রবিবার ২৪ নভেম্বর, ২০২৪


ছবি: প্রতীকী। সংগৃহীত।

আজ শনিবারই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে। যেটি আগামী ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ৮ মে নাগাদ সেটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হাওয়ার সম্ভানা রয়েছে। শেষমেশ আগামী ৯ থেকে ১০ মে-এর মধ্য সেই গভীর নিম্নচাপ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তার পরে সেটি উপকূলবর্তী কোনও রাজ্যে আছড়ে পড়বে বলে এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে। শুক্রবার মৌসম ভবন জানিয়েছিল, দেশের চার রাজ্য— পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। হাওয়া অফিস মনে করছে, ঘূর্ণিঝড়ে এই চার রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাংলা এবং ওড়িশা। তবে ঘূর্ণিঝড় কোন দিকে আছড়ে পড়তে পারে রবিবার তার একটা আভাস পাওয়া যেতে পারে।

শনিবার বঙ্গোপসাগরের বুকে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলেও বাংলার তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। তবে শনিবার দক্ষিণবঙ্গে চার জেলা দুই বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে ঘাণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। যদিও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই।
আরও পড়ুন:

খাই খাই: স্বাদে-আহ্লাদে: আম দিয়ে তৈরি এই লোভনীয় স্বাদের আচার খেয়েছেন?

বাঙালির মৎস্যপুরাণ, পর্ব-৫৪: মাছের বাজারের দুনিয়ায় আলিপুরের ‘নেট বাজার’ তালিকায় শীর্ষে

আবহবিদদের মতে, বিশ্বের জনপ্রিয় এক কফির নামে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে। কেন কফিরে নামে ঘূর্ণিঝড়ের নাম তা নিয়ে বাঙালিদের মধ্যে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। যেমন ‘সিত্রং’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করেছিল তাইল্যান্ড। ঠিক তেমনই আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত ইয়েমেন ‘মোকা’ নামটি দিয়েছে।

‘মোকা’ শব্দের আক্ষরিক কোনও অর্থ নেই। ইয়েমেনের বন্দর শহর ‘মোখা’ (উচ্চারণ মোকা)-র নামে নামকরণ করা হয়েছে। ১৯ শতক অবধি ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর ছিল এই মোখা। এখানে বিখ্যাত কফি ‘মোকা’র চাষ হয়। আর ওই কফির নামেই হয়েছে শহরের নাম। এই মোখা বন্দর দিয়ে বহু দেশে ‘মোকা’ কফি রফতানি করে ইয়েমেন।
আরও পড়ুন:

চেনা দেশ অচেনা পথ, পর্ব-১৮: কোষার ভান্ডার ছররি থেকে কুঠাঘাট হয়ে কুরদার

রহস্য উপন্যাস: পিশাচ পাহাড়ের আতঙ্ক, পর্ব-১৩: আচমকা রাতের পার্টিতে হাজির পুলিশ

সূত্রের খবর, ঝড়ের পূর্বাভাস মতো কলকাতা পুরসভা প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। বুধবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী নবান্নে জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ছিলেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার এবং পুরসভার ডিজি (সিভিল) পি কে দুয়া।

এদিকে মোকা-র মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়ে ওড়িশা। গত মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তেমন প্রয়োজন হলে মানুষদের কী ভাবে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যাবে, সে সব নিয়ে বৈঠকে বিস্তারি আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ যেন দ্রুত শুরু করা যায়, সে সবের পরিকল্পনা তাড়াতাড়ি সারতে হবে।

ওড়িশা সরকার ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপকূলবর্তী ১৮টি জেলা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিকে প্রস্তুত থাকাতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে। মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, পুরো পরিস্থিতির উপর সর্ব ক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে। বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে বালেশ্বর, ভদ্রক, জাজপুর, কেন্দ্রপাড়া, কটক, পুরী-সহ ওড়িশার একাধিক অঞ্চলে। মৌসম ভবনও ঘূর্ণিঝড় মোকা-র মোকাবিলায় উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে দিয়েছে।

Skip to content