চিত্র সৌজন্যে: সত্রাগ্নি
।। শিকার ও শিকারি ।।
শিশু-কিশোর প্রাইমারি সেকশনের হায়না বা বাঘেরা যেমন অভ্যাস করতে করতে করে শিকার করা শেখে, শিবানীর মতো শিকারি মেয়েরাও ঠিক সেভাবেই ধীরে ধীরে পুরুষকে বশ করে নিজের কাজে লাগাতে শেখে। কোন অবস্থায় ঠিক কোন রং-ঢং-নখরা কাজে লাগবে এদের সেগুলো অভ্যেস করতে করতেই রপ্ত হয়ে যায়। তখন বয়সে দু’ আড়াই গুণ বড় পুরুষমানুষকেও ঘোল খাওয়াতে কোনও অসুবিধেই হয় না। যেমন এখন। বুল্টি বলার চেষ্টা করেছিল—
—তোর সঙ্গে কি আমার টাকার সম্পর্ক শিবানী?
শিবানী কপালটা একটু নিচু করে নিজের ভ্রু বরাবর তাকিয়ে বুল্টিকে যেন দগ্ধ করে।
—কে হই আমি তোমার?
—তুই আমার বোনের মতো
—বোনের মতো বুঝি?
—আচ্ছা বাবা ভাইঝিই হলি – তোর বাবা-মাকে দাদা-বৌদি ডাকি।
—ভাইঝি—হাঃহাঃহাঃ
শিবানী শব্দ করে হাসে। বুল্টি বোকার মতো তাকিয়ে থাকে বোঝে মেয়েটা ভয়ানক সেয়ানা। বুল্টির মতো আধবুড়ো বিবাহিত পারভার্টরা ভীতু তারা জানে অন্যায় করছে। বেড়ালের মাছচুরি করার মতো চুরির ছোঁকছোঁকানিটা যায়নি। আর শিবানীরা লাজলজ্জাহীন বেপরোয়া। দুটো শ্রেণিই নিকৃষ্ট গোত্রের। তবে তুলনায় শিবানীদের লোভ আকাঙ্খা উচ্চাশা খুব বেশি। তাই এরা নাগ বশকরা বেদেনীর মতো ছোবল থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সাপকে খেলাতে জানে।
বুল্টিরা ভাবে কম বয়সী শিবানীরা আসল উদ্দেশ্যটা বুঝতেই পারছে না। তাকে পপুলারিটির নেশা ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুল্টিরা ভাবতেই পারে না। মেয়েদের হাতে পায়ে গায়ের জোরের খামতির জন্যেই পুরুষদের থেকে তাদের উপলব্ধি অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন ঈশ্বর। তাই বুল্টিকে আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেয় শিবানী কিন্তু বেচাল হতে দেয় না। ছোবল দেওয়া তো দূরের কথা। বুল্টি তার রাগী বউ বা শিবানীর মা কোনওদিন জানতেও পারেনি যে, হাতের লেখা পালটে বেনামি চিঠি লিখে শিবানী নিজেই বুল্টির বউ’কে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। যাতে চুঁচুড়া থেকে বুল্টিকে ধরে শিবানী কলকাতা পৌঁছতে পারে। এরকম একটা রগরগে কেচ্ছা না হলে শুভ্রা কলকাতায় মেয়েকে নিয়ে থাকতে যেত না। না হলে মাসমাইনের ড্রাইভার রতনের বুল্টির বিরুদ্ধে বলার সাহস হয়? ওটা বানানো চিঠিতেই বলা ছিল।
দুই বাংলার উপন্যাস: বসুন্ধরা এবং, ২য় খণ্ড, পর্ব-২০: অনুষ্ঠানে শিবানী একাই গেল, বাড়িতে স্রোতের মতো টাকা ঢুকছে
ক্যাবলাদের ছোটবেলা, পর্ব-২: “যে ‘কেবল’ পালিয়ে বেড়ায়”
রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৮: বুধন উধাও
উত্তম কথাচিত্র, পর্ব-৩৭: স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা ‘সাগরিকা’
