ ‘পার্ট-এ’ (Part-A) লিখতে হয় আলাদা উত্তরপত্রে। যেখানে থাকে বড় প্রশ্নের উত্তর। অন্যদিকে ‘পার্ট-বি’ (Part B) লিখতে হয় বুকলেটে, যেখানে MCQ ও SAQ থাকে।

সাজাব যতনে

ভূগোল পরীক্ষার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে—

উত্তরপত্রে কোনও চিহ্ন আঁকা উচিত নয়, যাতে তোমার উত্তরপত্রটি আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়।

উত্তরগুলো সংক্ষিপ্ত ও যথাযথভাবে লিখতে হবে।

হাতের লেখা যথাসম্ভব পরিষ্কার করার চেষ্টা করবে।

উত্তর নিজের ভাষায় লেখা উচিত।

প্রশ্নের দাগ নম্বর লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

প্রতিটি প্রশ্নের মধ্যে পার্ট প্রশ্ন থাকে। তাই সেগুলোর উত্তর পরপর লেখার চেষ্টা করবে।

সব প্রশ্নের উত্তর যাতে সমমানের হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে।

সাধারণভাবে উত্তরের মূল হেডিংটি উত্তরপত্রের মাঝামাঝি অংশে (Center Aligned) এবং সাব-হেডিংগুলি লেখার বাঁদিকে (Left Aligned) করার চেষ্টা করবে।

উত্তর লেখার সময় যথাযথ ও প্রাসঙ্গিক উদাহরণ ও ছবি দেবে।

ছবি আঁকার সময় মনে রেখো

ছবিগুলিকে প্রাসঙ্গিক পয়েন্টের পাশে আঁকো এবং সেদিকে বক্স করে দাও।

ছবিকে দ্বিমাত্রিকভাবে (Two dimensional) আঁকার চেষ্টা করো।

ছবি যেন দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

প্রতিটা ছবির ক্যাপশন, হেডলাইন এবং সাব-হেডলাইন নির্দিষ্ট স্থানে ঠিক করে লিখবে।

ছবি আঁকার ক্ষেত্রে তোমরা সাধারণ পেন্সিল বা রং পেন্সিল ব্যবহার করতে পারো। তবে মনে রাখতে হবে ছবিটা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়।

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

MCQ এবং SAQ-এর জন্য তোমরা এখন যতটা সম্ভব অনুশীলন করে যাও। আর বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে তোমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ হয়ে গেলেও, একেবারে শেষ মুহূর্তে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক ভূগোল থেকে এই প্রশ্নগুলো খুব ভালো করে আবার একবার দেখে নাও—

প্রাকৃতিক ভূগোল

আরোহণ ও অবরোহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো। (৩)

কার্স্ট অঞ্চলে সৃষ্ট সিঙ্কহোল, পোলজি এবং ড্রিপস্টোন কীরূপে গঠিত হয় তা চিত্রসহ লেখো। (৫)

ভাদোস স্তর কাকে বলে। (২)

শিলার সচ্ছিদ্রতা ও প্রবেশ্যতার পার্থক্য লেখো। (৩)

ভৌম জলের উৎস ও নিয়ন্ত্রকগুলি লেখো। (৫)

অ্যাকুইফার কাকে বলে। (২)

পাম্পের সাহায্য ছাড়াই আর্টেজিয় কূপ থেকে জল উঠে আসে কেন? (৫)

মাটি সৃষ্টিতে জলবায়ু ও আদি শিলার ভূমিকা লেখো। (৫)

এলুভিয়েশন ও ইলুভিয়েশন-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো। (৩)

পেডোক্যাল ও পেডালফার মাটির পার্থক্য লেখো। (৩)

পরিণত ও অপরিণত মাটির পার্থক্য লেখো। (২)

বায়ুপ্রবাহের ত্রিকোষীয় মডেলটি বর্ণনা করো। (৪)

নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাত-এর উৎপত্তি ও জীবনচক্র লেখ। (৪)

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ও নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের পার্থক্য লেখো। (৪)

ওজন স্তরের গুরুত্ব লেখো। (৫)

ভারতের জলবায়ুতে জেট স্ট্রিম-এর প্রভাব লেখো। (৩)

ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় কেন? (২)

বিভিন্ন প্রকার গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিচয় দাও। (৪)

জাঙ্গল উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য লেখো। (২)

জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব লেখো। (৩)

জীববৈচিত্র্য বিনাশের কারণ লেখো। (৩)

ইন-সিটু এবং এক্স-সিটু সংরক্ষণ-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো। (২)

অর্থনৈতিক ভূগোল

শুষ্ক কৃষি ও আর্দ্র কৃষির পার্থক্য লেখো। (৩)

ব্যাপক কৃষি প্রধানত রপ্তানি ভিত্তিক হয় কেন? (২)

শস্যাবর্তন-এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লেখো। (২)

শস্যসমন্বয় কাকে বলে? (২)

ভারতীয় কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের দুটি সুফল ও দুটি কুফল লেখো। (৪)

নীল বিপ্লবের গুরুত্ব লেখো। (২)

আধুনিক কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের দুটি সুফল ও দুটি কুফল লেখো। (৪)

ভারতের ডাল চাষের সমস্যাগুলি কী কী? (২)

ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ফল উৎপাদনে বিখ্যাত কেন? (২)

পশ্চিম ভারতে পেট্রোরসায়ন শিল্পের উন্নতির কারণ লেখো। (৫)

কানাডায় কাগজ শিল্পের উন্নতির কারণ লেখো। (৪)

ব্রাজিলে রবার শিল্পের উন্নতির কারণ লেখো। (৩)

পণ্যসূচক কাকে বলে। (২)

কাঁচামালের অভাব সত্ত্বেও জাপানে লৌহ-ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ লেখো। (৩)

‘শিকড় আলগা শিল্প’ কাকে কেন বলা হয়? (৩)

‘সূর্যোদয় শিল্প’ কাকে কেন বলা হয়? (৩)

পূর্ব ও মধ্য ভারতের লৌহ-ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ লেখো। (৫)

জনঘনত্ব ও মানুষ-জমি অনুপাত-এর পার্থক্য লেখো। (৩)

কাম্য জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য লেখো। (২)

জনসংখ্যা পিরামিড কাকে বলে? (২)

ভারতে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ লেখো। (৩)

উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের বয়স লিঙ্গ পিরামিড-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো। (৩)

জনসংখ্যা বিবর্তন মডেলের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য লেখো। (৪)

জনসংখ্যা বণ্টনে পরিব্রাজন-এর প্রভাব লেখো। (৩)

বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে ওঠার কারণ লেখো। (৩)

গোষ্ঠীবদ্ধ জনবসতি গড়ে ওঠার কারণ লেখো। (৩)

পরিশেষে বলি, যারা মূল টেক্সট খুঁটিয়ে পড়বে তাদের কোনও কারণেই খারাপ পরীক্ষা হবে না। অতএব মনে কোনও দুশ্চিন্তা আনার প্রয়োজন নেই। নিশ্চিন্ত মনে পরীক্ষা দিতে যাও। তোমাদের সাফল্য আসবেই। তোমাদের জন্য আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইল।


Skip to content