কাজ থাকে না তাই রোজ কাজের আশায় আসা ছেলেমেয়েদের ভিড়ে মিশে শিবানীও এসব শুটিং দেখত। তারপর বোম্বের নর্তকী। সে কেমন শরীরী বিভঙ্গে নাচে সেটা দেখার একটা কৌতূহলও ছিল। বম্বের নর্তকীর ছুঁড়ে দেওয়া আগুনের উত্তাপ নিতে প্রযোজক সিংহানিয়া নিজেও হাজির।
পঞ্চতন্ত্র: রাজনীতি-কূটনীতি, পর্ব-৮: জীবনে উন্নতি করতে হলে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গেই আপনাকে থাকতে হবে
পর্দার আড়ালে, পর্ব-৩৪: মানিকদা আমি ‘এজে’ আপনার থেকে বড়, কিন্তু আপনি ‘ইমেজে’ আমার থেকে অনেক বড়: জহর
হোক না তৃতীয় শ্রেণির তবু বোম্বের তো! তাই আরবসাগর পাড়ের নর্তকীকে দেখতে স্টুডিয়ো চত্বরে বেশ ভিড় হয়েছিল। ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে শিবানী দাঁড়াতে পারছিল না। সেই নৃত্য-সহকারি তাকে দেখতে পেয়ে ভিড়ের বৃত্তের ভেতরে এক জায়গায় দাঁড়াতে বললেন। শিবানী কৃতজ্ঞ।
রিহার্সাল দেওয়ার পর নাচ শুরু হল। রিহার্সাল করার পরেও একবার দু’ বার তিনবার রিটেকের পর রিটেক হচ্ছে। নর্তকী স্টেপ মেলাতে পারছে না। এরা বম্বের ছবিতে কাজ করতে অভ্যস্ত এরকম ভুল তো হবার কথা নয়। ডান্স ডিরেক্টর ছবির ডিরেক্টর প্রডিউসার সকলেই ব্যতিব্যস্ত। সমস্যাটা কী? গোড়ায় সমস্যাটা না বুঝতে পারলেও একজন ডান্সার হিসেবে শিবানী বুঝতে পারছে বম্বের নর্তকীর শরীর ঠিক নেই, তার শরীরের কোথাও একটা ব্যথায় সে কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু সে ব্যথা চেপে প্রাণপণে পারফর্ম করবার চেষ্টা করছে। কোন গতিকে খানিকটা অংশ শুটিং হল। সকলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। কিন্তু শিবানী লক্ষ্য করছে সেই নর্তকী যেন এলিয়ে পড়ছে। আবার শুটিং শুরু হল এবার নর্তকী ডান্স ডিরেক্টরকে বললেন রিহার্সাল দরকার নেই একেবারে টেক করতে। ব্যাকগ্রাউন্ডে গমগম করে গান বেজে উঠলো। এই দৃশ্যে নর্তকী টেবিলের ওপর থেকে গানের সুরে লাফ দিয়ে ফ্লোরে এসে নাচতে শুরু করবেন। নর্তকী সামান্য উঁচু টেবিল থেকে ফ্লোরে লাফালেন এবং সরাসরি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কাতরাতে লাগলেন।
স্বাভাবিকভাবে শুটিং ভেস্তে গেল ছুটোছুটি করে সেই নর্তকীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ছুটল হাসপাতালে।—চলবে
ছবি: সংগৃহীত।
বসুন্ধরা এবং… ২য় খণ্ড/পর্ব-২২
গল্প ও উপন্যাস পাঠানোর নিয়ম
‘সময় আপডেটস’-এর এই বিভাগে যাঁরা গল্প ও উপন্যাস পাঠাতে চান তাঁরা ছোটদের ও বড়দের আলাদা আলাদা গল্প পাঠাতে পারেন৷ বুঝতে সুবিধার জন্য ইমেলের ‘সাবজেক্ট’-এ বিভাগের উল্লেখ করবেন৷ ছোটদের গল্পের জন্য ১০০০ শব্দ ও বড়দের গল্পের জন্য ১০০০-১৫০০ শব্দের মধ্যে পাঠাতে হবে ইউনিকোড ফরম্যাটে। সঙ্গে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর দিতে ভুলবেন না৷ গল্প বা উপন্যাস নির্বাচিত হলে যোগাযোগ করা হবে৷ ইমেল: samayupdatesin.writeus@gmail.com